Ajker Patrika

‘মেশিন নষ্ট ৪ বছর, রোগী এলে বলি বাইরে যান’

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
‘মেশিন নষ্ট ৪ বছর, রোগী এলে বলি বাইরে যান’

‘চার বছর ধরে এক্স-রে মেশিন নষ্ট। তাই কোনো কাজ নেই। রুমে বসে অবসর সময় পার করছি। রোগী এলে বলি মেশিন নষ্ট, বাইরে যান। এ কথা বলাই আমার কাজ। তা ছাড়া এখানে আমার কোনো কাজ নেই।’ কথাগুলো বলেন গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টেকনিশিয়ান। 
১০০ শয্যাবিশিষ্ট গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে চার বছর ধরে একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এতে সুবিধা নিচ্ছে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। অনেক দিনেও মেশিনটি ঠিক না করায় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় ও ভোগান্তি পোহাচ্ছে লাখো চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশী। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিও কোনো সাড়া মিলছে না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার রোগী সেবা নেয়। প্রতিদিন এক্স-রে করার প্রয়োজন পড়ে অনেক রোগীর। হাসপাতালে প্রতিটি এক্স-রের খরচ পড়ে ১২০ টাকা। কিন্তু চার বছর ধরে এক্স-রে মেশিনটি বিকল থাকায় অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হচ্ছে রোগীদের।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের নিচতলায় এক্স-রে কক্ষটি খোলা, সেখানে অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিনটি বসানো। কিন্তু কক্ষে কোনো রোগী নেই। পা ভেঙে যাওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন সদর উপজেলার বোয়ালী গ্রামের হোসেন আলী। তিনি জানান, চিকিৎসক তাঁকে এক্স-রে করার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে এক্স-রে হয় না। ফলে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ৪০০ টাকা দিয়ে এক্স-রে করান।

সদর উপজেলার হাটগাড়ি গ্রামের আমেনা বেওয়া জানান, অনেক দিন ধরে বুকে ব্যথা। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। চিকিৎসক বুকের এক্স-রে করাতে পরামর্শ দেন। হাসপাতালের নিজস্ব প্যাথলজি বিভাগে গিয়ে দেখেন, এক্স-রে মেশিনের কক্ষে লোক আছে। ওই ব্যক্তি তাঁকে মেশিন নষ্ট বলে জানান। অন্য জায়গা থেকে এক্স-রে করে প্রতিবেদন আনার কথা বলেন। পরে ৩৮০ টাকা দিয়ে বাইরে থেকে এক্স-রে করান।

এ বিষয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক রাজিউল মজিদ বলেন, হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন আছে। সেটি অকেজো হয়ে আছে। তাই রোগীদের বাইরে থেকে এক্স-রে করতে বলা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক চিকিৎসক বলেন, ‘বাইরে বিভিন্ন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক থেকে রোগীরা যেসব এক্স-রে প্রতিবেদন করিয়ে নিয়ে আনছে, সেগুলোর ফিল্ম বেশির ভাগই অস্পষ্ট। রোগ নির্ণয় করতে আমাদেরও অসুবিধা হচ্ছে। উন্নত এক্স-রে মেশিন না হওয়ার কারণেও এটা হতে পারে। ফলে সেসব প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না।’

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. মাহবুব হোসেন জানান, এক্স-রে মেশিনটি অনেক দিন ধরে অকেজো। রোগীদের একটু সমস্যা হচ্ছে। তাদের কথা মাথায় রেখেই এটি মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তরে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক দিন আগে ঢাকা থেকে যান্ত্রিক শাখার লোকজন এসেছিলেন। তাঁরা মেশিনটি দেখে জানিয়েছেন, মেশিনটি যে কোম্পানি থেকে কেনা, সেই কোম্পানি এখন উধাও। ফলে এটি মেরামত করা সম্ভব নয়। বিষয়টি অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত