Ajker Patrika

গোখাদ্যের দাম বেড়েছে বেশি, দুধে কমেছে লাভ

বাকৃবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুন ২০২২, ১২: ৩৩
Thumbnail image

বাংলাদেশে গোখাদ্যের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানি নির্ভরতা টেকসই দুগ্ধ উৎপাদনের বড় অন্তরায় বলে গবেষণায় জানা গেছে। গত এক বছরে বাংলাদেশে টেকসই দুগ্ধ উৎপাদনের পরিবর্তনগুলোর ওপর গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

বিশ্ব দুগ্ধ দিবসে গতকাল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ইন্টিগ্রেটেড ডেইরি রিসার্চ নেটওয়ার্কের (আইডিআরএন) পক্ষ থেকে এই গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। বাকৃবির পশু পুষ্টি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহি উদ্দিন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনিসহ বাকৃবির কয়েকজন শিক্ষক এ গবেষণার সঙ্গে জড়িত।

ড. মহি উদ্দিন বলেন, আইডিআরএনের গবেষণায় দেখা গেছে, গত এক বছরে বাংলাদেশে দুধের দাম বেড়েছে গড়ে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। বাংলাদেশে যেখানে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে শতকরা ৫৪ শতাংশ, সেখানে বিশ্বের বাজারে দাম বেড়েছে মাত্র ২০ দশমিক ৬ শতাংশ। গত এক বছরে বাংলাদেশে বিশ্ব বাজারের তুলনায় শতকরা ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ হারে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দুধের দামের ওপর।

তিনি আরও বলেন, ‘গো-খাদ্য হিসেবে আমাদের দেশে সর্বাধিক ব্যবহৃত খাদ্য উপাদান হলো গমের ভুসি। গমের ভুসির পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত খাদ্য উপাদান ভুট্টা, সরিষার খৈল, ধানের কুড়া এবং সয়াবিন মিল। আর এসব খাদ্যের উপাদান বেশির ভাগই আসে আমদানি করার মাধ্যমে। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে ও সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপে অতিরিক্ত শুকনো মৌসুম হওয়ায় বিশ্বের যেসব দেশ থেকে এসব খাদ্য উপাদান আমদানি করা হয় সেসব দেশে গোখাদ্যে উপাদানের দাম বেড়েছে। আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় সেই মাত্রা আরও বেড়ে যায়। গত এক বছরে ভুট্টার দাম শতকরা ৯০ শতাংশ বেড়েছে। গমের ভুসির দাম বেড়েছে শতকরা ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ, সরিষার খৈল ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ, ধানের কুড়া ৩০ দশমিক ৩ শতাংশ এবং সয়াবিন মিল বেড়েছে ৬৪ দশমিক ৫ শতাংশ। অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির কারণেই দুগ্ধ খামারিদের লাভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

গোখাদ্যের অতিরিক্ত মূল্য বাড়ায় বাংলাদেশে দুগ্ধ উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কিছু পরামর্শও দেন আইডিআরএনের গবেষকেরা। তাঁরা বলেন, খামারিদের অতি উচ্চমূল্যের গমের ভুসি ও অন্যান্য দামি উপাদানের বিকল্প হিসেবে হাতের কাছে পাওয়া যায় এমন সস্তা উপাদান আদর্শ খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে গমের ভুসির পরিবর্তে কচি নেপিয়ারের ও ভুট্টার ঘাসের সঙ্গে অন্যান্য খাবার দিতে পারলে বর্তমান সমস্যা বহুমাত্রায় কমানো সম্ভব। তা ছাড়া সাধারণ খড় ব্যবহারের পরিবর্তে ইউরিয়াযুক্ত খড় ও বেইল খড় ব্যবহার করা যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত