অরুণ কর্মকার
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত বলে ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ছোট-বড় অনেক ভূমিকম্পের সাক্ষ্য বহন করছে। দেশের অভ্যন্তরের ভূ-চ্যুতি (জিওলজিক্যাল ফল্ট) থেকে এখানে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির ইতিহাস আছে। যেমন রিখটার স্কেলে সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প শ্রীমঙ্গলে হয়েছিল। আবার ৩ থেকে সাড়ে ৫ মাত্রার অনেক ছোট ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পও এখানে হয়েছে। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে সৃষ্ট অনেক ভূমিকম্পেও বাংলাদেশ বহুবার কেঁপে উঠেছে।
ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। পৃথিবী নামের আমাদের গ্রহটি যে টেকটোনিক প্লেটগুলোর ওপর বসে আছে, সেগুলো অবিরাম সঞ্চরণশীল। এই সঞ্চরণের পথে কখনো কখনো দুটি প্লেটের মধ্যে (প্লেট বাউন্ডারিতে) টক্কর লাগে। তারই ফল হচ্ছে ভূমিকম্প।
টক্কর বা ঘর্ষণের তীব্রতা ও কেন্দ্রস্থলের গভীরতা অনুযায়ী কখনো একটি ছোট এলাকার, কখনো বা কোনো বিশদ অঞ্চলের ভূমি কেঁপে ওঠে। কম্পনের তীব্রতা যত বেশি হয়, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তত বাড়ে। বড় ভূমিকম্প হতে হলে বড় ধরনের ভূ-চ্যুতি দরকার হয়। এই সাধারণ ও মৌলিক কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করে দেখতে পারি, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কতখানি।
দুই. বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হতে পারে দুই কারণে। প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরের বড় কোনো ভূ-চ্যুতি যদি থেকে থাকে। দ্বিতীয়ত, দেশের সীমানার বাইরে ভিন্ন কোনো দেশের কিংবা আন্তদেশীয় কোনো ভূ-চ্যুতিতে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প হলে তার প্রভাবে।
দেশের অভ্যন্তরে এমন কোনো চ্যুতি কি আছে, যেটি কোনো বড় ভূমিকম্পের উৎসস্থল হতে পারে? এ ক্ষেত্রে আমরা সিলেটের শ্রীমঙ্গল এবং মধুপুর চ্যুতির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে পারি। দেশের অভ্যন্তরে এই দুটো চ্যুতি বড় ভূমিকম্পের উৎস হওয়ার মতো ছিল। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল চ্যুতি সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টিও করেছিল শতাধিক বছর আগে। বিজ্ঞানীদের সর্বশেষ গবেষণার ফলাফল বলে, এই চ্যুতিগুলো এখন আর সক্রিয় নয়। ফলে এগুলো আর কোনো বড় ভূমিকম্পের উৎস হতে পারবে না।
দেশের অভ্যন্তরে বৃহত্তর সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর প্রভৃতি অঞ্চলে আরও কয়েকটি বড় ভূ-চ্যুতির কথাও বিজ্ঞানীরা বলতেন। এখন সেগুলো সবই নিষ্ক্রিয়
এবং বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির সহায়ক নয়। সুতরাং দেশের অভ্যন্তরের কোনো ভূ-চ্যুতি থেকে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির আশঙ্কা নেই বললেই চলে।
দেশের বাইরে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মতো ভূ-চ্যুতি ছিল বা রয়েছে প্রতিবেশী ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে, আন্দামান সাগরে এবং মিয়ানমারে। আসাম ও মেঘালয়ের ভূ-চ্যুতিগুলো সুদূর অতীতে ‘গ্রেট বেঙ্গল আর্থকোয়েক’সহ একাধিক বড় ভূমিকম্পের কারণ হয়েছে, যার প্রভাব তখন ঢাকাসহ বাংলাদেশেও পড়েছিল। তবে বাংলাদেশের কোথাও তা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠেনি, কিংবা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞও সৃষ্টি করেনি। মনে রাখা দরকার, এর মধ্যে গ্রেট বেঙ্গল আর্থকোয়েক ছিল রিখটার স্কেলে প্রায় সাড়ে ৮ মাত্রার।
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের বিপজ্জনক চ্যুতিগুলোতে অনেকবারই ভূমিকম্প হয়েছে। তবে তা বাংলাদেশের কোনো এলাকায় বলার মতো কোনো
ধ্বংস সাধন করেনি। ভবিষ্যতে যদি সেখানে ৮ কিংবা এরও বেশি মাত্রার কোনো ভূমিকম্প হয়, তার প্রভাব বাংলাদেশে অবশ্যই পড়বে। তবে তা বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করে ফেলবে—এমন আশঙ্কা বিজ্ঞানীরা করেন না।
তিন. বাংলাদেশে বড় এবং প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের আশঙ্কা সৃষ্টি হলো কীভাবে? প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরের পুরোনো ও বর্তমানে নিষ্ক্রিয় চ্যুতিগুলো অনেকের মনে ঐতিহাসিকভাবে ওই আশঙ্কার বীজ বুনে রেখেছে। আমাদের দেশে ভূ-চ্যুতির সংখ্যা, অবস্থান ও প্রকৃতির বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কোনো জরিপ হয়নি। ফলে বিজ্ঞানীরা নিরাপদ অবস্থানে থাকার জন্য বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কাকে নাকচ করে দেন না।
আরেকটি কারণ, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কার ভিত্তি তৈরি করতে পারলে যেকোনো ধরনের নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাবে। তাতে প্রকল্পগুলোর পরামর্শক, স্থপতি, প্রকৌশলীদেরও কাজের পরিধি এবং উপার্জনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। যেমন ধরুন, আমাদের পদ্মা সেতুর ডিজাইন করা হয়েছে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পসহনশীল হিসেবে। যদি সেটি ৮ মাত্রার ভূমিকম্পসহনশীল হিসেবে ডিজাইন করা হতো, তাহলে ব্যয় কয়েক হাজার কোটি টাকা কম হতো। সব স্থাপনার ক্ষেত্রেই বিষয়টি এ রকম।
সর্বশেষ কারণ হচ্ছে একটি গবেষণা প্রতিবেদন, যা সংশ্লিষ্ট গবেষক দল ইতিমধ্যে ভুল স্বীকার করে সংশোধনও করেছে। অবশ্য সংশোধনের পরও বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে প্রশ্ন আছে। এসব খবর দেশের খুব বেশি লোক রাখে না। ২০১৬ সালে আমেরিকান ভূপদার্থবিদ মাইকেল স্টেকলার একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তাতে ঢাকার তলদেশ দিয়ে প্রায় মিয়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত একটি অভিন্ন ভূ-চ্যুতিরেখা টেনে বলা হয়, এটি ৮ দশমিক ২ থেকে ৯ মাত্রার একটি প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের উৎস হবে। সেই ভূমিকম্প বাংলাদেশের বিস্তৃত এলাকায় প্রলয় ঘটাবে। ঢাকার ভূস্তর কাদামাটিতে পরিণত হবে। ঢাকায় কোনো স্থাপনা কিংবা মানুষজনের অস্তিত্ব থাকবে না।
তাতে আরও বলা হয়, ইন্দো-বার্মা রেঞ্জের একটি টেকটোনিক প্লেট বাউন্ডারিতে লক সৃষ্টি হয়ে নিশ্চল হয়ে আছে। ফলে সেখানকার ভূগর্ভে এত বেশি শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে যে ওই লক যখন খুলবে, তখন এক শক্তিশালী ভূমিকম্প হবে, যা বাংলাদেশের জন্যও বিপর্যয়কর হবে। আমাদের দেশের কয়েকজন ভূবিজ্ঞানীও এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত।
এই গবেষণার ফলাফল আমাদের দেশের মতোই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী মহলেও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। কারণ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে, একটি মাত্র মডেলের ওপর ভিত্তি করে করা কোনো গবেষণার ফলাফল থেকে এত বড় একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় না।
তা ছাড়া ঢাকার তলদেশ দিয়ে যে চ্যুতিরেখাটি তাঁরা টেনেছেন, সেটি একটানা অভিন্ন কোনো ভূ-চ্যুতি নয়। মানুষ যত দিন থেকে পৃথিবীতে ভূমিকম্পের সঙ্গে পরিচিত, তত দিনের মধ্যে, অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ওই চ্যুতি কোনো ভূমিকম্পের উৎস হয়েছে বলে তথ্য-প্রমাণ নেই।
মাইকেল স্টেকলার বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্ব ভারত ও বার্মিজ রেঞ্জে দুটি টেকটোনিক প্লেটের বাউন্ডারিতে যে লকের কথা বলেছেন, সেটিও মিয়ানমারের অনেক ভেতরে। সেখানে সৃষ্ট ভূমিকম্প বাংলাদেশের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম।
বিশেষজ্ঞদের এহেন বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণেই বোধ হয় স্টেকলার তাঁর গবেষণার ফলাফল কিছুটা সংশোধন করেছেন। সেই সংশোধনীর সংক্ষিপ্তসারে (অ্যাবস্ট্রাক্ট) বলা হয়েছে, তাঁদের প্রাপ্ত চ্যুতিতে সর্বোচ্চ ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ২ মাত্রার কথা। এটি কি দ্বিচারিতা, নাকি আরেকটি ভুল, সে প্রশ্নও উঠেছে।
প্রসঙ্গত, রজার বিলহাম নামের আরেক আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ ও গবেষক হিমালয় অঞ্চলে ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান প্লেট বাউন্ডারিতে স্টেকলারের মতোই একটি লক (হিমালয়ান লক) আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর গবেষণার ফলাফলেও দেখানো হয়েছিল, ওই লকের ফলে ওই অঞ্চলে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে।
ভারত সরকারের নির্দেশে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিয়ে নিবিড় সমীক্ষা ও অনুসন্ধান চালানোর পর রজার বিলহামের গবেষণার ফলাফলকে অতিরঞ্জিত ও অনেকটাই ভিত্তিহীন বলে অভিমত দেন। তার ভিত্তিতে ভারত সরকার তৎক্ষণাৎ রজার বিলহামের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়।
চার. গত ১০-১২ বছরে ঢাকার আশপাশে ৩ থেকে সাড়ে ৫ মাত্রার অন্তত ৮টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন ঘন এসব ছোট ও মাঝারি ভূমিকম্প কী বার্তা দেয়? মোটামুটি চারটি বার্তা দেয় বলা যায়।
প্রথম বার্তা হচ্ছে, এই অঞ্চলে ‘টেকটোনিক অ্যাকটিভিটি’ বৃদ্ধি পেয়েছে। সব সময় সব অঞ্চলে এই অ্যাকটিভিটি সমান থাকে না। দ্বিতীয় বার্তা হচ্ছে, ছোট ও মাঝারি শক্তির এসব ভূমিকম্পের ফলে ভূগর্ভে সঞ্চিত শক্তি বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে বেশি শক্তি সঞ্চিত হয়ে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কমছে। তৃতীয় বার্তাটি হচ্ছে, ঢাকার আশপাশে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো কোনো সক্রিয় ভূ-চ্যুতি নেই। চতুর্থ বার্তা হচ্ছে, আমরা যদি বিদ্যমান বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করি, তাহলে এই ভূমিকম্পগুলো এবং প্রতিবেশী দেশের বিপজ্জনক ভূ-চ্যুতিতে সৃষ্ট বড় ভূমিকম্পও আমাদের জন্য বিপর্যয়কর হবে না।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত বলে ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ছোট-বড় অনেক ভূমিকম্পের সাক্ষ্য বহন করছে। দেশের অভ্যন্তরের ভূ-চ্যুতি (জিওলজিক্যাল ফল্ট) থেকে এখানে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির ইতিহাস আছে। যেমন রিখটার স্কেলে সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প শ্রীমঙ্গলে হয়েছিল। আবার ৩ থেকে সাড়ে ৫ মাত্রার অনেক ছোট ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পও এখানে হয়েছে। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে সৃষ্ট অনেক ভূমিকম্পেও বাংলাদেশ বহুবার কেঁপে উঠেছে।
ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। পৃথিবী নামের আমাদের গ্রহটি যে টেকটোনিক প্লেটগুলোর ওপর বসে আছে, সেগুলো অবিরাম সঞ্চরণশীল। এই সঞ্চরণের পথে কখনো কখনো দুটি প্লেটের মধ্যে (প্লেট বাউন্ডারিতে) টক্কর লাগে। তারই ফল হচ্ছে ভূমিকম্প।
টক্কর বা ঘর্ষণের তীব্রতা ও কেন্দ্রস্থলের গভীরতা অনুযায়ী কখনো একটি ছোট এলাকার, কখনো বা কোনো বিশদ অঞ্চলের ভূমি কেঁপে ওঠে। কম্পনের তীব্রতা যত বেশি হয়, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তত বাড়ে। বড় ভূমিকম্প হতে হলে বড় ধরনের ভূ-চ্যুতি দরকার হয়। এই সাধারণ ও মৌলিক কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করে দেখতে পারি, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কতখানি।
দুই. বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হতে পারে দুই কারণে। প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরের বড় কোনো ভূ-চ্যুতি যদি থেকে থাকে। দ্বিতীয়ত, দেশের সীমানার বাইরে ভিন্ন কোনো দেশের কিংবা আন্তদেশীয় কোনো ভূ-চ্যুতিতে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প হলে তার প্রভাবে।
দেশের অভ্যন্তরে এমন কোনো চ্যুতি কি আছে, যেটি কোনো বড় ভূমিকম্পের উৎসস্থল হতে পারে? এ ক্ষেত্রে আমরা সিলেটের শ্রীমঙ্গল এবং মধুপুর চ্যুতির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে পারি। দেশের অভ্যন্তরে এই দুটো চ্যুতি বড় ভূমিকম্পের উৎস হওয়ার মতো ছিল। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল চ্যুতি সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টিও করেছিল শতাধিক বছর আগে। বিজ্ঞানীদের সর্বশেষ গবেষণার ফলাফল বলে, এই চ্যুতিগুলো এখন আর সক্রিয় নয়। ফলে এগুলো আর কোনো বড় ভূমিকম্পের উৎস হতে পারবে না।
দেশের অভ্যন্তরে বৃহত্তর সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর প্রভৃতি অঞ্চলে আরও কয়েকটি বড় ভূ-চ্যুতির কথাও বিজ্ঞানীরা বলতেন। এখন সেগুলো সবই নিষ্ক্রিয়
এবং বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির সহায়ক নয়। সুতরাং দেশের অভ্যন্তরের কোনো ভূ-চ্যুতি থেকে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির আশঙ্কা নেই বললেই চলে।
দেশের বাইরে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মতো ভূ-চ্যুতি ছিল বা রয়েছে প্রতিবেশী ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে, আন্দামান সাগরে এবং মিয়ানমারে। আসাম ও মেঘালয়ের ভূ-চ্যুতিগুলো সুদূর অতীতে ‘গ্রেট বেঙ্গল আর্থকোয়েক’সহ একাধিক বড় ভূমিকম্পের কারণ হয়েছে, যার প্রভাব তখন ঢাকাসহ বাংলাদেশেও পড়েছিল। তবে বাংলাদেশের কোথাও তা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠেনি, কিংবা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞও সৃষ্টি করেনি। মনে রাখা দরকার, এর মধ্যে গ্রেট বেঙ্গল আর্থকোয়েক ছিল রিখটার স্কেলে প্রায় সাড়ে ৮ মাত্রার।
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের বিপজ্জনক চ্যুতিগুলোতে অনেকবারই ভূমিকম্প হয়েছে। তবে তা বাংলাদেশের কোনো এলাকায় বলার মতো কোনো
ধ্বংস সাধন করেনি। ভবিষ্যতে যদি সেখানে ৮ কিংবা এরও বেশি মাত্রার কোনো ভূমিকম্প হয়, তার প্রভাব বাংলাদেশে অবশ্যই পড়বে। তবে তা বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করে ফেলবে—এমন আশঙ্কা বিজ্ঞানীরা করেন না।
তিন. বাংলাদেশে বড় এবং প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের আশঙ্কা সৃষ্টি হলো কীভাবে? প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরের পুরোনো ও বর্তমানে নিষ্ক্রিয় চ্যুতিগুলো অনেকের মনে ঐতিহাসিকভাবে ওই আশঙ্কার বীজ বুনে রেখেছে। আমাদের দেশে ভূ-চ্যুতির সংখ্যা, অবস্থান ও প্রকৃতির বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কোনো জরিপ হয়নি। ফলে বিজ্ঞানীরা নিরাপদ অবস্থানে থাকার জন্য বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কাকে নাকচ করে দেন না।
আরেকটি কারণ, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কার ভিত্তি তৈরি করতে পারলে যেকোনো ধরনের নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাবে। তাতে প্রকল্পগুলোর পরামর্শক, স্থপতি, প্রকৌশলীদেরও কাজের পরিধি এবং উপার্জনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। যেমন ধরুন, আমাদের পদ্মা সেতুর ডিজাইন করা হয়েছে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পসহনশীল হিসেবে। যদি সেটি ৮ মাত্রার ভূমিকম্পসহনশীল হিসেবে ডিজাইন করা হতো, তাহলে ব্যয় কয়েক হাজার কোটি টাকা কম হতো। সব স্থাপনার ক্ষেত্রেই বিষয়টি এ রকম।
সর্বশেষ কারণ হচ্ছে একটি গবেষণা প্রতিবেদন, যা সংশ্লিষ্ট গবেষক দল ইতিমধ্যে ভুল স্বীকার করে সংশোধনও করেছে। অবশ্য সংশোধনের পরও বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে প্রশ্ন আছে। এসব খবর দেশের খুব বেশি লোক রাখে না। ২০১৬ সালে আমেরিকান ভূপদার্থবিদ মাইকেল স্টেকলার একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তাতে ঢাকার তলদেশ দিয়ে প্রায় মিয়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত একটি অভিন্ন ভূ-চ্যুতিরেখা টেনে বলা হয়, এটি ৮ দশমিক ২ থেকে ৯ মাত্রার একটি প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের উৎস হবে। সেই ভূমিকম্প বাংলাদেশের বিস্তৃত এলাকায় প্রলয় ঘটাবে। ঢাকার ভূস্তর কাদামাটিতে পরিণত হবে। ঢাকায় কোনো স্থাপনা কিংবা মানুষজনের অস্তিত্ব থাকবে না।
তাতে আরও বলা হয়, ইন্দো-বার্মা রেঞ্জের একটি টেকটোনিক প্লেট বাউন্ডারিতে লক সৃষ্টি হয়ে নিশ্চল হয়ে আছে। ফলে সেখানকার ভূগর্ভে এত বেশি শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে যে ওই লক যখন খুলবে, তখন এক শক্তিশালী ভূমিকম্প হবে, যা বাংলাদেশের জন্যও বিপর্যয়কর হবে। আমাদের দেশের কয়েকজন ভূবিজ্ঞানীও এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত।
এই গবেষণার ফলাফল আমাদের দেশের মতোই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী মহলেও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। কারণ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে, একটি মাত্র মডেলের ওপর ভিত্তি করে করা কোনো গবেষণার ফলাফল থেকে এত বড় একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় না।
তা ছাড়া ঢাকার তলদেশ দিয়ে যে চ্যুতিরেখাটি তাঁরা টেনেছেন, সেটি একটানা অভিন্ন কোনো ভূ-চ্যুতি নয়। মানুষ যত দিন থেকে পৃথিবীতে ভূমিকম্পের সঙ্গে পরিচিত, তত দিনের মধ্যে, অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ওই চ্যুতি কোনো ভূমিকম্পের উৎস হয়েছে বলে তথ্য-প্রমাণ নেই।
মাইকেল স্টেকলার বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্ব ভারত ও বার্মিজ রেঞ্জে দুটি টেকটোনিক প্লেটের বাউন্ডারিতে যে লকের কথা বলেছেন, সেটিও মিয়ানমারের অনেক ভেতরে। সেখানে সৃষ্ট ভূমিকম্প বাংলাদেশের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম।
বিশেষজ্ঞদের এহেন বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণেই বোধ হয় স্টেকলার তাঁর গবেষণার ফলাফল কিছুটা সংশোধন করেছেন। সেই সংশোধনীর সংক্ষিপ্তসারে (অ্যাবস্ট্রাক্ট) বলা হয়েছে, তাঁদের প্রাপ্ত চ্যুতিতে সর্বোচ্চ ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ২ মাত্রার কথা। এটি কি দ্বিচারিতা, নাকি আরেকটি ভুল, সে প্রশ্নও উঠেছে।
প্রসঙ্গত, রজার বিলহাম নামের আরেক আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ ও গবেষক হিমালয় অঞ্চলে ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান প্লেট বাউন্ডারিতে স্টেকলারের মতোই একটি লক (হিমালয়ান লক) আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর গবেষণার ফলাফলেও দেখানো হয়েছিল, ওই লকের ফলে ওই অঞ্চলে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে।
ভারত সরকারের নির্দেশে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিয়ে নিবিড় সমীক্ষা ও অনুসন্ধান চালানোর পর রজার বিলহামের গবেষণার ফলাফলকে অতিরঞ্জিত ও অনেকটাই ভিত্তিহীন বলে অভিমত দেন। তার ভিত্তিতে ভারত সরকার তৎক্ষণাৎ রজার বিলহামের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়।
চার. গত ১০-১২ বছরে ঢাকার আশপাশে ৩ থেকে সাড়ে ৫ মাত্রার অন্তত ৮টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন ঘন এসব ছোট ও মাঝারি ভূমিকম্প কী বার্তা দেয়? মোটামুটি চারটি বার্তা দেয় বলা যায়।
প্রথম বার্তা হচ্ছে, এই অঞ্চলে ‘টেকটোনিক অ্যাকটিভিটি’ বৃদ্ধি পেয়েছে। সব সময় সব অঞ্চলে এই অ্যাকটিভিটি সমান থাকে না। দ্বিতীয় বার্তা হচ্ছে, ছোট ও মাঝারি শক্তির এসব ভূমিকম্পের ফলে ভূগর্ভে সঞ্চিত শক্তি বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে বেশি শক্তি সঞ্চিত হয়ে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কমছে। তৃতীয় বার্তাটি হচ্ছে, ঢাকার আশপাশে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো কোনো সক্রিয় ভূ-চ্যুতি নেই। চতুর্থ বার্তা হচ্ছে, আমরা যদি বিদ্যমান বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করি, তাহলে এই ভূমিকম্পগুলো এবং প্রতিবেশী দেশের বিপজ্জনক ভূ-চ্যুতিতে সৃষ্ট বড় ভূমিকম্পও আমাদের জন্য বিপর্যয়কর হবে না।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
অরুণ কর্মকার
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত বলে ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ছোট-বড় অনেক ভূমিকম্পের সাক্ষ্য বহন করছে। দেশের অভ্যন্তরের ভূ-চ্যুতি (জিওলজিক্যাল ফল্ট) থেকে এখানে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির ইতিহাস আছে। যেমন রিখটার স্কেলে সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প শ্রীমঙ্গলে হয়েছিল। আবার ৩ থেকে সাড়ে ৫ মাত্রার অনেক ছোট ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পও এখানে হয়েছে। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে সৃষ্ট অনেক ভূমিকম্পেও বাংলাদেশ বহুবার কেঁপে উঠেছে।
ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। পৃথিবী নামের আমাদের গ্রহটি যে টেকটোনিক প্লেটগুলোর ওপর বসে আছে, সেগুলো অবিরাম সঞ্চরণশীল। এই সঞ্চরণের পথে কখনো কখনো দুটি প্লেটের মধ্যে (প্লেট বাউন্ডারিতে) টক্কর লাগে। তারই ফল হচ্ছে ভূমিকম্প।
টক্কর বা ঘর্ষণের তীব্রতা ও কেন্দ্রস্থলের গভীরতা অনুযায়ী কখনো একটি ছোট এলাকার, কখনো বা কোনো বিশদ অঞ্চলের ভূমি কেঁপে ওঠে। কম্পনের তীব্রতা যত বেশি হয়, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তত বাড়ে। বড় ভূমিকম্প হতে হলে বড় ধরনের ভূ-চ্যুতি দরকার হয়। এই সাধারণ ও মৌলিক কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করে দেখতে পারি, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কতখানি।
দুই. বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হতে পারে দুই কারণে। প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরের বড় কোনো ভূ-চ্যুতি যদি থেকে থাকে। দ্বিতীয়ত, দেশের সীমানার বাইরে ভিন্ন কোনো দেশের কিংবা আন্তদেশীয় কোনো ভূ-চ্যুতিতে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প হলে তার প্রভাবে।
দেশের অভ্যন্তরে এমন কোনো চ্যুতি কি আছে, যেটি কোনো বড় ভূমিকম্পের উৎসস্থল হতে পারে? এ ক্ষেত্রে আমরা সিলেটের শ্রীমঙ্গল এবং মধুপুর চ্যুতির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে পারি। দেশের অভ্যন্তরে এই দুটো চ্যুতি বড় ভূমিকম্পের উৎস হওয়ার মতো ছিল। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল চ্যুতি সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টিও করেছিল শতাধিক বছর আগে। বিজ্ঞানীদের সর্বশেষ গবেষণার ফলাফল বলে, এই চ্যুতিগুলো এখন আর সক্রিয় নয়। ফলে এগুলো আর কোনো বড় ভূমিকম্পের উৎস হতে পারবে না।
দেশের অভ্যন্তরে বৃহত্তর সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর প্রভৃতি অঞ্চলে আরও কয়েকটি বড় ভূ-চ্যুতির কথাও বিজ্ঞানীরা বলতেন। এখন সেগুলো সবই নিষ্ক্রিয়
এবং বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির সহায়ক নয়। সুতরাং দেশের অভ্যন্তরের কোনো ভূ-চ্যুতি থেকে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির আশঙ্কা নেই বললেই চলে।
দেশের বাইরে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মতো ভূ-চ্যুতি ছিল বা রয়েছে প্রতিবেশী ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে, আন্দামান সাগরে এবং মিয়ানমারে। আসাম ও মেঘালয়ের ভূ-চ্যুতিগুলো সুদূর অতীতে ‘গ্রেট বেঙ্গল আর্থকোয়েক’সহ একাধিক বড় ভূমিকম্পের কারণ হয়েছে, যার প্রভাব তখন ঢাকাসহ বাংলাদেশেও পড়েছিল। তবে বাংলাদেশের কোথাও তা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠেনি, কিংবা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞও সৃষ্টি করেনি। মনে রাখা দরকার, এর মধ্যে গ্রেট বেঙ্গল আর্থকোয়েক ছিল রিখটার স্কেলে প্রায় সাড়ে ৮ মাত্রার।
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের বিপজ্জনক চ্যুতিগুলোতে অনেকবারই ভূমিকম্প হয়েছে। তবে তা বাংলাদেশের কোনো এলাকায় বলার মতো কোনো
ধ্বংস সাধন করেনি। ভবিষ্যতে যদি সেখানে ৮ কিংবা এরও বেশি মাত্রার কোনো ভূমিকম্প হয়, তার প্রভাব বাংলাদেশে অবশ্যই পড়বে। তবে তা বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করে ফেলবে—এমন আশঙ্কা বিজ্ঞানীরা করেন না।
তিন. বাংলাদেশে বড় এবং প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের আশঙ্কা সৃষ্টি হলো কীভাবে? প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরের পুরোনো ও বর্তমানে নিষ্ক্রিয় চ্যুতিগুলো অনেকের মনে ঐতিহাসিকভাবে ওই আশঙ্কার বীজ বুনে রেখেছে। আমাদের দেশে ভূ-চ্যুতির সংখ্যা, অবস্থান ও প্রকৃতির বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কোনো জরিপ হয়নি। ফলে বিজ্ঞানীরা নিরাপদ অবস্থানে থাকার জন্য বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কাকে নাকচ করে দেন না।
আরেকটি কারণ, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কার ভিত্তি তৈরি করতে পারলে যেকোনো ধরনের নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাবে। তাতে প্রকল্পগুলোর পরামর্শক, স্থপতি, প্রকৌশলীদেরও কাজের পরিধি এবং উপার্জনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। যেমন ধরুন, আমাদের পদ্মা সেতুর ডিজাইন করা হয়েছে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পসহনশীল হিসেবে। যদি সেটি ৮ মাত্রার ভূমিকম্পসহনশীল হিসেবে ডিজাইন করা হতো, তাহলে ব্যয় কয়েক হাজার কোটি টাকা কম হতো। সব স্থাপনার ক্ষেত্রেই বিষয়টি এ রকম।
সর্বশেষ কারণ হচ্ছে একটি গবেষণা প্রতিবেদন, যা সংশ্লিষ্ট গবেষক দল ইতিমধ্যে ভুল স্বীকার করে সংশোধনও করেছে। অবশ্য সংশোধনের পরও বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে প্রশ্ন আছে। এসব খবর দেশের খুব বেশি লোক রাখে না। ২০১৬ সালে আমেরিকান ভূপদার্থবিদ মাইকেল স্টেকলার একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তাতে ঢাকার তলদেশ দিয়ে প্রায় মিয়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত একটি অভিন্ন ভূ-চ্যুতিরেখা টেনে বলা হয়, এটি ৮ দশমিক ২ থেকে ৯ মাত্রার একটি প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের উৎস হবে। সেই ভূমিকম্প বাংলাদেশের বিস্তৃত এলাকায় প্রলয় ঘটাবে। ঢাকার ভূস্তর কাদামাটিতে পরিণত হবে। ঢাকায় কোনো স্থাপনা কিংবা মানুষজনের অস্তিত্ব থাকবে না।
তাতে আরও বলা হয়, ইন্দো-বার্মা রেঞ্জের একটি টেকটোনিক প্লেট বাউন্ডারিতে লক সৃষ্টি হয়ে নিশ্চল হয়ে আছে। ফলে সেখানকার ভূগর্ভে এত বেশি শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে যে ওই লক যখন খুলবে, তখন এক শক্তিশালী ভূমিকম্প হবে, যা বাংলাদেশের জন্যও বিপর্যয়কর হবে। আমাদের দেশের কয়েকজন ভূবিজ্ঞানীও এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত।
এই গবেষণার ফলাফল আমাদের দেশের মতোই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী মহলেও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। কারণ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে, একটি মাত্র মডেলের ওপর ভিত্তি করে করা কোনো গবেষণার ফলাফল থেকে এত বড় একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় না।
তা ছাড়া ঢাকার তলদেশ দিয়ে যে চ্যুতিরেখাটি তাঁরা টেনেছেন, সেটি একটানা অভিন্ন কোনো ভূ-চ্যুতি নয়। মানুষ যত দিন থেকে পৃথিবীতে ভূমিকম্পের সঙ্গে পরিচিত, তত দিনের মধ্যে, অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ওই চ্যুতি কোনো ভূমিকম্পের উৎস হয়েছে বলে তথ্য-প্রমাণ নেই।
মাইকেল স্টেকলার বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্ব ভারত ও বার্মিজ রেঞ্জে দুটি টেকটোনিক প্লেটের বাউন্ডারিতে যে লকের কথা বলেছেন, সেটিও মিয়ানমারের অনেক ভেতরে। সেখানে সৃষ্ট ভূমিকম্প বাংলাদেশের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম।
বিশেষজ্ঞদের এহেন বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণেই বোধ হয় স্টেকলার তাঁর গবেষণার ফলাফল কিছুটা সংশোধন করেছেন। সেই সংশোধনীর সংক্ষিপ্তসারে (অ্যাবস্ট্রাক্ট) বলা হয়েছে, তাঁদের প্রাপ্ত চ্যুতিতে সর্বোচ্চ ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ২ মাত্রার কথা। এটি কি দ্বিচারিতা, নাকি আরেকটি ভুল, সে প্রশ্নও উঠেছে।
প্রসঙ্গত, রজার বিলহাম নামের আরেক আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ ও গবেষক হিমালয় অঞ্চলে ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান প্লেট বাউন্ডারিতে স্টেকলারের মতোই একটি লক (হিমালয়ান লক) আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর গবেষণার ফলাফলেও দেখানো হয়েছিল, ওই লকের ফলে ওই অঞ্চলে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে।
ভারত সরকারের নির্দেশে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিয়ে নিবিড় সমীক্ষা ও অনুসন্ধান চালানোর পর রজার বিলহামের গবেষণার ফলাফলকে অতিরঞ্জিত ও অনেকটাই ভিত্তিহীন বলে অভিমত দেন। তার ভিত্তিতে ভারত সরকার তৎক্ষণাৎ রজার বিলহামের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়।
চার. গত ১০-১২ বছরে ঢাকার আশপাশে ৩ থেকে সাড়ে ৫ মাত্রার অন্তত ৮টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন ঘন এসব ছোট ও মাঝারি ভূমিকম্প কী বার্তা দেয়? মোটামুটি চারটি বার্তা দেয় বলা যায়।
প্রথম বার্তা হচ্ছে, এই অঞ্চলে ‘টেকটোনিক অ্যাকটিভিটি’ বৃদ্ধি পেয়েছে। সব সময় সব অঞ্চলে এই অ্যাকটিভিটি সমান থাকে না। দ্বিতীয় বার্তা হচ্ছে, ছোট ও মাঝারি শক্তির এসব ভূমিকম্পের ফলে ভূগর্ভে সঞ্চিত শক্তি বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে বেশি শক্তি সঞ্চিত হয়ে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কমছে। তৃতীয় বার্তাটি হচ্ছে, ঢাকার আশপাশে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো কোনো সক্রিয় ভূ-চ্যুতি নেই। চতুর্থ বার্তা হচ্ছে, আমরা যদি বিদ্যমান বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করি, তাহলে এই ভূমিকম্পগুলো এবং প্রতিবেশী দেশের বিপজ্জনক ভূ-চ্যুতিতে সৃষ্ট বড় ভূমিকম্পও আমাদের জন্য বিপর্যয়কর হবে না।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত বলে ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ছোট-বড় অনেক ভূমিকম্পের সাক্ষ্য বহন করছে। দেশের অভ্যন্তরের ভূ-চ্যুতি (জিওলজিক্যাল ফল্ট) থেকে এখানে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির ইতিহাস আছে। যেমন রিখটার স্কেলে সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প শ্রীমঙ্গলে হয়েছিল। আবার ৩ থেকে সাড়ে ৫ মাত্রার অনেক ছোট ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পও এখানে হয়েছে। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে সৃষ্ট অনেক ভূমিকম্পেও বাংলাদেশ বহুবার কেঁপে উঠেছে।
ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। পৃথিবী নামের আমাদের গ্রহটি যে টেকটোনিক প্লেটগুলোর ওপর বসে আছে, সেগুলো অবিরাম সঞ্চরণশীল। এই সঞ্চরণের পথে কখনো কখনো দুটি প্লেটের মধ্যে (প্লেট বাউন্ডারিতে) টক্কর লাগে। তারই ফল হচ্ছে ভূমিকম্প।
টক্কর বা ঘর্ষণের তীব্রতা ও কেন্দ্রস্থলের গভীরতা অনুযায়ী কখনো একটি ছোট এলাকার, কখনো বা কোনো বিশদ অঞ্চলের ভূমি কেঁপে ওঠে। কম্পনের তীব্রতা যত বেশি হয়, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তত বাড়ে। বড় ভূমিকম্প হতে হলে বড় ধরনের ভূ-চ্যুতি দরকার হয়। এই সাধারণ ও মৌলিক কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করে দেখতে পারি, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কতখানি।
দুই. বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হতে পারে দুই কারণে। প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরের বড় কোনো ভূ-চ্যুতি যদি থেকে থাকে। দ্বিতীয়ত, দেশের সীমানার বাইরে ভিন্ন কোনো দেশের কিংবা আন্তদেশীয় কোনো ভূ-চ্যুতিতে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প হলে তার প্রভাবে।
দেশের অভ্যন্তরে এমন কোনো চ্যুতি কি আছে, যেটি কোনো বড় ভূমিকম্পের উৎসস্থল হতে পারে? এ ক্ষেত্রে আমরা সিলেটের শ্রীমঙ্গল এবং মধুপুর চ্যুতির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে পারি। দেশের অভ্যন্তরে এই দুটো চ্যুতি বড় ভূমিকম্পের উৎস হওয়ার মতো ছিল। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল চ্যুতি সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টিও করেছিল শতাধিক বছর আগে। বিজ্ঞানীদের সর্বশেষ গবেষণার ফলাফল বলে, এই চ্যুতিগুলো এখন আর সক্রিয় নয়। ফলে এগুলো আর কোনো বড় ভূমিকম্পের উৎস হতে পারবে না।
দেশের অভ্যন্তরে বৃহত্তর সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর প্রভৃতি অঞ্চলে আরও কয়েকটি বড় ভূ-চ্যুতির কথাও বিজ্ঞানীরা বলতেন। এখন সেগুলো সবই নিষ্ক্রিয়
এবং বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির সহায়ক নয়। সুতরাং দেশের অভ্যন্তরের কোনো ভূ-চ্যুতি থেকে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির আশঙ্কা নেই বললেই চলে।
দেশের বাইরে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মতো ভূ-চ্যুতি ছিল বা রয়েছে প্রতিবেশী ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে, আন্দামান সাগরে এবং মিয়ানমারে। আসাম ও মেঘালয়ের ভূ-চ্যুতিগুলো সুদূর অতীতে ‘গ্রেট বেঙ্গল আর্থকোয়েক’সহ একাধিক বড় ভূমিকম্পের কারণ হয়েছে, যার প্রভাব তখন ঢাকাসহ বাংলাদেশেও পড়েছিল। তবে বাংলাদেশের কোথাও তা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠেনি, কিংবা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞও সৃষ্টি করেনি। মনে রাখা দরকার, এর মধ্যে গ্রেট বেঙ্গল আর্থকোয়েক ছিল রিখটার স্কেলে প্রায় সাড়ে ৮ মাত্রার।
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের বিপজ্জনক চ্যুতিগুলোতে অনেকবারই ভূমিকম্প হয়েছে। তবে তা বাংলাদেশের কোনো এলাকায় বলার মতো কোনো
ধ্বংস সাধন করেনি। ভবিষ্যতে যদি সেখানে ৮ কিংবা এরও বেশি মাত্রার কোনো ভূমিকম্প হয়, তার প্রভাব বাংলাদেশে অবশ্যই পড়বে। তবে তা বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করে ফেলবে—এমন আশঙ্কা বিজ্ঞানীরা করেন না।
তিন. বাংলাদেশে বড় এবং প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের আশঙ্কা সৃষ্টি হলো কীভাবে? প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরের পুরোনো ও বর্তমানে নিষ্ক্রিয় চ্যুতিগুলো অনেকের মনে ঐতিহাসিকভাবে ওই আশঙ্কার বীজ বুনে রেখেছে। আমাদের দেশে ভূ-চ্যুতির সংখ্যা, অবস্থান ও প্রকৃতির বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কোনো জরিপ হয়নি। ফলে বিজ্ঞানীরা নিরাপদ অবস্থানে থাকার জন্য বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কাকে নাকচ করে দেন না।
আরেকটি কারণ, বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কার ভিত্তি তৈরি করতে পারলে যেকোনো ধরনের নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাবে। তাতে প্রকল্পগুলোর পরামর্শক, স্থপতি, প্রকৌশলীদেরও কাজের পরিধি এবং উপার্জনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। যেমন ধরুন, আমাদের পদ্মা সেতুর ডিজাইন করা হয়েছে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পসহনশীল হিসেবে। যদি সেটি ৮ মাত্রার ভূমিকম্পসহনশীল হিসেবে ডিজাইন করা হতো, তাহলে ব্যয় কয়েক হাজার কোটি টাকা কম হতো। সব স্থাপনার ক্ষেত্রেই বিষয়টি এ রকম।
সর্বশেষ কারণ হচ্ছে একটি গবেষণা প্রতিবেদন, যা সংশ্লিষ্ট গবেষক দল ইতিমধ্যে ভুল স্বীকার করে সংশোধনও করেছে। অবশ্য সংশোধনের পরও বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে প্রশ্ন আছে। এসব খবর দেশের খুব বেশি লোক রাখে না। ২০১৬ সালে আমেরিকান ভূপদার্থবিদ মাইকেল স্টেকলার একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তাতে ঢাকার তলদেশ দিয়ে প্রায় মিয়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত একটি অভিন্ন ভূ-চ্যুতিরেখা টেনে বলা হয়, এটি ৮ দশমিক ২ থেকে ৯ মাত্রার একটি প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের উৎস হবে। সেই ভূমিকম্প বাংলাদেশের বিস্তৃত এলাকায় প্রলয় ঘটাবে। ঢাকার ভূস্তর কাদামাটিতে পরিণত হবে। ঢাকায় কোনো স্থাপনা কিংবা মানুষজনের অস্তিত্ব থাকবে না।
তাতে আরও বলা হয়, ইন্দো-বার্মা রেঞ্জের একটি টেকটোনিক প্লেট বাউন্ডারিতে লক সৃষ্টি হয়ে নিশ্চল হয়ে আছে। ফলে সেখানকার ভূগর্ভে এত বেশি শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে যে ওই লক যখন খুলবে, তখন এক শক্তিশালী ভূমিকম্প হবে, যা বাংলাদেশের জন্যও বিপর্যয়কর হবে। আমাদের দেশের কয়েকজন ভূবিজ্ঞানীও এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত।
এই গবেষণার ফলাফল আমাদের দেশের মতোই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী মহলেও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। কারণ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে, একটি মাত্র মডেলের ওপর ভিত্তি করে করা কোনো গবেষণার ফলাফল থেকে এত বড় একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় না।
তা ছাড়া ঢাকার তলদেশ দিয়ে যে চ্যুতিরেখাটি তাঁরা টেনেছেন, সেটি একটানা অভিন্ন কোনো ভূ-চ্যুতি নয়। মানুষ যত দিন থেকে পৃথিবীতে ভূমিকম্পের সঙ্গে পরিচিত, তত দিনের মধ্যে, অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ওই চ্যুতি কোনো ভূমিকম্পের উৎস হয়েছে বলে তথ্য-প্রমাণ নেই।
মাইকেল স্টেকলার বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্ব ভারত ও বার্মিজ রেঞ্জে দুটি টেকটোনিক প্লেটের বাউন্ডারিতে যে লকের কথা বলেছেন, সেটিও মিয়ানমারের অনেক ভেতরে। সেখানে সৃষ্ট ভূমিকম্প বাংলাদেশের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম।
বিশেষজ্ঞদের এহেন বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণেই বোধ হয় স্টেকলার তাঁর গবেষণার ফলাফল কিছুটা সংশোধন করেছেন। সেই সংশোধনীর সংক্ষিপ্তসারে (অ্যাবস্ট্রাক্ট) বলা হয়েছে, তাঁদের প্রাপ্ত চ্যুতিতে সর্বোচ্চ ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ২ মাত্রার কথা। এটি কি দ্বিচারিতা, নাকি আরেকটি ভুল, সে প্রশ্নও উঠেছে।
প্রসঙ্গত, রজার বিলহাম নামের আরেক আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ ও গবেষক হিমালয় অঞ্চলে ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান প্লেট বাউন্ডারিতে স্টেকলারের মতোই একটি লক (হিমালয়ান লক) আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর গবেষণার ফলাফলেও দেখানো হয়েছিল, ওই লকের ফলে ওই অঞ্চলে প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে।
ভারত সরকারের নির্দেশে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিয়ে নিবিড় সমীক্ষা ও অনুসন্ধান চালানোর পর রজার বিলহামের গবেষণার ফলাফলকে অতিরঞ্জিত ও অনেকটাই ভিত্তিহীন বলে অভিমত দেন। তার ভিত্তিতে ভারত সরকার তৎক্ষণাৎ রজার বিলহামের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়।
চার. গত ১০-১২ বছরে ঢাকার আশপাশে ৩ থেকে সাড়ে ৫ মাত্রার অন্তত ৮টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন ঘন এসব ছোট ও মাঝারি ভূমিকম্প কী বার্তা দেয়? মোটামুটি চারটি বার্তা দেয় বলা যায়।
প্রথম বার্তা হচ্ছে, এই অঞ্চলে ‘টেকটোনিক অ্যাকটিভিটি’ বৃদ্ধি পেয়েছে। সব সময় সব অঞ্চলে এই অ্যাকটিভিটি সমান থাকে না। দ্বিতীয় বার্তা হচ্ছে, ছোট ও মাঝারি শক্তির এসব ভূমিকম্পের ফলে ভূগর্ভে সঞ্চিত শক্তি বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে বেশি শক্তি সঞ্চিত হয়ে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কমছে। তৃতীয় বার্তাটি হচ্ছে, ঢাকার আশপাশে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো কোনো সক্রিয় ভূ-চ্যুতি নেই। চতুর্থ বার্তা হচ্ছে, আমরা যদি বিদ্যমান বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করি, তাহলে এই ভূমিকম্পগুলো এবং প্রতিবেশী দেশের বিপজ্জনক ভূ-চ্যুতিতে সৃষ্ট বড় ভূমিকম্পও আমাদের জন্য বিপর্যয়কর হবে না।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত বলে ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ছোট-বড় অনেক ভূমিকম্পের সাক্ষ্য বহন করছে। দেশের অভ্যন্তরের ভূ-চ্যুতি (জিওলজিক্যাল ফল্ট) থেকে এখানে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির ইতিহাস আছে।
১৬ মে ২০২৩‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত বলে ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ছোট-বড় অনেক ভূমিকম্পের সাক্ষ্য বহন করছে। দেশের অভ্যন্তরের ভূ-চ্যুতি (জিওলজিক্যাল ফল্ট) থেকে এখানে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির ইতিহাস আছে।
১৬ মে ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত বলে ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ছোট-বড় অনেক ভূমিকম্পের সাক্ষ্য বহন করছে। দেশের অভ্যন্তরের ভূ-চ্যুতি (জিওলজিক্যাল ফল্ট) থেকে এখানে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির ইতিহাস আছে।
১৬ মে ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত বলে ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ছোট-বড় অনেক ভূমিকম্পের সাক্ষ্য বহন করছে। দেশের অভ্যন্তরের ভূ-চ্যুতি (জিওলজিক্যাল ফল্ট) থেকে এখানে বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির ইতিহাস আছে।
১৬ মে ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৫ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫