Ajker Patrika

সেতু ভাঙা, সাঁকোয় পারাপার

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২২, ১২: ৪১
সেতু ভাঙা, সাঁকোয় পারাপার

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ড্যাইনেরপাড় এলাকায় বয়ে গেছে মালিঝি নদী। ছয় গ্রামের মানুষের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা ছিল কাঠের তৈরি সেতু। গত ৯ জুন পাহাড়ি ঢলের স্রোতের তোড়ে ভেঙে যাওয়া সেতুটি দেড় মাসেও সংস্কার করা হয়নি। এমন অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা।

এদিকে কাঠের সেতুটি ভেঙে পড়ায় এর পাশেই বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন স্থানীয়রা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন তাঁরা। স্থানীয়দের দাবি নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণের।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নে বয়ে যাওয়া মালিঝি নদীর ড্যাইনেরপাড় এলাকায় একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয়রা। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের থেকে বারবার আশ্বাস পেলেও সেখানে পাকা সেতু নির্মাণ হয়নি। পরে ২০২১ সালে এ স্থানে কাঠের সেতুটি তৈরি করে প্রশাসন।

মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের মো. আনছার আলী বলেন, সেতুটি ভেঙে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কিন্তু সংস্কার করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। এতে আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।’

‘পাশে তৈরি করা বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে নদী পার হচ্ছি। অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে আমাদের নদী পার হতে হচ্ছে।’ বলেন আনছার আলি।

স্থানীয়রা জানান, কাঠের সেতুটি দিয়ে মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের নয়াপাড়া, টাঙ্গারীপাড়া, বাতিয়াগাঁও, হাসলিগাঁও, কুরুলিয়াকান্দা ও ড্যাইনেরপাড়সহ ছয় গ্রামের মানুষ উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতেন। কিন্তু গত মাসে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সেতুটি ভেঙে যায়। এতে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বিশেষ করে কোমলমতি শিশু ও শিক্ষার্থীরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

ড্যাইনেরপাড় গ্রামের মো. আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমরা অনেক দিন থেকেই এখানে একটি পাকা সেতুর দাবি জানিয়েছি। গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ কমাতে স্থানীয় প্রশাসন গত বছর একটি কাঠের সেতু বানায়া দিছিল। এ সেতুর ওপর দিয়েই কোনোরকমে চলাচল করতেছিলাম আমরা। এবারের বন্যায় সেতুটা ভাইঙ্গা গেছে। এখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে ভয়ে ভয়ে নদী পাড় হইতে হয়।’

পথচারী মো. হাবেজ আলী ও মোহাম্মদ আলী জানান, ভাঙার প্রায় দুই মাসেও সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ জন্য তাঁরা নিজেরাই ভেঙে যাওয়া সেতুর পাশে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছেন।

তাঁরা আরও জানান, কোমলমতি শিশুরা এ সাঁকোতে পারাপার হতে পারে না। এলাকা থেকে কৃষিপণ্য ও গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে রয়েছেন কৃষকেরা।

মালিঝিকান্দা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক বলেন, এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। সেতুটি নির্মাণ করা হলে ছয় গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ কমবে।

সেতু নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডির) উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত