Ajker Patrika

সিরাজগঞ্জ-২: এবার লড়াইটা হবে হাড্ডাহাড্ডি

শরীফুল ইসলাম ইন্না, সিরাজগঞ্জ 
Thumbnail image

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জ জেলা। তাঁতশিল্পসমৃদ্ধ এই জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে সিরাজগঞ্জ-২ (কামারখন্দ ও সদর উপজেলা) আসনটি সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। জেলার রাজনীতি এখান থেকে নিয়ন্ত্রিত হয় বলে আলাদা নজরে থাকে আসনটি। আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী হলেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে ব্যস্ত। শত শত মামলার আসামি দলটির নেতা-কর্মীরা। একসময় জাতীয় পার্টি ভালো অবস্থানে থাকলেও এখন অনেকটা নিষ্প্রভ।

দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী থাকলেও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হোসেন আলী হাসান, সিরাজগঞ্জ পৌর মেয়র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা।

বিএনপিতে এগিয়ে আছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। কোনো কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ না নিলে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন তাঁর স্ত্রী জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ। জাতীয় পার্টি থেকে দলটির জেলা কমিটির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম ঝন্টু এবং জামায়াতে ইসলামী থেকে জেলা কমিটির সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম মনোনয়ন চাইতে পারেন।

এই আসনে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদকে পরাজিত করে তিনি পুনরায় এমপি হন। হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি হওয়ার পর থেকে সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগ আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দাবি করছেন, সিরাজগঞ্জ শহর উন্নয়নে অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নার ব্যাপক অবদান রয়েছে।

হাবিবে মিল্লাত মুন্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিরাজগঞ্জের মানুষ বিএনপিকে ভোট না দিয়ে আমাকে বারবার নির্বাচিত করেছেন। আগামী নির্বাচনেও তাঁরা আমাকে বিজয়ী করবেন।’

আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি প্রয়াত রাজনীতিবিদ মোতাহার হোসেন তালুকদারের পুত্রবধূ। তিনি বলেন, ‘আমার শ্বশুর ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত ঘনিষ্ঠ। প্রধানমন্ত্রী আমার সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন। এ কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু সেবার ষড়যন্ত্র করে হারানো হয়েছিল।’

এই আসনে বিএনপির এখন পর্যন্ত একক প্রার্থী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি জেলা বিএনপির রাজনীতি একক হাতে নিয়ন্ত্রণ করেন। দুঃসময়ে নেতা-কর্মীদের পাশে থাকায় তাঁদের কাছে তিনি প্রাণশক্তি। পাশাপাশি মামলা ও গ্রেপ্তার করা নেতা-কর্মীদের জামিনের ব্যবস্থা করেন। বিপদগ্রস্ত নেতা-কর্মীদের খোঁজখবর রাখেন। সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এই আসনে লড়াই জমে উঠবে। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর পাশাপাশি তাঁর সহধর্মিণী জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ কেন্দ্রীয় সব কর্মসূচিসহ সভা, সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোনো কারণে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে রুমানা মাহমুদ নির্বাচন করবেন।

জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান বলেন, ‘এ মুহূর্তে বিএনপি নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এটি কেন্দ্রীয় নেতারা বারবার বলেছেন। নির্বাচনে গেলে একক প্রার্থী হবেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটে পরাজিত হবেন।’

জামায়াতের জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি। তবে জোটগত কোনো সমঝোতা হলে সেটা ভিন্নকথা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত