Ajker Patrika

বিপর্যস্ত জনজীবন, কষ্ট বেড়েছে শ্রমজীবীদের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৮: ৪৪
Thumbnail image

বৈশাখের শুরু থেকে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে পুড়ছে পুরো দেশ। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। কষ্ট বেড়েছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। অসুস্থতা থেকে বাঁচতে বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর: 

কুষ্টিয়া: সকালে সূর্যের আলো ফুটতেই গরম শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে গরমের প্রচণ্ডতা। তবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অসহ্য গরম থাকে। দুপুরের আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে সড়ক। বাতাস নেই। সন্ধ্যার পর অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে পরিবেশ, রাতেও থাকে ভ্যাপসা গরম। 

এদিকে প্রচণ্ড গরমে গ্রামাঞ্চলের ছোট নদী, খাল, জলাশয়  এবং গভীর নলকূপগুলোতে দেখা দিয়েছে পানির সংকট। এ ছাড়া কুষ্টিয়া শহরসংলগ্ন গড়াই নদে পানি না থাকায় এখন ধু ধু বালুচরে পরিণত। সহসা বৃষ্টি না হলে ভ্যাপসা গরমে আরও অস্বস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হবে। বেশ কয়েকজন জানান, দিনে কয়েকবার করে গোসল করেও স্বস্তি পাচ্ছেন না। অনেকে আবার মেঝেতেও বিছানা পেতেছেন। বৈশাখের তাপপ্রবাহে কুষ্টিয়াবাসী দিনভর শান্তি খুঁজেছেন শরবতের গ্লাস, পানির বোতল কিংবা শসার টুকরোয়। আবার টংঘরে 
চা খেতে এসেও অনেকে খুঁজেছেন খাওয়ার স্যালাইন। 

গামছায় ঘাম মুছতে মুছতে রিকশাচালক কালাম শেখ বলেন, ‘পরিবারে চারজন সদস্য। একটি সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা কিনেছি। চারজনের পেট ও কিস্তি তো আর গরম বোঝে না। গরমে প্যাসেঞ্জার পাওয়া যাচ্ছে না। গরিব মানুষকে সংগ্রাম করেই বেঁচে থাকতে হয়।’ এদিকে আবহাওয়ার এ বিরূপ পরিবর্তনে হাসপাতালে জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গরমে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার জানান, প্রচণ্ড গরমে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ জন্য গরমের সময় অসুস্থতা থেকে বাঁচতে নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা। 

কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন আর রশিদ জানান, গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় কুষ্টিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে ২৬ এপ্রিলের পর তাপমাত্রা কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। 

গোপালগঞ্জ: রিকশাচালক রহিম মোল্লা বলেন, ‘রইদে (রোদ) মুখের চামড়া পুইড়ে যাচ্ছে। গাড়ি চালানো যাচ্ছে না, গা চিটমিট করতিছে।কীভাবে যে চালাচ্ছি আল্লা (আল্লাহ) ছাড়া কেউ জানেন না। ইনকামও কুইমে গেছে। রোদির সময় মানুষ কম বেরোয়। সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

রংপুর: দুপুর ১২টা। সজোরে প্যাডেল চালিয়ে নগরীর হনুমানতলায় সড়কের পাশে রিশকা থামালেন সুবাস চন্দ্র। কোমরে থাকা গামছা বের করে মুখের ঘাম মুছে, ক্যাপ মাথায় বসে পড়লেন সিটে। কথা হলে তিনি বলেন, ‘কাঠ ফাটা রইদ, মাথা চিড়ি যাওছে। এক ঘণ্টা রিকশা চালানু, তা গরমে গাও সেদ্ধ হয়া যাওছে। আর পাওছু না জন্য ছায়াত দম নিবার দাঁড়ানো। রইদ-গরমে কয়দিন থাকি কামাই করির পাওছি না।’ 

বিরামপুর (দিনাজপুর): এদিকে অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের কারণে ঝরে পড়ছে লিচু ও আমের গুটি। গুটি রক্ষার জন্য কোথাও কোথাও চাষিরা কৃত্রিমভাবে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলে গত তিন দিনে তাপমাত্রা অনেকটা বেড়েছে। এখন আম ও লিচুর মৌসুম, তাপমাত্রা এভাবে বাড়তে থাকলে আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত