Ajker Patrika

পাহাড়ে আনন্দের আমেজ

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ০৮: ৫৭
পাহাড়ে আনন্দের আমেজ

বৈসাবি ঘিরে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার পরিবেশ। ১৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে পাহাড়িদের প্রধান এই সামাজিক উৎসব। এ উপলক্ষে চলতি মাসের প্রথম দিন; কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারও আগে থেকেই পাহাড়ি জনপদে শুরু হয়েছে উদ্‌যাপনের আনুষ্ঠানিকতা। ঘরে ঘরে চলছে বাংলা বর্ষবিদায় ও নতুন বর্ষবরণের প্রস্তুতি। নাচ-গান আর ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিরাজ করছে আনন্দের আমেজ।

পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসুক, সাংগ্রাই এবং বিজু বা বিষু বিহু। বৈসাবি নামে কোনো উৎসব না থাকলেও সব সম্প্রদায়ের উৎসবের নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে সংক্ষেপে একে বৈসাবি বলা হয়।

বাংলার বর্ষবিদায় ও নববর্ষ বরণকে কেন্দ্র করে পাহাড়িরা ১৫ দিনব্যাপী উৎসব করে থাকে। মূল উৎসব হয় ৩০ চৈত্র বা ১৩ এপ্রিল। পরের দিন পয়লা বৈশাখ বা ১৪ এপ্রিলেও উৎসব করেন পাহাড়িরা। মূল উৎসবের আগের দিন ২৯ চৈত্র পানিতে ফুল ভাসিয়ে দিয়ে পুরোনো বছরকে বিদায় জানানো হয়। এ আয়োজনকে বলা হয় ফুল বিজু। এদিন ভোরে ফুল তোলে সকালে নদীতীরে জড়ো হন সব বয়সী নারী-পুরুষ। নদীতে ফুল ভাসিয়ে পুরোনো বছরের সব গ্লানি মুছে নতুন বছরের সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধির প্রত্যাশা করেন তাঁরা।

৩০ চৈত্র পাহাড়িদের ঘরে ঘরে হরেক রকম সবজি দিয়ে রান্না হয় পাজন নামে বিশেষ এক পদ। এটি বিজুর অন্যতম আকর্ষণ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, বিজুর দিন সাতটি ঘরে পাজন খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। সঙ্গে থাকে বাহারি সব পিঠার আয়োজন। এদিন পাহাড়িদের ঘরে ঘরে অতিথি আপ্যায়ন হয়। ঘরের দুয়ার উন্মুক্ত থাকে সবার জন্য। বিজুর দিনে প্রাপ্তবয়স্ক অতিথিদের পরিবেশন করা হয় জগরা নামক ঘরোয়া পানীয় দিয়ে।

পয়লা বৈশাখকে চাকমারা বলেন গজ্জাপজ্যা। মারমা সম্প্রদায়ের কাছে দিনটি সাংগ্রাই। আর ত্রিপুরারা দিনটি উদ্‌যাপন করেন বিসিকাতাল নামে। এদিন পুরোহিতের মাধ্যমে সূত্রপাঠ করে ঘর পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি আত্মশুদ্ধিও করেন পাহাড়িরা।

রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক রুনেল চাকমা বলেন, বৈসাবি এলে পাহাড়ের গ্রামগুলোতে আনন্দের বান ডাকে। এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানান আয়োজন করে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের মতো এ বছর রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইনস্টিটিউট ৫ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। এতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজ নিজ কৃষ্টি ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে।

চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, ‘পাহাড়ের আদিবাসীরা শত শত বছর ধরে এ সংস্কৃতি লালনপালন করে আসছেন। তাঁরা শুধু বর্ষবরণ নয়, বর্ষবিদায়কেও বেশ গুরুত্ব দেন। পুরোনো বছর থেকে যে অর্জন, যে সফলতা তা গ্রহণ করে, পাশাপাশি পুরোনো বছরের যত দুঃখ-কষ্ট-গ্লানি থাকে সেগুলো মুছে ফেলে সুন্দর নতুন দিনের প্রত্যাশা করেন তাঁরা। এ উৎসব বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত