Ajker Patrika

ইন্দুবালা ভাতের হোটেল

শাহীন রহমান, পাবনা 
ইন্দুবালা ভাতের হোটেল

কল্লোল লাহিড়ীর সাড়াজাগানো উপন্যাস ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’। জনপ্রিয় এই উপন্যাস অবলম্বনে ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে ওয়েব সিরিজ। সেই সিরিজের  জনপ্রিয়তার ঢেউ লেগেছে পাবনার ব্যবসায়ী সোহানী হোসেনের মনে। ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ নামে একটি রেস্তোরাঁ খুলে বসেছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, ১৯ মে চালু হওয়া এ হোটেলে শুরুর দিন থেকেই দেখা যায় ভোজনবিলাসীদের সারি।

প্রতিদিন হোটেলটি দেখতে এবং খাবারের স্বাদ নিতে সেখানে ছুটছেন নানান বয়সী অসংখ্য নারী-পুরুষ। ঘরোয়া পরিবেশে সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার পরিবেশন এবং খাবারের মান নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন প্রজন্মের মধ্যে পুরোনো দিনের খাবারের স্বাদ পরিচয় করিয়ে দিতে নেওয়া হয়েছে এ উদ্যোগ।

কল্লোল লাহিড়ী রচিত উপন্যাসটিতে তুলে ধরা হয়েছে ইন্দুবালা নামে এক নারীর জীবনসংগ্রামের কথা। জীবনধারণের অর্থনৈতিক উৎস হিসেবে তিনি তৈরি করেছিলেন একটি ভাতের হোটেল। সেখানে রান্না হতো ইন্দুবালার ফেলে আসা ‘দেশে’র সেই সব রান্না, যেগুলো তাঁর স্মৃতিতে থেকে গিয়েছিল। পাবনার ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের উদ্যোক্তারাও সেই পুরোনো দিনের দেশীয় খাবারগুলোকে সামনে এনেছেন এ প্রজন্মের জন্য। পাবনা সদর উপজেলার জালালপুরে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। এর প্রবেশমুখেই রয়েছে সাইনবোর্ড। ভেতরে ঢুকলে দেখা যাবে, একটি কালো বোর্ডে চক দিয়ে লেখা আছে খাবারের নাম ও দাম। প্রতিদিন যে একই খাবার পাওয়া যাবে এখানে, তা নয়। যেকোনো সময় খাবারের তালিকায় বদল আসতে পারে।

চালু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরে এখানে খাবার পরিবেশন করেন নারীরা। কলাপাতায় পরিবেশন করা হয় খাবার। এখানে খেতে আসা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহিন মুনজারিন ও তানজিলা রহমানের সঙ্গে কথা হয় এ হোটেল নিয়ে। তাঁরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী এবং দামে অন্যান্য জায়গার চেয়ে তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ায় তাঁরা প্রায়ই খেতে যান হোটেলটিতে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা জহুরুল হক প্রিন্স জানিয়েছেন, ফেসবুকে ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের নাম শুনে খেতে আসেন তিনি। খাবার পরিবেশন, পরিবেশ এবং খাবারের মান ভালো লেগেছে তাঁর।

হোটেলটির উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী সোহানী হোসেন। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সোহানী জানান, উপন্যাস ও ভারতীয় ওয়েব সিরিজ দেখেই ইন্দুবালা ভাতের হোটেল প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ হন তিনি। পুরোনো দিনের হারিয়ে যাওয়া খাবার, যেমন নারকেল দিয়ে কচু বাটা, কুমড়োর ছক্কা, সোনা মুগের ডাল, আম দিয়ে পাবদা মাছের ঝোল, কচু ঘণ্ট, চিংড়ি ভর্তা, আমডালসহ হরেক রকম খাবার নিজে রান্না করে খেয়ে ভালো লাগে তাঁর। সে ভালো লাগাই তিনি ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন মানুষের মধ্যে। সে কারণে উপন্যাসের নামেই রেখেছেন নিজের রেস্তোরাঁর নাম। সোহানী বলেন, ‘এখন মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি।’ 

এখনকার ছেলেমেয়েরা বার্গার, পিৎজাসহ বিভিন্ন ফার্স্ট ফুডে বুঁদ হয়ে আছে। তাদের শারীরিক অবস্থা মোটেও ভালো নয়। সে জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু বাঙালি খাবারের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছেন সোহানী। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী হোস্টেলে থাকেন, তাঁদের বাজেটও থাকে কম। তাঁরা যেন নিয়মিত সুস্বাদু খাবার খেতে পারেন, সে জন্য এখানে খাবারের দাম কম রাখা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জন্য ইতিমধ্যে পাবনার ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের নাম ছড়িয়ে গেছে প্রায় পুরো দেশে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত