মোস্তাকিমের মৃত্যুর দায় কার?

পুত্র শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছেন বাবা-মা। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তাঁরা। মাত্র ১৩ বছরের কিশোর পুত্রের অকাল মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলায় ছেলে মোস্তাকিম মিয়ার (১৩) মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন পিতা দুলাল মিয়া।

উপজেলার গুজিখা গ্রামে সরেজমিনে গতকাল রোববার দেখা যায়, স্কুলছাত্র মোস্তাকিমের মৃত্যুতে এলাকায় চলছে শোকের মাতম। বাবা দুলাল মিয়া শয্যাশায়ী। মা নাসিমা খাতুন বিলাপ করে চলেছেন। এ মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না কেউ।

এদিকে যে পুকুরে নেমে বিদ্যুতায়িত হয়ে মোস্তাকিম মারা গেছে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুতের তার পুকুর ও পাশের ধানের জমিতে ঝুলে রয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, চার দিন অতিবাহিত হলেও গৌরীপুর বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে কেউ যায়নি। সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও ছেঁড়া তার সরানো হয়নি।

মোস্তাকিমের বাবা দুলাল মিয়া বলেন, তাঁর ছেলের মৃত্যুর জন্য ‘বিদ্যুৎ অফিস’ দায়ী। তাদের অবহেলার কারণে মোস্তাকিমের মৃত্যু হয়েছে। যারা বিদ্যুৎ লাইনে কাজ করছিল, তাঁর যখন ছিঁড়ল, তখন তারা কী করছিল?

মোস্তাকিমের মা নাসিমা খাতুন ছেলের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাঁদের বিচার দাবি করেন।

রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল আমিন জনি বলেন, বিদ্যুতের চলমান কাজে প্রচুর অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার দিন রাতে ছেঁড়া তার মেরামতের জন্য ফোনে গৌরীপুর আবাসিক প্রকৌশলীকে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। তবে চার দিন অতিবাহিত হলেও তা মেরামত হয়নি।

উপজেলার আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. বিল্লাল হোসেন জানান, ঘটনার দিন সংবাদ পেয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। গুজিখা এলাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে। পুরোনো তার ও খুঁটি পাল্টে নতুন লাইন টানানো হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে মাছ ভাসতে দেখে পুকুরে নামে মোস্তাকিম। এ সময় পুকুরের পানিতে থাকা বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে বিদ্যুতায়িত হয় সে। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।