Ajker Patrika

এমন অবসর চায়নি বিসিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
এমন অবসর চায়নি বিসিবি

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিমের ভবিষ্যৎ কী? বাংলাদেশ ক্রিকেটে প্রশ্নটা অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। প্রশ্নটা আরও উচ্চকিত হয়েছে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর।

পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুশফিককে বিশ্রাম দেওয়া হয়। বিশ্রামের আড়ালে অবশ্য এই সংস্করণ থেকে তাঁর বিদায়ই ধরে নেওয়া হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমকে  ‘বাদ দেওয়া’র কথা জানিয়ে বিসিবির কারণ দর্শানো নোটিশও পেয়েছিলেন। এবারের এশিয়া কাপে খারাপ পারফরম্যান্সের পর আবারও মুশফিকের অবসরের প্রসঙ্গ সামনে আসে।  

কোনো রাখঢাক না রেখে এবার সব আলোচনা থামিয়ে দিলেন মুশফিক নিজেই। গতকাল সামাজিক মাধ্যমে এক বার্তায় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ১৫ বছর ২৭৭ দিনের এই সংস্করণে সবচেয়ে লম্বা ক্যারিয়ারের ইতি টানা মুশফিক তবু আগামী মাসে অস্ট্রেলিয়ায় হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য বিসিবির ভাবনায় ছিলেন। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস গতকাল এমনটাই বলেছেন। মুশফিক যেভাবে বিদায় জানিয়েছেন, এটা অপ্রত্যাশিতই মনে হচ্ছে বিসিবির।

 জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘এ ধরনের অবসর না হলেই ভালো। অন্য দেশগুলোয় যদি দেখেন, একজন খেলোয়াড় তখন অবসরের সিদ্ধান্ত নেয়, যখন তার ক্যারিয়ার শেষের দিকে চলে আসে। তারা জানে, কোন সংস্করণে কত দিন খেলবে। তারা কিন্তু ছয় মাস এক বছর আগে বলে দেয়, এই সিরিজে শেষ ম্যাচ হবে আমার। আমাদের ক্ষেত্রেও যদি কোনো খেলোয়াড় আগে থেকেই বলে দেয় যে এই সিরিজে আমি শেষ করব, তাহলে ভালো হয়।’

অবসর নিয়ে মুশফিক বিসিবিকে যে ই-মেইল করেছেন, সেটা গতকাল রাত পর্যন্ত গ্রহণ করেনি বিসিবি। সতীর্থরা অবশ্য অবসর ঘোষণার পর সামাজিক মাধ্যমে মুশফিককে শুভকামনা জানিয়েছেন। এর মধ্যে মুশফিক টি-টোয়েন্টি সংস্করণে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন যাঁর অধিনায়কত্বে, সেই মাহমুদউল্লাহর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন এভাবে, ‘প্রিয় মুশফিক, তোমার অবসরের ঘোষণা শুনে আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ার ও অর্জনের জন্য তোমাকে অভিনন্দন।’
মাহমুদউল্লাহর প্রতিক্রিয়ার উত্তর দিয়েছেন মুশফিক, ‘সব সময় আমার পাশে থাকার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই। একমাত্র আপনিই সব সময় আমার পাশে ছিলেন।’

লম্বা সময়ের সতীর্থ ও বন্ধু তামিম ইকবাল লেখেন,  ‘১৫ বছর ২৭৭ দিনের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার কোনো ফ্লুক নয়।  পরিসংখ্যান সব সময় সবটুকু ফুটিয়ে তুলতে পারে না। কিন্তু তোর নিবেদন, প্যাশন, পরিশ্রম ও ভালোবাসা দেখেছি। তোর যা কিছু অর্জন ও প্রাপ্তি, সবকিছুর জন্য অভিনন্দন আরও একবার।’

এ বছর টি-টোয়েন্টি দলে এমনিতে অনিয়মিত ছিলেন মুশফিক। ১০ ম্যাচের মধ্যে খেলেছেন মাত্র ৩টিতে। মাঝে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ব্যক্তিগত কারণে ছুটিতে ছিলেন। জিম্বাবুয়ে সফরে দলে রাখা হয়নি তাঁকে। তবে এশিয়া কাপ দিয়ে হয়তো তাঁর এই সংস্করণের ক্যারিয়ার পুনর্জীবন পেতে পারত। ফিরিয়ে আনা হয়েছিল উইকেটকিপিংয়েও। তবে কিছুতেই যেন কিছু হলো না।

এশিয়া কাপে দুই ম্যাচে মুশফিক করেছেন মাত্র ৫ রান। উইকেটকিপিংয়েও তাঁর কাছ থেকে সামর্থ্যের সেরাটা পায়নি দল। টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারজুড়ে স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্নের সামনে পড়তে হয়েছে তাঁকে; ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট ১১৫.০৩। এবার প্রশ্ন উঠেছে বড় মঞ্চ থেকে। প্রশ্ন তোলেন ওয়াসিম আকরামও। শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ধারাভাষ্যকক্ষে পাকিস্তান কিংবদন্তি বলেন, ‘১০০-এর বেশি ম্যাচ খেলেও স্ট্রাইক রেট ১১৫ কেন?’

শুধু রান তোলার গতিই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে মুশফিক অস্বস্তিতে ছিলেন ছন্দ হারিয়েও। সব মিলিয়ে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের মনে হয়েছে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি আর নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত