Ajker Patrika

ধানের বাজার হঠাৎ চড়া

মো. শফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
Thumbnail image

হাওরের সবচেয়ে বড় মোকাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে হঠাৎ চড়া হয়ে উঠেছে ধানের বাজার। উপজেলার মেঘনা নদীর বিওসি ঘাটে পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই হাটে চলতি সপ্তাহে বেড়েছে ধানের দাম। তবে চলতি মৌসুমে আমন ধান পুরোপুরি মোকামে না আসায় নতুন ধানের সরবরাহ কম। আবার সরকারি মূল্য বেঁধে দেওয়ায় দামও কিছুটা বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আগামী ১০ নভেম্বর থেকে সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহ শুরু হবে। এটিকে সামনে রেখে প্রতিদিন বেড়েই চলছে আশুগঞ্জ মোকামে ধানের দাম। ফলে চলতি আমন মৌসুমে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকার চলতি আমন মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে আট লাখ টন ধান ও চাল কিনবে। প্রতি কেজি চাল ৪২ ও ধান ২৮ টাকা দরে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে এবার পাঁচ লাখ টন চাল ও তিন লাখ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি চাল ৪২ টাকা ও ধান ২৮ টাকায় কেনা হবে। যদি গত বোরো মৌসুমে প্রতি কেজি ধান ২৭ টাকা ও চাল ৪০ টাকা দরে ক্রয় করেছিল সরকার।

গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানোর পর আবারও বেড়েছে ধানের দাম। তবে মিল মালিক আড়তদাররা বলছেন নতুন ধান বাজারে এখনো পুরোপুরি আসেনি। আর আসলেও পুরোনো ধানের দাম কমবে না।

জেলা মিল মালিক সমিতি জানিয়েছে, ধানের বাজারের সঙ্গে চালের বাজারের কোনো মিল নেই। ফলে সরকারিভাবে চালের মূল্যবৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে জেলা খাদ্য বিভাগ বলছে, কেউ যেন কৃত্রিমভাবে দাম না বাড়াতে পারে সে জন্য ধানের বাজার নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।

জানা যায়, চলতি সপ্তাহে আশুগঞ্জ ধানের মোকামে মণপ্রতি ২০ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর ফলে ধান থেকে চাল তৈরিতেও খরচ বাড়ছে। ফলে এবার আমন মৌসুমে সরকার নির্ধারিত দামে চাল সরবরাহ নিয়ে লোকসানের আশঙ্কা করছেন মিল মালিকেরা।

প্রতিদিন কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে বিওসি ঘাটে নিয়ে আসেন ব্যাপারীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তিন শতাধিক চালকলে ধানের জোগান দেয় এই ধানের মোকাম। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মোকামে ধান বেচাকেনা চলে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলার হাওরাঞ্চলে উৎপাদিত ধান বেচাকেনা হয় আশুগঞ্জে। শনিবার এই হাটে মোটা ধান ১ হাজার ১০০ টাকা ও চিকন ধান ১ হাজার ৪০০ টাকা বিক্রি হয়েছে।

তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি মো. বাবুল আহমেদ জানান, ধানের বাজারের সঙ্গে চালের বাজারের কোনো রকম মিল নাই। চালের মূল্য আরও বৃদ্ধি না করলে সরকারি গুদামে এবার চাল দেওয়া সম্ভব না। এই সময় তারা ধানের বাজার তদারকি বৃদ্ধির দাবি জানান।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাকারিয়া মুস্তফা জানান, খাদ্য বিভাগ থেকে ধানের বাজার নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। মূলত এখন ধানের মৌসুম না হওয়ায় হাটে ধানের সরবরাহ তুলনামূলক কম। সে জন্য বাজারদরে ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তারপরও আমরা মনিটরিং করছি, যাতে কেউ কৃত্রিমভাবে দাম না বাড়াতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত