মহিউদ্দিন খান মোহন

দীর্ঘ এক দশক পর্দার অন্তরালে থাকার পর হঠাৎ করেই সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১০ জুন পূর্বঘোষণা অনুয়ায়ী তারা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করেছে। এর আগে তারা উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশের অনুমতি চাইলেও ডিএমপি কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। তখন তারা ঘোষণা করেছিল, সরকার অনুমতি না দিলে অনুমতি ছাড়াই সমাবেশ করবে। এ নিয়ে টান টান উত্তেজনা ছিল কয়েক দিন। কিন্তু সব শেষে জামায়াত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করার অনুমতি চাইলে ডিএমপি তা মঞ্জুর করে।
দশ বছর পর প্রকাশ্যে আসা জামায়াতের সমাবেশটি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রচুরসংখ্যক নেতা-কর্মী সেখানে সমবেত হয়েছিলেন। শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি, কারাদণ্ড এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলার পরেও যে দলটির কর্মীরা হতোদ্যম হয়ে পড়েননি, তার প্রমাণ মিলেছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সমাবেশে। সরকারের রোষানলে নিগৃহীত জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তিও যে এতটুকু কমেনি, তাও অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেছে। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে জামায়াত নিজেদের যে ফ্যাক্টরে পরিণত করতে পেরেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
জামায়াতকে নিয়ে প্রশ্ন আগেও ছিল, এখনো আছে। হয়তো ভবিষ্যতেও থাকবে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যে দেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন তা ইতিহাসের অংশ। লক্ষণীয় হলো, একাত্তরের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য জামায়াত এখন পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হলে জামায়াত পুনরায় রাজনীতির ময়দানে ফিরে আসার সুযোগ পায়।
ওই সময় সরকার ‘জামায়াত’ নামে দলের নিবন্ধন দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা মাওলানা আবদুর রহিমের নেতৃত্বে ‘ইসলামী ডেমোক্রেটিক লীগ’ (আইডিএল) নামে নিবন্ধন নিয়ে ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। পরে তারা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নামে দলকে সংগঠিত করে; যার ভারপ্রাপ্ত আমির করা হয় আব্বাস আলী খানকে। সেই থেকে জামায়াতে ইসলামী নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং শক্তি সঞ্চয়ের জন্য কখনো বিএনপির কাঁধে সওয়ার হয়েছে, কখনো আওয়ামী লীগের ছায়াসঙ্গী হয়েছে।
১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচন বিএনপি বয়কট করলেও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াত অংশ নিয়ে ১০টি আসন লাভ করে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে পায় ১৮টি আসন। ওই সংসদে থাকতেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের একধরনের সখ্য গড়ে ওঠে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হয়। যে কারণে ১৯৯৬-এর ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগ বয়কট করলে জামায়াতও তাদের অনুগামী হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার পর সে বছরের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে জামায়াত এককভাবে অংশ নেয়, আসন পায় মাত্র তিনটি। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে তারা বিএনপির সঙ্গে চারদলীয় ঐক্যজোটে সম্পৃক্ত হয়। সেই নির্বাচনে তারা ১৭টি আসন লাভ করে।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, বাংলাদেশের ভোটের রজনীতিতে জামায়াত নিজেদের ফ্যাক্টরে পরিণত করে নিতে সক্ষম হয়েছে। এটাকে তাদের সাফল্য না বলে উপায় কী। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এবং একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যায় সহায়তাকারী দলটি কীভাবে নতুন প্রজন্মের, বিশেষ করে যাদের জন্ম স্বাধীনতার পরে, তাদের দলভুক্ত করতে পারল, এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার! যা হোক, তাদের ভোটব্যাংকের বিষয়টি বিবেচনা করেই বিএনপি জামায়াতকে হাতছাড়া করতে চায়নি। কিন্তু এটা তাদের জন্য একসময় বুমেরাং হয়ে যায়।
জোটের নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি ক্রমান্বয়ে জামায়াতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে থাকে। সময়ে-সময়ে তারা প্রভাব বিস্তার করে বিএনপিকে দিয়ে নিজেদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করিয়ে নেয়। অনেকেরই স্মরণ থাকার কথা, ওয়ান-ইলেভেনের সময় সাবজেলে গিয়ে জামায়াতের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। যে সময়ে আইনজীবী ছাড়া আর কেউ বেগম জিয়ার সাক্ষাতের অনুমতি পেতেন না, সেই সময়ে জামায়াত নেতার অবলীলায় কারাগারে গিয়ে বৈঠক অনেক প্রশ্নেরই জন্ম দিয়েছিল।
মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে চারদলীয় জোটভুক্ত হয়ে জামায়াত বিএনপির ওপর সওয়ার হওয়ার পরে আর নামেনি। তাদের মন্ত্রণায় নিশ্চিত পরাজয় জেনেও বিএনপিকে ২০০৮-এর নির্বাচনে যেতে হয়েছে, আবার জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা সত্ত্বেও ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করতে হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দলটির কয়েকজন শীর্ষনেতার ফাঁসির পরেই।
কেননা, বিএনপি ওই সময় একরকম চুপচাপই ছিল। এ ছাড়া তাদের কোনো উপায়ও ছিল না। কেননা, সরকারি প্রচার-প্রোপাগান্ডায় ইতিমধ্যে জামায়াতের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে। তাই বিএনপি নিজেদের ভাবমূর্তির কথা মাথায় রেখেই ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি অবলম্বন করে। বিপদের সময় বন্ধুকে কাছে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয় জামায়াত। তারা ২০-দলীয় জোটে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
যদিও এখন পর্যন্ত ২০-দলীয় জোট ছাড়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি জামায়াত। তবে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে এটা অনুমান করা যায় যে ২০-দলীয় জোটে জামায়াতের সক্রিয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আর নেই।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও সমমনাদের দাবি ছিল ‘যুদ্ধাপরাধীদের দল’ হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু তা করা হয়নি। এ নিয়ে আদালতে মামলাও আছে। তবে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে। ফলে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের নেতারা ২০ দলের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির ‘ধানের শীষ’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নিবন্ধন বাতিল হলেও দল হিসেবে জামায়াতকে কেন নিষিদ্ধ করা হলো না—অনেকের মনেই এ প্রশ্ন রয়েছে। এটা কি কেবলই আইনি জটিলতার কারণে, নাকি রাজনৈতিক পাশা খেলাও আছে এর পেছনে, তা নিয়ে সচেতন মহলে গুঞ্জন রয়েছে অনেক দিন ধরেই। তবে রাজনৈতিক সচেতন মহল বলে আসছিল যে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে সরকার তথা আওয়ামী লীগ হাতের পাঁচ হারাতে চায়নি। প্রয়োজনে সময়মতো যাতে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায়, সে জন্যই দলটিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকার তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি।
এমন অবস্থায় হঠাৎ করে জামায়াতের মাঠে নামা সেই সন্দেহকেই অনেকখানি ভিত্তি দেয় বৈকি। এ বিষয়ে ১১ জুন আজকের পত্রিকার ‘তবে কি হিসাবে বদল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জামায়াতের বিষয়ে সরকারের অবস্থান নিয়ে বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতকে নিয়ে একটা কৌশলে এগোচ্ছে সরকার। প্রথমত, হতে পারে, নির্বাচনে অধিকসংখ্যক দলকে হাতে রাখা। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে জামায়াত যাতে সহিংস পথ বেছে না নেয়, সে বিষয়টি বিবেচনা করা। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই জামায়াতকে নিয়ে ভাবছে সরকার।’ এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশব্যাপী আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নি-সন্ত্রাস করতে বিএনপিই জামায়াতকে মাঠে নামিয়েছে।’ আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সরকার কেন জামায়াতের প্রতি নরম হলো, সেটা সরকারই জানে। সরকার এটা বলবে।’
রাজনীতির মাঠে জামায়াতে ইসলামীর প্রকাশ্যে মাঠে নামা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এটা কি আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের কোনো ছক, নাকি অন্য কোনো শক্তির পরিকল্পনার অংশ, তা এখনো পরিষ্কার নয়। অবশ্য এই কুয়াশা অচিরেই কেটে যাবে। আর তখনই বোঝা যাবে মঞ্চের সামনে জামায়াত, কিন্তু পেছনের সুতা কার হাতে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

দীর্ঘ এক দশক পর্দার অন্তরালে থাকার পর হঠাৎ করেই সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১০ জুন পূর্বঘোষণা অনুয়ায়ী তারা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করেছে। এর আগে তারা উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশের অনুমতি চাইলেও ডিএমপি কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। তখন তারা ঘোষণা করেছিল, সরকার অনুমতি না দিলে অনুমতি ছাড়াই সমাবেশ করবে। এ নিয়ে টান টান উত্তেজনা ছিল কয়েক দিন। কিন্তু সব শেষে জামায়াত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করার অনুমতি চাইলে ডিএমপি তা মঞ্জুর করে।
দশ বছর পর প্রকাশ্যে আসা জামায়াতের সমাবেশটি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রচুরসংখ্যক নেতা-কর্মী সেখানে সমবেত হয়েছিলেন। শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি, কারাদণ্ড এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলার পরেও যে দলটির কর্মীরা হতোদ্যম হয়ে পড়েননি, তার প্রমাণ মিলেছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সমাবেশে। সরকারের রোষানলে নিগৃহীত জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তিও যে এতটুকু কমেনি, তাও অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেছে। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে জামায়াত নিজেদের যে ফ্যাক্টরে পরিণত করতে পেরেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
জামায়াতকে নিয়ে প্রশ্ন আগেও ছিল, এখনো আছে। হয়তো ভবিষ্যতেও থাকবে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যে দেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন তা ইতিহাসের অংশ। লক্ষণীয় হলো, একাত্তরের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য জামায়াত এখন পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হলে জামায়াত পুনরায় রাজনীতির ময়দানে ফিরে আসার সুযোগ পায়।
ওই সময় সরকার ‘জামায়াত’ নামে দলের নিবন্ধন দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা মাওলানা আবদুর রহিমের নেতৃত্বে ‘ইসলামী ডেমোক্রেটিক লীগ’ (আইডিএল) নামে নিবন্ধন নিয়ে ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। পরে তারা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নামে দলকে সংগঠিত করে; যার ভারপ্রাপ্ত আমির করা হয় আব্বাস আলী খানকে। সেই থেকে জামায়াতে ইসলামী নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং শক্তি সঞ্চয়ের জন্য কখনো বিএনপির কাঁধে সওয়ার হয়েছে, কখনো আওয়ামী লীগের ছায়াসঙ্গী হয়েছে।
১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচন বিএনপি বয়কট করলেও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াত অংশ নিয়ে ১০টি আসন লাভ করে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে পায় ১৮টি আসন। ওই সংসদে থাকতেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের একধরনের সখ্য গড়ে ওঠে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হয়। যে কারণে ১৯৯৬-এর ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগ বয়কট করলে জামায়াতও তাদের অনুগামী হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার পর সে বছরের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে জামায়াত এককভাবে অংশ নেয়, আসন পায় মাত্র তিনটি। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে তারা বিএনপির সঙ্গে চারদলীয় ঐক্যজোটে সম্পৃক্ত হয়। সেই নির্বাচনে তারা ১৭টি আসন লাভ করে।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, বাংলাদেশের ভোটের রজনীতিতে জামায়াত নিজেদের ফ্যাক্টরে পরিণত করে নিতে সক্ষম হয়েছে। এটাকে তাদের সাফল্য না বলে উপায় কী। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এবং একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যায় সহায়তাকারী দলটি কীভাবে নতুন প্রজন্মের, বিশেষ করে যাদের জন্ম স্বাধীনতার পরে, তাদের দলভুক্ত করতে পারল, এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার! যা হোক, তাদের ভোটব্যাংকের বিষয়টি বিবেচনা করেই বিএনপি জামায়াতকে হাতছাড়া করতে চায়নি। কিন্তু এটা তাদের জন্য একসময় বুমেরাং হয়ে যায়।
জোটের নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি ক্রমান্বয়ে জামায়াতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে থাকে। সময়ে-সময়ে তারা প্রভাব বিস্তার করে বিএনপিকে দিয়ে নিজেদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করিয়ে নেয়। অনেকেরই স্মরণ থাকার কথা, ওয়ান-ইলেভেনের সময় সাবজেলে গিয়ে জামায়াতের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। যে সময়ে আইনজীবী ছাড়া আর কেউ বেগম জিয়ার সাক্ষাতের অনুমতি পেতেন না, সেই সময়ে জামায়াত নেতার অবলীলায় কারাগারে গিয়ে বৈঠক অনেক প্রশ্নেরই জন্ম দিয়েছিল।
মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে চারদলীয় জোটভুক্ত হয়ে জামায়াত বিএনপির ওপর সওয়ার হওয়ার পরে আর নামেনি। তাদের মন্ত্রণায় নিশ্চিত পরাজয় জেনেও বিএনপিকে ২০০৮-এর নির্বাচনে যেতে হয়েছে, আবার জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা সত্ত্বেও ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করতে হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দলটির কয়েকজন শীর্ষনেতার ফাঁসির পরেই।
কেননা, বিএনপি ওই সময় একরকম চুপচাপই ছিল। এ ছাড়া তাদের কোনো উপায়ও ছিল না। কেননা, সরকারি প্রচার-প্রোপাগান্ডায় ইতিমধ্যে জামায়াতের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে। তাই বিএনপি নিজেদের ভাবমূর্তির কথা মাথায় রেখেই ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি অবলম্বন করে। বিপদের সময় বন্ধুকে কাছে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয় জামায়াত। তারা ২০-দলীয় জোটে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
যদিও এখন পর্যন্ত ২০-দলীয় জোট ছাড়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি জামায়াত। তবে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে এটা অনুমান করা যায় যে ২০-দলীয় জোটে জামায়াতের সক্রিয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আর নেই।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও সমমনাদের দাবি ছিল ‘যুদ্ধাপরাধীদের দল’ হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু তা করা হয়নি। এ নিয়ে আদালতে মামলাও আছে। তবে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে। ফলে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের নেতারা ২০ দলের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির ‘ধানের শীষ’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নিবন্ধন বাতিল হলেও দল হিসেবে জামায়াতকে কেন নিষিদ্ধ করা হলো না—অনেকের মনেই এ প্রশ্ন রয়েছে। এটা কি কেবলই আইনি জটিলতার কারণে, নাকি রাজনৈতিক পাশা খেলাও আছে এর পেছনে, তা নিয়ে সচেতন মহলে গুঞ্জন রয়েছে অনেক দিন ধরেই। তবে রাজনৈতিক সচেতন মহল বলে আসছিল যে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে সরকার তথা আওয়ামী লীগ হাতের পাঁচ হারাতে চায়নি। প্রয়োজনে সময়মতো যাতে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায়, সে জন্যই দলটিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকার তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি।
এমন অবস্থায় হঠাৎ করে জামায়াতের মাঠে নামা সেই সন্দেহকেই অনেকখানি ভিত্তি দেয় বৈকি। এ বিষয়ে ১১ জুন আজকের পত্রিকার ‘তবে কি হিসাবে বদল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জামায়াতের বিষয়ে সরকারের অবস্থান নিয়ে বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতকে নিয়ে একটা কৌশলে এগোচ্ছে সরকার। প্রথমত, হতে পারে, নির্বাচনে অধিকসংখ্যক দলকে হাতে রাখা। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে জামায়াত যাতে সহিংস পথ বেছে না নেয়, সে বিষয়টি বিবেচনা করা। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই জামায়াতকে নিয়ে ভাবছে সরকার।’ এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশব্যাপী আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নি-সন্ত্রাস করতে বিএনপিই জামায়াতকে মাঠে নামিয়েছে।’ আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সরকার কেন জামায়াতের প্রতি নরম হলো, সেটা সরকারই জানে। সরকার এটা বলবে।’
রাজনীতির মাঠে জামায়াতে ইসলামীর প্রকাশ্যে মাঠে নামা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এটা কি আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের কোনো ছক, নাকি অন্য কোনো শক্তির পরিকল্পনার অংশ, তা এখনো পরিষ্কার নয়। অবশ্য এই কুয়াশা অচিরেই কেটে যাবে। আর তখনই বোঝা যাবে মঞ্চের সামনে জামায়াত, কিন্তু পেছনের সুতা কার হাতে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক
মহিউদ্দিন খান মোহন

দীর্ঘ এক দশক পর্দার অন্তরালে থাকার পর হঠাৎ করেই সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১০ জুন পূর্বঘোষণা অনুয়ায়ী তারা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করেছে। এর আগে তারা উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশের অনুমতি চাইলেও ডিএমপি কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। তখন তারা ঘোষণা করেছিল, সরকার অনুমতি না দিলে অনুমতি ছাড়াই সমাবেশ করবে। এ নিয়ে টান টান উত্তেজনা ছিল কয়েক দিন। কিন্তু সব শেষে জামায়াত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করার অনুমতি চাইলে ডিএমপি তা মঞ্জুর করে।
দশ বছর পর প্রকাশ্যে আসা জামায়াতের সমাবেশটি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রচুরসংখ্যক নেতা-কর্মী সেখানে সমবেত হয়েছিলেন। শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি, কারাদণ্ড এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলার পরেও যে দলটির কর্মীরা হতোদ্যম হয়ে পড়েননি, তার প্রমাণ মিলেছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সমাবেশে। সরকারের রোষানলে নিগৃহীত জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তিও যে এতটুকু কমেনি, তাও অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেছে। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে জামায়াত নিজেদের যে ফ্যাক্টরে পরিণত করতে পেরেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
জামায়াতকে নিয়ে প্রশ্ন আগেও ছিল, এখনো আছে। হয়তো ভবিষ্যতেও থাকবে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যে দেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন তা ইতিহাসের অংশ। লক্ষণীয় হলো, একাত্তরের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য জামায়াত এখন পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হলে জামায়াত পুনরায় রাজনীতির ময়দানে ফিরে আসার সুযোগ পায়।
ওই সময় সরকার ‘জামায়াত’ নামে দলের নিবন্ধন দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা মাওলানা আবদুর রহিমের নেতৃত্বে ‘ইসলামী ডেমোক্রেটিক লীগ’ (আইডিএল) নামে নিবন্ধন নিয়ে ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। পরে তারা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নামে দলকে সংগঠিত করে; যার ভারপ্রাপ্ত আমির করা হয় আব্বাস আলী খানকে। সেই থেকে জামায়াতে ইসলামী নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং শক্তি সঞ্চয়ের জন্য কখনো বিএনপির কাঁধে সওয়ার হয়েছে, কখনো আওয়ামী লীগের ছায়াসঙ্গী হয়েছে।
১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচন বিএনপি বয়কট করলেও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াত অংশ নিয়ে ১০টি আসন লাভ করে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে পায় ১৮টি আসন। ওই সংসদে থাকতেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের একধরনের সখ্য গড়ে ওঠে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হয়। যে কারণে ১৯৯৬-এর ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগ বয়কট করলে জামায়াতও তাদের অনুগামী হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার পর সে বছরের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে জামায়াত এককভাবে অংশ নেয়, আসন পায় মাত্র তিনটি। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে তারা বিএনপির সঙ্গে চারদলীয় ঐক্যজোটে সম্পৃক্ত হয়। সেই নির্বাচনে তারা ১৭টি আসন লাভ করে।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, বাংলাদেশের ভোটের রজনীতিতে জামায়াত নিজেদের ফ্যাক্টরে পরিণত করে নিতে সক্ষম হয়েছে। এটাকে তাদের সাফল্য না বলে উপায় কী। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এবং একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যায় সহায়তাকারী দলটি কীভাবে নতুন প্রজন্মের, বিশেষ করে যাদের জন্ম স্বাধীনতার পরে, তাদের দলভুক্ত করতে পারল, এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার! যা হোক, তাদের ভোটব্যাংকের বিষয়টি বিবেচনা করেই বিএনপি জামায়াতকে হাতছাড়া করতে চায়নি। কিন্তু এটা তাদের জন্য একসময় বুমেরাং হয়ে যায়।
জোটের নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি ক্রমান্বয়ে জামায়াতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে থাকে। সময়ে-সময়ে তারা প্রভাব বিস্তার করে বিএনপিকে দিয়ে নিজেদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করিয়ে নেয়। অনেকেরই স্মরণ থাকার কথা, ওয়ান-ইলেভেনের সময় সাবজেলে গিয়ে জামায়াতের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। যে সময়ে আইনজীবী ছাড়া আর কেউ বেগম জিয়ার সাক্ষাতের অনুমতি পেতেন না, সেই সময়ে জামায়াত নেতার অবলীলায় কারাগারে গিয়ে বৈঠক অনেক প্রশ্নেরই জন্ম দিয়েছিল।
মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে চারদলীয় জোটভুক্ত হয়ে জামায়াত বিএনপির ওপর সওয়ার হওয়ার পরে আর নামেনি। তাদের মন্ত্রণায় নিশ্চিত পরাজয় জেনেও বিএনপিকে ২০০৮-এর নির্বাচনে যেতে হয়েছে, আবার জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা সত্ত্বেও ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করতে হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দলটির কয়েকজন শীর্ষনেতার ফাঁসির পরেই।
কেননা, বিএনপি ওই সময় একরকম চুপচাপই ছিল। এ ছাড়া তাদের কোনো উপায়ও ছিল না। কেননা, সরকারি প্রচার-প্রোপাগান্ডায় ইতিমধ্যে জামায়াতের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে। তাই বিএনপি নিজেদের ভাবমূর্তির কথা মাথায় রেখেই ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি অবলম্বন করে। বিপদের সময় বন্ধুকে কাছে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয় জামায়াত। তারা ২০-দলীয় জোটে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
যদিও এখন পর্যন্ত ২০-দলীয় জোট ছাড়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি জামায়াত। তবে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে এটা অনুমান করা যায় যে ২০-দলীয় জোটে জামায়াতের সক্রিয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আর নেই।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও সমমনাদের দাবি ছিল ‘যুদ্ধাপরাধীদের দল’ হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু তা করা হয়নি। এ নিয়ে আদালতে মামলাও আছে। তবে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে। ফলে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের নেতারা ২০ দলের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির ‘ধানের শীষ’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নিবন্ধন বাতিল হলেও দল হিসেবে জামায়াতকে কেন নিষিদ্ধ করা হলো না—অনেকের মনেই এ প্রশ্ন রয়েছে। এটা কি কেবলই আইনি জটিলতার কারণে, নাকি রাজনৈতিক পাশা খেলাও আছে এর পেছনে, তা নিয়ে সচেতন মহলে গুঞ্জন রয়েছে অনেক দিন ধরেই। তবে রাজনৈতিক সচেতন মহল বলে আসছিল যে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে সরকার তথা আওয়ামী লীগ হাতের পাঁচ হারাতে চায়নি। প্রয়োজনে সময়মতো যাতে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায়, সে জন্যই দলটিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকার তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি।
এমন অবস্থায় হঠাৎ করে জামায়াতের মাঠে নামা সেই সন্দেহকেই অনেকখানি ভিত্তি দেয় বৈকি। এ বিষয়ে ১১ জুন আজকের পত্রিকার ‘তবে কি হিসাবে বদল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জামায়াতের বিষয়ে সরকারের অবস্থান নিয়ে বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতকে নিয়ে একটা কৌশলে এগোচ্ছে সরকার। প্রথমত, হতে পারে, নির্বাচনে অধিকসংখ্যক দলকে হাতে রাখা। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে জামায়াত যাতে সহিংস পথ বেছে না নেয়, সে বিষয়টি বিবেচনা করা। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই জামায়াতকে নিয়ে ভাবছে সরকার।’ এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশব্যাপী আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নি-সন্ত্রাস করতে বিএনপিই জামায়াতকে মাঠে নামিয়েছে।’ আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সরকার কেন জামায়াতের প্রতি নরম হলো, সেটা সরকারই জানে। সরকার এটা বলবে।’
রাজনীতির মাঠে জামায়াতে ইসলামীর প্রকাশ্যে মাঠে নামা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এটা কি আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের কোনো ছক, নাকি অন্য কোনো শক্তির পরিকল্পনার অংশ, তা এখনো পরিষ্কার নয়। অবশ্য এই কুয়াশা অচিরেই কেটে যাবে। আর তখনই বোঝা যাবে মঞ্চের সামনে জামায়াত, কিন্তু পেছনের সুতা কার হাতে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

দীর্ঘ এক দশক পর্দার অন্তরালে থাকার পর হঠাৎ করেই সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১০ জুন পূর্বঘোষণা অনুয়ায়ী তারা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করেছে। এর আগে তারা উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশের অনুমতি চাইলেও ডিএমপি কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। তখন তারা ঘোষণা করেছিল, সরকার অনুমতি না দিলে অনুমতি ছাড়াই সমাবেশ করবে। এ নিয়ে টান টান উত্তেজনা ছিল কয়েক দিন। কিন্তু সব শেষে জামায়াত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করার অনুমতি চাইলে ডিএমপি তা মঞ্জুর করে।
দশ বছর পর প্রকাশ্যে আসা জামায়াতের সমাবেশটি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রচুরসংখ্যক নেতা-কর্মী সেখানে সমবেত হয়েছিলেন। শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি, কারাদণ্ড এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলার পরেও যে দলটির কর্মীরা হতোদ্যম হয়ে পড়েননি, তার প্রমাণ মিলেছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সমাবেশে। সরকারের রোষানলে নিগৃহীত জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তিও যে এতটুকু কমেনি, তাও অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেছে। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতিতে জামায়াত নিজেদের যে ফ্যাক্টরে পরিণত করতে পেরেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
জামায়াতকে নিয়ে প্রশ্ন আগেও ছিল, এখনো আছে। হয়তো ভবিষ্যতেও থাকবে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যে দেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন তা ইতিহাসের অংশ। লক্ষণীয় হলো, একাত্তরের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য জামায়াত এখন পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হলে জামায়াত পুনরায় রাজনীতির ময়দানে ফিরে আসার সুযোগ পায়।
ওই সময় সরকার ‘জামায়াত’ নামে দলের নিবন্ধন দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা মাওলানা আবদুর রহিমের নেতৃত্বে ‘ইসলামী ডেমোক্রেটিক লীগ’ (আইডিএল) নামে নিবন্ধন নিয়ে ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। পরে তারা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নামে দলকে সংগঠিত করে; যার ভারপ্রাপ্ত আমির করা হয় আব্বাস আলী খানকে। সেই থেকে জামায়াতে ইসলামী নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং শক্তি সঞ্চয়ের জন্য কখনো বিএনপির কাঁধে সওয়ার হয়েছে, কখনো আওয়ামী লীগের ছায়াসঙ্গী হয়েছে।
১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচন বিএনপি বয়কট করলেও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াত অংশ নিয়ে ১০টি আসন লাভ করে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে পায় ১৮টি আসন। ওই সংসদে থাকতেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের একধরনের সখ্য গড়ে ওঠে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হয়। যে কারণে ১৯৯৬-এর ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগ বয়কট করলে জামায়াতও তাদের অনুগামী হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার পর সে বছরের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে জামায়াত এককভাবে অংশ নেয়, আসন পায় মাত্র তিনটি। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে তারা বিএনপির সঙ্গে চারদলীয় ঐক্যজোটে সম্পৃক্ত হয়। সেই নির্বাচনে তারা ১৭টি আসন লাভ করে।
এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, বাংলাদেশের ভোটের রজনীতিতে জামায়াত নিজেদের ফ্যাক্টরে পরিণত করে নিতে সক্ষম হয়েছে। এটাকে তাদের সাফল্য না বলে উপায় কী। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এবং একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যায় সহায়তাকারী দলটি কীভাবে নতুন প্রজন্মের, বিশেষ করে যাদের জন্ম স্বাধীনতার পরে, তাদের দলভুক্ত করতে পারল, এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার! যা হোক, তাদের ভোটব্যাংকের বিষয়টি বিবেচনা করেই বিএনপি জামায়াতকে হাতছাড়া করতে চায়নি। কিন্তু এটা তাদের জন্য একসময় বুমেরাং হয়ে যায়।
জোটের নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি ক্রমান্বয়ে জামায়াতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে থাকে। সময়ে-সময়ে তারা প্রভাব বিস্তার করে বিএনপিকে দিয়ে নিজেদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করিয়ে নেয়। অনেকেরই স্মরণ থাকার কথা, ওয়ান-ইলেভেনের সময় সাবজেলে গিয়ে জামায়াতের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। যে সময়ে আইনজীবী ছাড়া আর কেউ বেগম জিয়ার সাক্ষাতের অনুমতি পেতেন না, সেই সময়ে জামায়াত নেতার অবলীলায় কারাগারে গিয়ে বৈঠক অনেক প্রশ্নেরই জন্ম দিয়েছিল।
মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে চারদলীয় জোটভুক্ত হয়ে জামায়াত বিএনপির ওপর সওয়ার হওয়ার পরে আর নামেনি। তাদের মন্ত্রণায় নিশ্চিত পরাজয় জেনেও বিএনপিকে ২০০৮-এর নির্বাচনে যেতে হয়েছে, আবার জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা সত্ত্বেও ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করতে হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দলটির কয়েকজন শীর্ষনেতার ফাঁসির পরেই।
কেননা, বিএনপি ওই সময় একরকম চুপচাপই ছিল। এ ছাড়া তাদের কোনো উপায়ও ছিল না। কেননা, সরকারি প্রচার-প্রোপাগান্ডায় ইতিমধ্যে জামায়াতের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে। তাই বিএনপি নিজেদের ভাবমূর্তির কথা মাথায় রেখেই ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি অবলম্বন করে। বিপদের সময় বন্ধুকে কাছে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয় জামায়াত। তারা ২০-দলীয় জোটে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
যদিও এখন পর্যন্ত ২০-দলীয় জোট ছাড়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি জামায়াত। তবে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে এটা অনুমান করা যায় যে ২০-দলীয় জোটে জামায়াতের সক্রিয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আর নেই।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও সমমনাদের দাবি ছিল ‘যুদ্ধাপরাধীদের দল’ হিসেবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু তা করা হয়নি। এ নিয়ে আদালতে মামলাও আছে। তবে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে। ফলে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের নেতারা ২০ দলের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির ‘ধানের শীষ’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নিবন্ধন বাতিল হলেও দল হিসেবে জামায়াতকে কেন নিষিদ্ধ করা হলো না—অনেকের মনেই এ প্রশ্ন রয়েছে। এটা কি কেবলই আইনি জটিলতার কারণে, নাকি রাজনৈতিক পাশা খেলাও আছে এর পেছনে, তা নিয়ে সচেতন মহলে গুঞ্জন রয়েছে অনেক দিন ধরেই। তবে রাজনৈতিক সচেতন মহল বলে আসছিল যে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে সরকার তথা আওয়ামী লীগ হাতের পাঁচ হারাতে চায়নি। প্রয়োজনে সময়মতো যাতে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায়, সে জন্যই দলটিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকার তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি।
এমন অবস্থায় হঠাৎ করে জামায়াতের মাঠে নামা সেই সন্দেহকেই অনেকখানি ভিত্তি দেয় বৈকি। এ বিষয়ে ১১ জুন আজকের পত্রিকার ‘তবে কি হিসাবে বদল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জামায়াতের বিষয়ে সরকারের অবস্থান নিয়ে বেশ কয়েকটি সূত্র বলছে, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতকে নিয়ে একটা কৌশলে এগোচ্ছে সরকার। প্রথমত, হতে পারে, নির্বাচনে অধিকসংখ্যক দলকে হাতে রাখা। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে জামায়াত যাতে সহিংস পথ বেছে না নেয়, সে বিষয়টি বিবেচনা করা। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই জামায়াতকে নিয়ে ভাবছে সরকার।’ এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশব্যাপী আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নি-সন্ত্রাস করতে বিএনপিই জামায়াতকে মাঠে নামিয়েছে।’ আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সরকার কেন জামায়াতের প্রতি নরম হলো, সেটা সরকারই জানে। সরকার এটা বলবে।’
রাজনীতির মাঠে জামায়াতে ইসলামীর প্রকাশ্যে মাঠে নামা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এটা কি আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের কোনো ছক, নাকি অন্য কোনো শক্তির পরিকল্পনার অংশ, তা এখনো পরিষ্কার নয়। অবশ্য এই কুয়াশা অচিরেই কেটে যাবে। আর তখনই বোঝা যাবে মঞ্চের সামনে জামায়াত, কিন্তু পেছনের সুতা কার হাতে।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

দীর্ঘ এক দশক পর্দার অন্তরালে থাকার পর হঠাৎ করেই সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১০ জুন পূর্বঘোষণা অনুয়ায়ী তারা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করেছে।
১৮ জুন ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

দীর্ঘ এক দশক পর্দার অন্তরালে থাকার পর হঠাৎ করেই সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১০ জুন পূর্বঘোষণা অনুয়ায়ী তারা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করেছে।
১৮ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

দীর্ঘ এক দশক পর্দার অন্তরালে থাকার পর হঠাৎ করেই সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১০ জুন পূর্বঘোষণা অনুয়ায়ী তারা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করেছে।
১৮ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

দীর্ঘ এক দশক পর্দার অন্তরালে থাকার পর হঠাৎ করেই সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ১০ জুন পূর্বঘোষণা অনুয়ায়ী তারা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করেছে।
১৮ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫