সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
‘১৬ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই পাহাড়ি ঢল আসতে শুরু করে। তখনো ভাবিনি ঘরে পানি উঠবে। কারণটাও ছিল সহজ—বন্যা প্রতিবছরই হয়। তবে বাড়িতে এমনকি বাড়ির উঠানেও পানি আসে না। সেই ভাবনা থেকেই পরিবার নিয়ে বসেছিলাম বাড়িতেই। তবে এতটা যে পানি হবে, সেটা ভাবিনি। পানি বাড়ছিল হু হু করে। ক্ষণিকের মধ্যে ঘরের ভেতর কোমর পর্যন্ত পানি। কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।’
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গুদারগাঁও গ্রামের নুরুল হক এভাবেই বর্ণনা দেন পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট চলমান বন্যার। নুরুল হক বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশাপাশি দেখলাম সবার বাড়িতেই পানি। তখন গেলাম একজনের বাড়িতে। সেখানেও গিয়ে দেখি তিল ঠাঁই নাই। সবাই আশ্রয় নিয়েছেন সেখানে। তারপর বাধ্য হয়ে খড়ের টিলার ওপর তুললাম বাচ্চাদের। খড়ের টিলায় তিন দিন থাকলাম কোনো রকম খাবার না খেয়েই। তিন দিন পর ঘরের ভেতর হাঁটু পর্যন্ত পানি ছিল। তারপর আমরা ঘরে উঠলাম।’
তিনি বলেন, ‘ঘরের ভেতর ঢুকেই দেখি আমার প্রায় ১০০ মণ ধান আর ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বন্যায়।’
পৌর শহরের তেঘরিয়া আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ইয়াকুব উল্লাহ জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই না পেয়ে শহরের জয়নাল আবেদীন মার্কেটের দোতলার ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলেন কোনো রকমে। স্ত্রী, দুই সন্তান, মা-বাবা ও বড় ভাইয়ের পরিবার নিয়ে চরম দুর্ভোগের সেই বর্ণনা দিয়ে ইয়াকুব বলেন, ‘১৭ জুন রাত ৩টার দিকে বাসার ভেতর পানি ঢুকতে শুরু করে। পানি যখন কোমর পর্যন্ত তখন আর ঘরে থাকার মতো অবস্থা ছিল না। সবাইকে নিয়ে অসহায়ের মতো বের হয়ে গেলাম। এখানে-ওখানে কোনো জায়গাতেই ঠাঁই ছিল না। কোনো নৌকা বা কোনো ধরনের বাহন পেলাম না। তিনটি আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েও কোনো জায়গা পেলাম না। শেষ পর্যন্ত আমার দোকানের ছাদের ওপর কোনো রকম একটু জায়গায় আশ্রয় নেই।’ তিনি বলেন, ‘সেই কথা মনে হলে নিজেকে বড় অসহায় লাগে।’
শুধু ইয়াকুব আর নুরুল হকই নয়। তাঁদের মতো হাজারো মানুষ। উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত সব শ্রেণির মানুষই অসহায় হয়ে পড়ে বানের পানির কাছে। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের শুকনো একটু জায়গা ছিল। পুরো শহরই পানিতে তলিয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশ সুপারের বাসভবনসহ জেলা পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাসভবনের নিচতলাও ডুবে যায় পানিতে। ১৬ থেকে ১৯ জুন ছিল এখানকার মানুষের জন্য অসহায়ত্বের একেকটি দিন।
এদিকে বন্যায় নাকাল হয়ে পড়ে সুনামগঞ্জবাসী। পুরো শহরের কোথাও নেই বিদ্যুৎ, মোবাইল ফোনের সংযোগ, নেই কোনো ধরনের যানবাহন। শহরের মধ্যে যে কয়টা নৌকা চলছিল, তার ভাড়াও ছিল অনেকের সাধ্যের বাইরে। অনেকের পকেটে টাকা থাকলেও ছিল না খাবার। রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকেরই রান্না করে খাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। সব মিলিয়ে বলা যায় সুনামগঞ্জ শহর ছিল নীরব-নিস্তব্ধ।
সুনামগঞ্জ শহরের চলমান বন্যায় সেই বিভীষিকাময় চার দিনের কথা মনে করেই অনেকে এখনো শিউরে ওঠেন।
বন্যার দুর্বিষহ মুহূর্তকে স্মরণ করে শহরের বাঁধনপাড়া আবাসিক এলাকার ফাহমিনা আক্তার বলেন, ‘আমি ১৬ জুন সন্ধ্যায় ঘরে বসে টিভি দেখছিলাম। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিল মুষলধারে। পানি আসবে এমনটা কল্পনাও করতে পারিনি। হঠাৎ করেই শোঁ শোঁ শব্দ করে ঢেউ আসতে শুরু করে। মুহূর্তেই ঘরের ভেতর পানি ঢুকে পড়েছে। আমি আমার শাশুড়িকে নিয়ে যা পারলাম ঘরের জিনিস ওপরে তোলার চেষ্টা করছিলাম। ১৫ মিনিটের মধ্যেই দেখি ঘরে কোমর পানি। তখন সবাইকে নিয়ে বের হয়ে গেলাম পার্শ্ববর্তী একটি দ্বিতল ভবনে। সেখানেই আশ্রয় নেই আমরা। এখন পর্যন্ত আমার মাথায় সেদিনের ভয়াবহতা চোখের সামনে ভাসছে।’
‘১৬ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই পাহাড়ি ঢল আসতে শুরু করে। তখনো ভাবিনি ঘরে পানি উঠবে। কারণটাও ছিল সহজ—বন্যা প্রতিবছরই হয়। তবে বাড়িতে এমনকি বাড়ির উঠানেও পানি আসে না। সেই ভাবনা থেকেই পরিবার নিয়ে বসেছিলাম বাড়িতেই। তবে এতটা যে পানি হবে, সেটা ভাবিনি। পানি বাড়ছিল হু হু করে। ক্ষণিকের মধ্যে ঘরের ভেতর কোমর পর্যন্ত পানি। কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।’
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গুদারগাঁও গ্রামের নুরুল হক এভাবেই বর্ণনা দেন পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট চলমান বন্যার। নুরুল হক বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশাপাশি দেখলাম সবার বাড়িতেই পানি। তখন গেলাম একজনের বাড়িতে। সেখানেও গিয়ে দেখি তিল ঠাঁই নাই। সবাই আশ্রয় নিয়েছেন সেখানে। তারপর বাধ্য হয়ে খড়ের টিলার ওপর তুললাম বাচ্চাদের। খড়ের টিলায় তিন দিন থাকলাম কোনো রকম খাবার না খেয়েই। তিন দিন পর ঘরের ভেতর হাঁটু পর্যন্ত পানি ছিল। তারপর আমরা ঘরে উঠলাম।’
তিনি বলেন, ‘ঘরের ভেতর ঢুকেই দেখি আমার প্রায় ১০০ মণ ধান আর ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বন্যায়।’
পৌর শহরের তেঘরিয়া আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ইয়াকুব উল্লাহ জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই না পেয়ে শহরের জয়নাল আবেদীন মার্কেটের দোতলার ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলেন কোনো রকমে। স্ত্রী, দুই সন্তান, মা-বাবা ও বড় ভাইয়ের পরিবার নিয়ে চরম দুর্ভোগের সেই বর্ণনা দিয়ে ইয়াকুব বলেন, ‘১৭ জুন রাত ৩টার দিকে বাসার ভেতর পানি ঢুকতে শুরু করে। পানি যখন কোমর পর্যন্ত তখন আর ঘরে থাকার মতো অবস্থা ছিল না। সবাইকে নিয়ে অসহায়ের মতো বের হয়ে গেলাম। এখানে-ওখানে কোনো জায়গাতেই ঠাঁই ছিল না। কোনো নৌকা বা কোনো ধরনের বাহন পেলাম না। তিনটি আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েও কোনো জায়গা পেলাম না। শেষ পর্যন্ত আমার দোকানের ছাদের ওপর কোনো রকম একটু জায়গায় আশ্রয় নেই।’ তিনি বলেন, ‘সেই কথা মনে হলে নিজেকে বড় অসহায় লাগে।’
শুধু ইয়াকুব আর নুরুল হকই নয়। তাঁদের মতো হাজারো মানুষ। উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত সব শ্রেণির মানুষই অসহায় হয়ে পড়ে বানের পানির কাছে। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের শুকনো একটু জায়গা ছিল। পুরো শহরই পানিতে তলিয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশ সুপারের বাসভবনসহ জেলা পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাসভবনের নিচতলাও ডুবে যায় পানিতে। ১৬ থেকে ১৯ জুন ছিল এখানকার মানুষের জন্য অসহায়ত্বের একেকটি দিন।
এদিকে বন্যায় নাকাল হয়ে পড়ে সুনামগঞ্জবাসী। পুরো শহরের কোথাও নেই বিদ্যুৎ, মোবাইল ফোনের সংযোগ, নেই কোনো ধরনের যানবাহন। শহরের মধ্যে যে কয়টা নৌকা চলছিল, তার ভাড়াও ছিল অনেকের সাধ্যের বাইরে। অনেকের পকেটে টাকা থাকলেও ছিল না খাবার। রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকেরই রান্না করে খাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। সব মিলিয়ে বলা যায় সুনামগঞ্জ শহর ছিল নীরব-নিস্তব্ধ।
সুনামগঞ্জ শহরের চলমান বন্যায় সেই বিভীষিকাময় চার দিনের কথা মনে করেই অনেকে এখনো শিউরে ওঠেন।
বন্যার দুর্বিষহ মুহূর্তকে স্মরণ করে শহরের বাঁধনপাড়া আবাসিক এলাকার ফাহমিনা আক্তার বলেন, ‘আমি ১৬ জুন সন্ধ্যায় ঘরে বসে টিভি দেখছিলাম। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিল মুষলধারে। পানি আসবে এমনটা কল্পনাও করতে পারিনি। হঠাৎ করেই শোঁ শোঁ শব্দ করে ঢেউ আসতে শুরু করে। মুহূর্তেই ঘরের ভেতর পানি ঢুকে পড়েছে। আমি আমার শাশুড়িকে নিয়ে যা পারলাম ঘরের জিনিস ওপরে তোলার চেষ্টা করছিলাম। ১৫ মিনিটের মধ্যেই দেখি ঘরে কোমর পানি। তখন সবাইকে নিয়ে বের হয়ে গেলাম পার্শ্ববর্তী একটি দ্বিতল ভবনে। সেখানেই আশ্রয় নেই আমরা। এখন পর্যন্ত আমার মাথায় সেদিনের ভয়াবহতা চোখের সামনে ভাসছে।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
২ দিন আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪