ড. আর এম দেবনাথ

কোটা সংস্কার আন্দোলনের কি পরিসমাপ্তি হলো, নাকি এর জের চলতেই থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। সোমবার যখন এ লেখা লিখছি, তখনো কারফিউ চলছে। অফিস-আদালত, মিল-ফ্যাক্টরি বন্ধ। রেল চলাচল স্থগিত। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত। ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত। হোটেল, রেস্তোরাঁ, পর্যটন, পরিবহন ব্যবসা, তৈরি পোশাক কারখানা, অর্থনীতির অনানুষ্ঠানিক (ইনফরমাল) খাত অচল, বন্ধ। এককথায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে অন্য কোথায় কী হলো, তা যেমন একটি বিবেচ্য বিষয়, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে অর্থনীতি। অর্থনীতি বিধ্বস্ত। দৈনিক ক্ষতির পরিমাণ শত শত নয়, হাজার হাজার কোটি টাকা।
এমনিতেই আমরা যাচ্ছি এক দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে। প্রথমেই চীনাগত করোনা মহামারি, এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদের কাহিল করে ফেলেছে। সর্বত্র মন্দা, বিশ্বে মন্দা, আমাদেরও মন্দা। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হ্রাসমান। আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায় স্থবিরতা। রেমিট্যান্স আসছে কম। ডলারের উচ্চমূল্য। আমদানিনির্ভর অর্থনীতি। অতএব সব পণ্যের মূল্যই ঊর্ধ্বগতি। কোটা সংস্কার বা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, তারপর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, পুলিশের গুলি, পুলিশকে গুলি, মৃত্যু, জ্বালাও-পোড়াও, বিটিভিসহ অসংখ্য সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ, কারফিউ—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অস্বস্তির, অস্থির।
আমরা জানি না এর শেষ কোথায়? যদিও আমাদের মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবির ভিত্তিতে সম্মানজনক একটি রায় দিয়েছেন। ৫৬ শতাংশ কোটার পরিবর্তে তা হবে এখন মাত্র ৭ শতাংশ। ৯৩ শতাংশ চাকরি হবে মেধার ভিত্তিতে। এই রায়ের পরও পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হলে তা হবে দুঃখজনক। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস চলছে; অর্থাৎ অর্থবছরের শুরুটাই হলো খারাপ, অস্বাভাবিক। গত অর্থবছরের ৫ দশমিক ৮২ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারের তুলনায় এবারের জন্য তা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির হার প্রাক্কলিত ৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কিন্তু বাজার এখন দ্বিগুণ চড়া। এক অনিশ্চয়তার মধ্যেই শুরু ২০২৪-২৫ অর্থবছর।
অনিশ্চয়তার মূলে কী? আমি করোনা মহামারি বা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলছি না। বলছি, এই মুহূর্তের অনিশ্চয়তার কারণ কী? দৃশ্যত কোটা সংস্কার আন্দোলন, যাকে শিক্ষার্থীরা মেধা বনাম কোটা আন্দোলন বলেও আখ্যায়িত করছেন। আবার দেখলাম কেউ কেউ একে বলছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। কী সে বৈষম্য? কী সে কোটা? সরকারি চাকরিতে। তাহলে কী দাঁড়াল? মূল বিষয়টি তাহলে চাকরি নয় কি? অর্থাৎ কর্মসংস্থান। চাকরি চাই। বেকারত্ব চাই না। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চাই। এই তো মূলকথা। এর চেয়ে ন্যায্য দাবি আর কী হতে পারে, যেখানে আমাদের সংবিধান অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এসব কখন সম্ভব? সম্ভব ক্রয়ক্ষমতা থাকলে। ক্রয়ক্ষমতা আসবে রোজগার থেকে। রোজগার হবে স্বকর্মসংস্থান থেকে, নয়তো সরকারি চাকরি থেকে, নয়তো বেসরকারি কর্মসংস্থান থেকে। এ কথা আমরা সবাই জানি, আমাদের কর্মসংস্থানের সিংহভাগ জোগান দেয় অনানুষ্ঠানিক খাত বা ইনফরমাল সেক্টর। এর অর্থ বেসরকারি উৎসেই আমাদের কর্মসংস্থান সবচেয়ে বেশি। কৃষি, কুটিরশিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে আছে স্বোপার্জিত খাত। সরকারি চাকরি সামান্য, তুলনামূলকভাবে কিছুই না। সব মিলিয়ে বড়জোর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হবে ১৫-১৮ লাখ। ১৭-১৮ কোটি লোকের দেশে এই সংখ্যা কিছুই না। কার্যত দুই-এক বছর পরপর কিছু চাকরির ব্যবস্থা হয়। তা–ও হাজারে হাজারে, লাখে লাখে নয়। সীমিতসংখ্যক পদে। দেখা যাচ্ছে এই সামান্য কয়টা চাকরির জন্য মেধার ভিত্তিতে ঢুকতে লাখ লাখ শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে। এ বিষয়টিই আমি বুঝতে অক্ষম। তাহলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাটাই হয়ে পড়েছে চাকরিমুখী? অথচ তা কিন্তু এই বাজার অর্থনীতির যুগে হওয়ার কথা এন্টারপ্রাইজমুখী। নিজেরা করে খাবে। কারণ, বাজার অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতই এক নম্বর। মেধা, যোগ্যতা, পরিশ্রম, দক্ষতা, প্রতিযোগিতার মধ্যে যে কেউ তার রোজগারের পথ বেছে নেবে। হবে সেলফ এমপ্লয়েড। শুধু সেলফ এমপ্লয়েড নয়, তারা অন্যদেরও চাকরির সুযোগ করে দেবে। নিজের পায়ে দাঁড়াবে। ধনীদের জন্য শ্রম না দিয়ে নিজেই শ্রম ও মেধা দ্বারা ধনী হবে এবং এটাই এখন ভীষণ দরকার।
একই সঙ্গে দরকার সাধারণ শিক্ষার বদলে কারিগরি শিক্ষার। দরকার কর্মমুখী শিক্ষার। তৈরি পোশাকশিল্পের বিভিন্ন প্রযুক্তিমূলক কাজ, মোবাইল মেরামত, মোটর মেকানিক, গাড়ি মেরামত, অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা, গ্রাফিকস, ফ্যাশনমূলক কাজ, সূচিকর্ম ইত্যাদি লোকের অভাব। গ্লাস ওয়ার্কার, দক্ষ কাঠমিস্ত্রি, ওয়েলডার, বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি, দক্ষ চালক ইত্যাদির অভাব বাজারে। বিপণনের লোক নেই, হিসাবরক্ষণের লোক নেই। ডায়িং, মার্চেন্ডাইজিংয়ের লোক নেই। ব্যবসায়ীরা, তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকেরা এসব কর্মী বিদেশ থেকে আনেন। ভীষণ অভাব এসবের। কাগজে দেখি, বিদেশে বেশির ভাগ লোক কারিগরি শিক্ষা নেন। জার্মানিতে ৭৩, জাপানে ৬৫, অস্ট্রেলিয়ায় ৬০, চীনে ৫৫ শতাংশ যুবক-যুবতী কারিগরি শিক্ষা পান।
আর আমাদের দেশে? আমাদের দেশে মাত্র ৪৫ শতাংশ। আমরা দেখছি, আমাদের দেশে শুধু সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে। হরেদরে বিবিএ, এমবিএ দেওয়া হচ্ছে। এমএ, এমকম, এমএসসিতে বাজার ভরপুর। তাঁরা চাকরি না পেয়ে ঘুরঘুর করছেন। তদবির করে বেড়াচ্ছেন। সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, সচিবদের পেছনে ঘুরছেন একটা চাকরির জন্য। যেকোনো মূল্যে। তাঁরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে প্রস্তুত। বাজারে গুজব, সব চাকরিতে ঘুষ দিতে হয়। কোটার চাকরিতে নয় কি? অসম্ভব ব্যাপার। সবাই পাগল সরকারি চাকরির জন্য। যেসব গ্র্যাজুয়েট বেরোচ্ছেন, তার বিরাট অংশই না জানে বাংলা, না জানে অঙ্ক, না জানে ইংরেজি। এসব খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়। সবারই নজর সরকারি চাকরিতে। এর একটা কারণও আছে। সরকারি চাকরি এখন আগের চেয়ে অনেক লোভনীয়। আগে বেসরকারি খাতের চাকরি ছিল লোভনীয়। বেতন-ভাতার সুযোগ-সুবিধা সেখানে বেশি ছিল। সরকারি চাকরিতে ছিল কম। গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরি হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজার চাকরি। বেতন-ভাতা অনেক, বোনাস অনেক, গাড়ির ভাতা অনেক। গৃহনির্মাণ ঋণের সুদ কম। আয়েশের চাকরি। এরপর পেনশন-আজীবন, তারপর ছেলেমেয়ে। দফায় দফায় পদোন্নতি, চাকরি যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। মফস্বলের চাকরিতে অফিসে না গেলেও চলে। বিপরীতে বেসরকারি চাকরিতে ঝুট-ঝামেলা অনেক বেশি। যখন-তখন চাকরি যায়, বেতন বাড়ে না, পদোন্নতি হয় না। টেনশনের পর টেনশন।
এ অবস্থায় যুবসমাজ, তরুণসমাজ, বিএ-এমএ-এমবিএ সমাজ এখন সরকারি চাকরিমুখী। অবস্থাটা এমন যে ডাক্তার, প্রকৌশলী পর্যন্ত এখন যার যার কর্মভূমি ছেড়ে বিসিএস সাধারণ ক্যাডারে যোগ দিচ্ছে। ৪০তম বিসিএস সাধারণ পরীক্ষায় নেওয়া হয় ৫৭৪ জন। তাঁদের মধ্যে ১৫৩ জন প্রকৌশলী, ডাক্তার ২৩ জন। ৪১তম বিসিএস সাধারণ ক্যাডারে নেওয়া হয় ৮১৬ জন। তাঁদের মধ্যে ১৯৫ জন প্রকৌশলী, ১৮ জন ডাক্তার। একই অবস্থা ৪৩তম বিসিএসের। এসব খবর জুন মাসের ২২ তারিখের একটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। এসব খবরের অর্থ কী?
কী কারণে প্রকৌশলী, ডাক্তাররা নিজ নিজ পেশা ছেড়ে বিসিএস সাধারণ ক্যাডারে আসছেন? কী মধু এখানে? এসব খুঁজে বের করা দরকার। সরকারি যেনতেন চাকরিও কেন এত আকর্ষণীয় হয়ে উঠল? কেন লাখ লাখ ছেলেমেয়ে দিনের পর দিন রাস্তায় আন্দোলন করছেন সরকারি চাকরিতে ঢোকার জন্য? এখানে যে চাকরির সুযোগ কম, এটা জেনেও তাঁরা ওই চাকরির জন্য কেন জান দিচ্ছেন?
অথচ আমরা সরকারি চাকরিরতদের কাছ থেকে মুহূর্তে কী ধরনের সেবা পাচ্ছি, তা সবাই জানি। কোনো সরকারি কাজই বিনা মূল্যে পাওয়া যায় না। এসবের কোনো ব্যাখ্যাও পাই না। বর্তমানে যারা সরকারি কাজে নিয়োজিত, তাঁদের কয়জন মেধায় ঢুকেছেন, কয়জন কোটায় ঢুকেছে—তা কেউ জানি না। কিন্তু জানি, কোনো সেবা আমরা বিনা মূল্যে পাই না। কীভাবে বুঝব, কে কে বেআইনি কাজ করছে? এসবেরই প্রতিকার দরকার। মেধায়ই হোক আর কোটাতেই হোক, সরকারি চাকরিতে যেন আর বেনজীর আহমেদ আমরা না পাই। কে এই ভরসা দেবে?
লেখক: সাবেক শিক্ষক, ঢাবি; অর্থনীতি বিশ্লেষক

কোটা সংস্কার আন্দোলনের কি পরিসমাপ্তি হলো, নাকি এর জের চলতেই থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। সোমবার যখন এ লেখা লিখছি, তখনো কারফিউ চলছে। অফিস-আদালত, মিল-ফ্যাক্টরি বন্ধ। রেল চলাচল স্থগিত। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত। ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত। হোটেল, রেস্তোরাঁ, পর্যটন, পরিবহন ব্যবসা, তৈরি পোশাক কারখানা, অর্থনীতির অনানুষ্ঠানিক (ইনফরমাল) খাত অচল, বন্ধ। এককথায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে অন্য কোথায় কী হলো, তা যেমন একটি বিবেচ্য বিষয়, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে অর্থনীতি। অর্থনীতি বিধ্বস্ত। দৈনিক ক্ষতির পরিমাণ শত শত নয়, হাজার হাজার কোটি টাকা।
এমনিতেই আমরা যাচ্ছি এক দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে। প্রথমেই চীনাগত করোনা মহামারি, এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদের কাহিল করে ফেলেছে। সর্বত্র মন্দা, বিশ্বে মন্দা, আমাদেরও মন্দা। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হ্রাসমান। আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায় স্থবিরতা। রেমিট্যান্স আসছে কম। ডলারের উচ্চমূল্য। আমদানিনির্ভর অর্থনীতি। অতএব সব পণ্যের মূল্যই ঊর্ধ্বগতি। কোটা সংস্কার বা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, তারপর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, পুলিশের গুলি, পুলিশকে গুলি, মৃত্যু, জ্বালাও-পোড়াও, বিটিভিসহ অসংখ্য সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ, কারফিউ—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অস্বস্তির, অস্থির।
আমরা জানি না এর শেষ কোথায়? যদিও আমাদের মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবির ভিত্তিতে সম্মানজনক একটি রায় দিয়েছেন। ৫৬ শতাংশ কোটার পরিবর্তে তা হবে এখন মাত্র ৭ শতাংশ। ৯৩ শতাংশ চাকরি হবে মেধার ভিত্তিতে। এই রায়ের পরও পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হলে তা হবে দুঃখজনক। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস চলছে; অর্থাৎ অর্থবছরের শুরুটাই হলো খারাপ, অস্বাভাবিক। গত অর্থবছরের ৫ দশমিক ৮২ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারের তুলনায় এবারের জন্য তা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির হার প্রাক্কলিত ৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কিন্তু বাজার এখন দ্বিগুণ চড়া। এক অনিশ্চয়তার মধ্যেই শুরু ২০২৪-২৫ অর্থবছর।
অনিশ্চয়তার মূলে কী? আমি করোনা মহামারি বা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলছি না। বলছি, এই মুহূর্তের অনিশ্চয়তার কারণ কী? দৃশ্যত কোটা সংস্কার আন্দোলন, যাকে শিক্ষার্থীরা মেধা বনাম কোটা আন্দোলন বলেও আখ্যায়িত করছেন। আবার দেখলাম কেউ কেউ একে বলছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। কী সে বৈষম্য? কী সে কোটা? সরকারি চাকরিতে। তাহলে কী দাঁড়াল? মূল বিষয়টি তাহলে চাকরি নয় কি? অর্থাৎ কর্মসংস্থান। চাকরি চাই। বেকারত্ব চাই না। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চাই। এই তো মূলকথা। এর চেয়ে ন্যায্য দাবি আর কী হতে পারে, যেখানে আমাদের সংবিধান অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এসব কখন সম্ভব? সম্ভব ক্রয়ক্ষমতা থাকলে। ক্রয়ক্ষমতা আসবে রোজগার থেকে। রোজগার হবে স্বকর্মসংস্থান থেকে, নয়তো সরকারি চাকরি থেকে, নয়তো বেসরকারি কর্মসংস্থান থেকে। এ কথা আমরা সবাই জানি, আমাদের কর্মসংস্থানের সিংহভাগ জোগান দেয় অনানুষ্ঠানিক খাত বা ইনফরমাল সেক্টর। এর অর্থ বেসরকারি উৎসেই আমাদের কর্মসংস্থান সবচেয়ে বেশি। কৃষি, কুটিরশিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে আছে স্বোপার্জিত খাত। সরকারি চাকরি সামান্য, তুলনামূলকভাবে কিছুই না। সব মিলিয়ে বড়জোর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হবে ১৫-১৮ লাখ। ১৭-১৮ কোটি লোকের দেশে এই সংখ্যা কিছুই না। কার্যত দুই-এক বছর পরপর কিছু চাকরির ব্যবস্থা হয়। তা–ও হাজারে হাজারে, লাখে লাখে নয়। সীমিতসংখ্যক পদে। দেখা যাচ্ছে এই সামান্য কয়টা চাকরির জন্য মেধার ভিত্তিতে ঢুকতে লাখ লাখ শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে। এ বিষয়টিই আমি বুঝতে অক্ষম। তাহলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাটাই হয়ে পড়েছে চাকরিমুখী? অথচ তা কিন্তু এই বাজার অর্থনীতির যুগে হওয়ার কথা এন্টারপ্রাইজমুখী। নিজেরা করে খাবে। কারণ, বাজার অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতই এক নম্বর। মেধা, যোগ্যতা, পরিশ্রম, দক্ষতা, প্রতিযোগিতার মধ্যে যে কেউ তার রোজগারের পথ বেছে নেবে। হবে সেলফ এমপ্লয়েড। শুধু সেলফ এমপ্লয়েড নয়, তারা অন্যদেরও চাকরির সুযোগ করে দেবে। নিজের পায়ে দাঁড়াবে। ধনীদের জন্য শ্রম না দিয়ে নিজেই শ্রম ও মেধা দ্বারা ধনী হবে এবং এটাই এখন ভীষণ দরকার।
একই সঙ্গে দরকার সাধারণ শিক্ষার বদলে কারিগরি শিক্ষার। দরকার কর্মমুখী শিক্ষার। তৈরি পোশাকশিল্পের বিভিন্ন প্রযুক্তিমূলক কাজ, মোবাইল মেরামত, মোটর মেকানিক, গাড়ি মেরামত, অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা, গ্রাফিকস, ফ্যাশনমূলক কাজ, সূচিকর্ম ইত্যাদি লোকের অভাব। গ্লাস ওয়ার্কার, দক্ষ কাঠমিস্ত্রি, ওয়েলডার, বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি, দক্ষ চালক ইত্যাদির অভাব বাজারে। বিপণনের লোক নেই, হিসাবরক্ষণের লোক নেই। ডায়িং, মার্চেন্ডাইজিংয়ের লোক নেই। ব্যবসায়ীরা, তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকেরা এসব কর্মী বিদেশ থেকে আনেন। ভীষণ অভাব এসবের। কাগজে দেখি, বিদেশে বেশির ভাগ লোক কারিগরি শিক্ষা নেন। জার্মানিতে ৭৩, জাপানে ৬৫, অস্ট্রেলিয়ায় ৬০, চীনে ৫৫ শতাংশ যুবক-যুবতী কারিগরি শিক্ষা পান।
আর আমাদের দেশে? আমাদের দেশে মাত্র ৪৫ শতাংশ। আমরা দেখছি, আমাদের দেশে শুধু সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে। হরেদরে বিবিএ, এমবিএ দেওয়া হচ্ছে। এমএ, এমকম, এমএসসিতে বাজার ভরপুর। তাঁরা চাকরি না পেয়ে ঘুরঘুর করছেন। তদবির করে বেড়াচ্ছেন। সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, সচিবদের পেছনে ঘুরছেন একটা চাকরির জন্য। যেকোনো মূল্যে। তাঁরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে প্রস্তুত। বাজারে গুজব, সব চাকরিতে ঘুষ দিতে হয়। কোটার চাকরিতে নয় কি? অসম্ভব ব্যাপার। সবাই পাগল সরকারি চাকরির জন্য। যেসব গ্র্যাজুয়েট বেরোচ্ছেন, তার বিরাট অংশই না জানে বাংলা, না জানে অঙ্ক, না জানে ইংরেজি। এসব খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়। সবারই নজর সরকারি চাকরিতে। এর একটা কারণও আছে। সরকারি চাকরি এখন আগের চেয়ে অনেক লোভনীয়। আগে বেসরকারি খাতের চাকরি ছিল লোভনীয়। বেতন-ভাতার সুযোগ-সুবিধা সেখানে বেশি ছিল। সরকারি চাকরিতে ছিল কম। গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরি হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজার চাকরি। বেতন-ভাতা অনেক, বোনাস অনেক, গাড়ির ভাতা অনেক। গৃহনির্মাণ ঋণের সুদ কম। আয়েশের চাকরি। এরপর পেনশন-আজীবন, তারপর ছেলেমেয়ে। দফায় দফায় পদোন্নতি, চাকরি যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। মফস্বলের চাকরিতে অফিসে না গেলেও চলে। বিপরীতে বেসরকারি চাকরিতে ঝুট-ঝামেলা অনেক বেশি। যখন-তখন চাকরি যায়, বেতন বাড়ে না, পদোন্নতি হয় না। টেনশনের পর টেনশন।
এ অবস্থায় যুবসমাজ, তরুণসমাজ, বিএ-এমএ-এমবিএ সমাজ এখন সরকারি চাকরিমুখী। অবস্থাটা এমন যে ডাক্তার, প্রকৌশলী পর্যন্ত এখন যার যার কর্মভূমি ছেড়ে বিসিএস সাধারণ ক্যাডারে যোগ দিচ্ছে। ৪০তম বিসিএস সাধারণ পরীক্ষায় নেওয়া হয় ৫৭৪ জন। তাঁদের মধ্যে ১৫৩ জন প্রকৌশলী, ডাক্তার ২৩ জন। ৪১তম বিসিএস সাধারণ ক্যাডারে নেওয়া হয় ৮১৬ জন। তাঁদের মধ্যে ১৯৫ জন প্রকৌশলী, ১৮ জন ডাক্তার। একই অবস্থা ৪৩তম বিসিএসের। এসব খবর জুন মাসের ২২ তারিখের একটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। এসব খবরের অর্থ কী?
কী কারণে প্রকৌশলী, ডাক্তাররা নিজ নিজ পেশা ছেড়ে বিসিএস সাধারণ ক্যাডারে আসছেন? কী মধু এখানে? এসব খুঁজে বের করা দরকার। সরকারি যেনতেন চাকরিও কেন এত আকর্ষণীয় হয়ে উঠল? কেন লাখ লাখ ছেলেমেয়ে দিনের পর দিন রাস্তায় আন্দোলন করছেন সরকারি চাকরিতে ঢোকার জন্য? এখানে যে চাকরির সুযোগ কম, এটা জেনেও তাঁরা ওই চাকরির জন্য কেন জান দিচ্ছেন?
অথচ আমরা সরকারি চাকরিরতদের কাছ থেকে মুহূর্তে কী ধরনের সেবা পাচ্ছি, তা সবাই জানি। কোনো সরকারি কাজই বিনা মূল্যে পাওয়া যায় না। এসবের কোনো ব্যাখ্যাও পাই না। বর্তমানে যারা সরকারি কাজে নিয়োজিত, তাঁদের কয়জন মেধায় ঢুকেছেন, কয়জন কোটায় ঢুকেছে—তা কেউ জানি না। কিন্তু জানি, কোনো সেবা আমরা বিনা মূল্যে পাই না। কীভাবে বুঝব, কে কে বেআইনি কাজ করছে? এসবেরই প্রতিকার দরকার। মেধায়ই হোক আর কোটাতেই হোক, সরকারি চাকরিতে যেন আর বেনজীর আহমেদ আমরা না পাই। কে এই ভরসা দেবে?
লেখক: সাবেক শিক্ষক, ঢাবি; অর্থনীতি বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের কি পরিসমাপ্তি হলো, নাকি এর জের চলতেই থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। সোমবার যখন এ লেখা লিখছি, তখনো কারফিউ চলছে। অফিস-আদালত, মিল-ফ্যাক্টরি বন্ধ। রেল চলাচল স্থগিত। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত। ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি বিঘ
২৪ জুলাই ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

কোটা সংস্কার আন্দোলনের কি পরিসমাপ্তি হলো, নাকি এর জের চলতেই থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। সোমবার যখন এ লেখা লিখছি, তখনো কারফিউ চলছে। অফিস-আদালত, মিল-ফ্যাক্টরি বন্ধ। রেল চলাচল স্থগিত। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত। ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি বিঘ
২৪ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের কি পরিসমাপ্তি হলো, নাকি এর জের চলতেই থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। সোমবার যখন এ লেখা লিখছি, তখনো কারফিউ চলছে। অফিস-আদালত, মিল-ফ্যাক্টরি বন্ধ। রেল চলাচল স্থগিত। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত। ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি বিঘ
২৪ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের কি পরিসমাপ্তি হলো, নাকি এর জের চলতেই থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। সোমবার যখন এ লেখা লিখছি, তখনো কারফিউ চলছে। অফিস-আদালত, মিল-ফ্যাক্টরি বন্ধ। রেল চলাচল স্থগিত। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত। ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি বিঘ
২৪ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫