Ajker Patrika

বালু তোলায় ভাঙনে বিলীন ফসলি জমি

অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ২৪
বালু তোলায় ভাঙনে বিলীন ফসলি জমি

নদী থেকে বালু তোলার কারণে নদী ভাঙনের হুমকিতে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের গাজিরহাটি গ্রামের ৩০ থেকে ৩৫টি ঘরবাড়ি। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমিকায় অসন্তোষ রয়েছে ভুক্তভোগীদের মধ্যে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে কলমা-আব্দুল্লাপুর লোপ কাট প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সরকার। ভৈরব আজমিরিগঞ্জ নৌপথে প্রায় আড়াই ঘণ্টা দূরত্ব কমাতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এতে আব্দুল্লাপুর দক্ষিণ দিকে কালনী নদী হতে কলমা গ্রামের সামনে মেঘনা নদী পর্যন্ত খনন করা হয়। তাতে নৌপথে আড়াই ঘণ্টা সময় বেঁচে যায়।

নদীপথ কমে এলেও নতুন নদী থেকে অবাধে বালু তোলায় গাজিরহাটিসহ একাধিক স্থানে নদী ভাঙনে ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে। মূল নদীর কয়েক কিলোমিটার ভেতরে থাকা গ্রাম ও ফসলি জমি এখন কাটাগাঙ্গের ভাঙনের কবলে। এই গ্রামের ৩০ থেকে ৩৫টি পরিবার এখন হুমকির মুখে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘আগে শুনেছি খাল কেটে কুমির আনা হয়। এখন দেখছি গাঙ্গ কেটে ভাঙন ধরানো হয়েছে। এই গাঙ্গের কারণে লঞ্চ (নৌপথ) যাতায়াতে সময় বাঁচলেও আমাদের জমি মরছে, বাড়ি ঘর মরতে বসেছে। এই নদী ভাঙন প্রতিরোধে নদী শাসন এবং বালু উত্তোলনকারীদের থামাতে হবে।’

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, অষ্টগ্রামের কাটাগাঙ্গের ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে। গত অর্থ বছরে ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে, প্রায় ৬ হাজার বালির বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলে ভাঙন প্রতিরোধ করা হয়। ভাঙন রোধে আরও অতিরিক্ত বরাদ্দের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

গাজিহাটি গ্রামের বাসিন্দা ডাবলু দাস বলেন, ‘জমি কাইট্টা গাঙ্গ হইল। এই গাঙ্গের ভাঙনে আমরা নিজেরাই সমস্যায় আছি। গ্রামের পাশে দুই-আড়াই হাজার বালু ব্যাগে পুরা গ্রাম রক্ষা হইত না। আরও বেশি বেশি বস্তা দিয়ে গাঙ্গ শাসন করা দরকার। এখন স্রোত নাই, তবু ভাঙন চলছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শ্রীহরি দাস বলেন, ‘তিন বছর আগে অবৈধভাবে গাঙ্গের বালু তোলার কারণে, গাজিরহাটির ভাঙন শুরু হয়। গেল বর্ষায় কিছু বালুর বস্তা ঠিকাদারদের ইচ্ছেমতো ফেলা হয়েছে। আমাদের কোনো কথা শোনেনি। এতে সামান্য জায়গা রক্ষা হলেও আমরা হুমকির মুখে রয়েছি। গ্রামটি রক্ষায় সরকারের সুদৃষ্টি চাই।’

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সেলিম মিয়া মুঠোফোনে বলেন, গ্রামটি রক্ষায় অতিরিক্ত চাহিদা প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখন তেমন ভাঙন নেই। তবে, ভাঙন শুরু হলে বা বর্ষার আগে নতুন করে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত