Ajker Patrika

ভাটায় দেদার পুড়ছে কাঠ

গোলাম কবির বিলু, পীরগঞ্জ
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৪০
ভাটায় দেদার পুড়ছে কাঠ

পীরগঞ্জের অর্ধশতাধিক ইটভাটায় দেদার পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা করার পর ভাটামালিকেরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। আর অভিযান হবে না, এমন ধারণা থেকে এবং কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা জ্বালানির জন্য গাছের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।

উপজেলায় সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী মাত্র পাঁচ থেকে ছয়টি অটো ইটভাটা রয়েছে। সেই সঙ্গে ৪৭টি স্থায়ী চিমনি ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। বেশ কিছু চিমনির ভাটার মালিক পরিবেশ অধিদপ্তরের হাত থেকে বাঁচতে হাইকোর্টে রিট করে ইট তৈরি অব্যাহত রেখেছেন। বাকিগুলো পুরোপুরি অবৈধভাবে চলছে।

সরেজমিনে ইটভাটাগুলোর কোথাও জ্বালানির কয়লা চোখে পড়েনি। শুধু গাছপালা আর বাঁশের গোড়ার অংশ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। ভাটামালিকেরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ আইন মানছেন না। দেদারসে গাছ পোড়ানোর কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।

সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (সিনিয়র সহকারী সচিব) রাজিব মাহমুদ মিঠুনের নেতৃত্বে পীরগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আটটি ভাটাকে ৩১ লাখ টাকা জরিমানা এবং তিনটি ভাটা ভেঙে দেওয়া হয়। এরপরই ভাটামালিকেরা নির্ভয়ে কাঠ পোড়াচ্ছেন। কারণ, এ বছর আর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা নাও হতে পারে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মালিক জানিয়েছেন। তাই ভয়হীন পরিবেশে ভাটা ব্যবসায়ীরা কাঠ পোড়াচ্ছেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওই অভিযানে কুমেদপুর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুরে আব্দুস সালাম মিয়ার মালিকানাধীন ‘এসএফবি’ ব্র্যান্ডের দুটি ভাটায় ৮ লাখ এবং ফারুক মিয়ার ‘এমএফএম’ ব্র্যান্ডের একটি ভাটায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তারপরও তাঁরা ভাটা এলাকায় হাজারো মণ কাঠ মজুত করে রেখেছেন। একই চিত্র উপজেলার বাকি সব ইটভাটায়।

অপরদিকে জরিমানায় দেওয়া টাকা পুষিয়ে নিতে ভাটামালিকেরা বাড়িয়ে দিয়েছেন ইটের মূল্য। এবার মৌসুমের শুরুতেই প্রতি হাজার ইট ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এ সময় প্রতি হাজার ইট ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে ইটভাটার মালিক আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, ‘এবার প্রতি টন কয়লা ২১ হাজার টাকা করায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছি। গত বছর প্রতি টন কয়লার মূল্য ছিল প্রায় ১০ হাজার টাকা। আর হাতের কাছেই কাঠ খড়ি পাওয়া যাওয়ায় তা দিয়ে ইট পুড়তে সমস্যা কম।’

উপজেলা ভাটামালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, এ বছর ভাটাগুলোতে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে বলে বিভিন্ন এলাকা থেকে সচেতন মানুষজন জানিয়েছেন। এ উপজেলায় মাত্র চার থেকে পাঁচটি ভাটার বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। কিছু ভাটার মালিক হাইকোর্টে রিট করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিধির বাইরে এবার আরও দুটি নতুন ভাটা করা হয়েছে। উন্নয়নকাজের জন্য ইট তৈরি করা দরকার। তবে তা বিধি অনুযায়ী হওয়া চাই।

এ বিষয়ে রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মেজ-বাবুল আলম জানান, জরিমানা করার পর অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর কাঠ পোড়ানো বন্ধে অভিযান চলমান থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির পদযাত্রা উপলক্ষে ‘স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত’, প্রধান শিক্ষকের দুই রকম বক্তব্য

লজ্জায় ধর্ষণের শিকার মায়ের আত্মহত্যা: ৮ বছরের মেয়েটি যাবে কোথায়

হিন্দু মন্দির নিয়ে কেন সংঘাতে জড়াল বৌদ্ধ-অধ্যুষিত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া

বলিদান ও শয়তান পূজার বুদ্ধি দিল চ্যাটজিপিটি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মহড়া শুরু, চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত