Ajker Patrika

১২০০ লাইসেন্স আটকে রেখেছেন জাহাঙ্গীর

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১০: ১০
১২০০ লাইসেন্স আটকে রেখেছেন জাহাঙ্গীর

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দায়িত্ব নেওয়ার পর ১ হাজার ২০০ ঠিকাদারের লাইসেন্স নবায়ন করেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ঠিকাদারদের অভিযোগ, নিজের পছন্দমতো ঠিকাদারদের উন্নয়নকাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য স্বল্পসংখ্যক ঠিকাদারকে লাইসেন্স দিয়েছেন। অনেক পুরোনো ঠিকাদার কাজ সম্পন্ন করে দিনের পর দিন ঘুরেও বিল না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের একসময়ের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মৌসুমী ট্রেডার্সের মালিক আব্দুস ছাত্তার বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ তালিকাভুক্ত ঠিকাদার রয়েছেন। গত তিন বছরে ওই সব ঠিকাদারের প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স নবায়ন করে দেওয়া হয়নি।

আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘মেয়রের ভাই, আমিনুল, খোরশেদ এ রকম ১২-১৩টি ফার্ম তিন বছর ধরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়নকাজ করে। এখন আমাদের ফার্মগুলো যদি নবায়ন করে তাহলে আমাদের কাজ দিতে হবে। দরপত্র ছাড়তে হবে। কিন্তু তারা তা না করে কোটেশন দেখিয়ে বিল তোলেন।’

ঠিকাদার ছাত্তার বলেন, ‘একটি লাইসেন্স নবায়নে প্রতিবছর ২ হাজার টাকা আয় হতো। সে হিসাবে করপোরেশন প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অপরদিকে, প্রাক-যোগ্যতা নেই এমন নতুন ফার্ম কাজ পেয়েছে। আমার সব কাগজপত্র রয়েছে। সচিবালয়, গাজীপুরে দুই মন্ত্রী ও ডিসি সাহেবসহ ডাক মারফত অনেককে জানিয়েছি। আমরাও এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সরকারি আইনে তাঁর নামে বহু মামলা হবে।’

একই রকম অভিযোগ করেন মেসার্স মাসুদ কনস্ট্রাকশনের ঠিকাদার শেখ মো. মাসুদ বলেন, সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার হয়েও গত তিন বছর লাইসেন্স নবায়ন করতে পারেননি। মেয়র জাহাঙ্গীর নতুন করে লাইসেন্স করে দিয়েছেন, কিন্তু পুরোনো লাইসেন্সের নবায়ন করেননি।

আনিকা ট্রেডার্সের মালিক আইনুদ্দীন তালুকদার বলেন, ‘সিটি করপোরেশন ৭০০ কিলোমিটার রাস্তা করেছে। তাঁদের আমার মতো স্থানীয় ঠিকাদারেরা চেনেন না। প্রতি ঈদে দুবার কাজের বিল দেওয়া হয়। আমরা বকেয়া বিলের টাকা ওঠাতে গেলে দেখি যাঁরা বিল নিতে আসেন, তাঁরা অপরিচিত। মেয়র তাঁর লোকদের মাধ্যমে কোটেশন দিয়ে কাজ সম্পন্ন করেন।’

আইনুদ্দীন তালুকদার আরও বলেন, ‘মেয়রের গ্রাম কানাইয়ার আমিনুল, পারফেক্ট ইঞ্জিনিয়ারের মনির, রুবেল, রানা মোল্লা, আমানউল্লাহ তাঁদের মাধ্যমে মেয়র কাজ করেছেন। আমাকেও অফার দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়র টাকা নিয়ে ভালোভাবে ফেরত দেওয়ার ঘটনা নাই। তাই আমি তাঁদের অফারের ঝুঁকি নিইনি। তিন বছর সিটি করপোরেশনের কাজ না পেয়ে এলজিইডি, পিআইওসহ বিভিন্ন থানার কাজ করছি।’

এ ঠিকাদার বলেন, ‘সিটির নাগরিক হয়েও কাজ করতে পারিনি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বিলের টাকা বকেয়া রয়েছে। এখনো পাইনি। একটি কাজের বিল জমা দিয়ে ২৮ লাখ টাকার চেক আমাকে দিয়ে পরে আবার তা ফেরত নিয়ে গেছে।’

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আজকে আমি বেকায়দায় পড়েছি, তাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করা হচ্ছে। আমার পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি না এসে বা কারও ফাইল আমার পর্যন্ত না এনে যদি আমাকে দোষারোপ করে, তাহলে আমি কী বলব? কেউ আমার কাছে ফাইল দেওয়ার পর সেটা আমি ফেরত পাঠিয়েছি, এমন ঘটনা কেউ বলতে পারবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত