Ajker Patrika

ভাঙন এলাকা থেকে বালু তুলে ভরা হচ্ছে ব্যাগে

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
Thumbnail image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর ভাঙন থেকে ডান তীর রক্ষায় চলছে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ। দরপত্রের কার্যাদেশ অনুযায়ী জিও ব্যাগ বসানোর আগে ৪ ইঞ্চি বালু ফিলিং করে জিও টেক্সটাইল বিছানোর পর ৪ ইঞ্চি ইটের খোয়া বসানোর কথা। এরপর বালু ও খোয়া কম্প্যাকশন করে (সিমেন্ট-বালুর মিশ্রণ) জিও ব্যাগ বসাতে হবে। এ ছাড়া নদীতীরের তলদেশেও জিও ব্যাগ ফেলার কথা।

তবে সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাঙনকবলিত এলাকার ৪০-৫০ গজ দূর থেকে নদীর পলি মেশানো বালু তুলেই ভরা হচ্ছে জিও ব্যাগে। এর ওপরও জিও টেক্সটাইলের নিচে কোনো বালু দেওয়া হচ্ছে না। জিও টেক্সটাইলের ওপরে ইটের খোয়াও দেওয়া হচ্ছে ২ ইঞ্চি করে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মাতামুহুরীর ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বান্দরবান পওর বিভাগ চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচরের মন্ডলপাড়া থেকে কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ছোয়ালিয়াপাড়া পর্যন্ত ২২০০ মিটার নদীর তীরে জিও ব্যাগ ফেলার প্রকল্প গ্রহণ করে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে ‘মাতামুহুরী নদীর ডান তীর প্রতিরক্ষা প্রকল্প’ নামের এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সাড়ে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। চারটি প্যাকেজে ভাগ করে ঠিকাদার নিয়োগ করে পাউবো।

৫০০ মিটারের কাজ পায় ঠিকাদার ফরিদুল আলমের চকরিয়া ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি। বাকি কাজ পান অন্য দুই ঠিকাদার। পরে বাকি দুই ঠিকাদারের কাজও কিনে নিয়ে বাস্তবায়ন করছে চকরিয়া ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি।

ঠিকমতো কাজ না করার বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার ফরিদুল আলম রাখঢাক না রেখেই বলেন, ‘এ নিয়ে লেখার কী আছে। মিলেমিশে খাওয়ার জন্যই তো করছি।’  

এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, ঠিকভাবে কাজ না করা নিয়ে তাঁরা বারবার পাউবো অফিসে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। এ ক্ষেত্রে পাউবো কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকার সন্দেহ করেন তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন (৬৫) বলেন, ঠিকাদার স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। তাঁর অনিয়ম নিয়ে অনেক অভিযোগ করেও কাজ হয়নি। অফিসের লোকজনও তেমন সাইটে আসেন না। অবস্থা এমন হয়েছে, কাজটি যেন ঠিকাদারের টাকায় বাস্তবায়ন হচ্ছে।

একই অভিযোগ করে স্থানীয় ফরহাদ হোসেন (৩৫) বলেন, দরপত্রে যেভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে ঠিকাদার তার ৫০ শতাংশই করছেন না। অনিয়মের প্রতিবাদ করলে তিনি কাজ ফেলে যাওয়ার হুমকি দেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, এ কাজের অনিয়ম নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অনেকবার অভিযোগ করেও কাজ হয়নি। ঠিকাদারের লোকজন ইচ্ছেমতো কাজ করছে।

লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব বলেন, পাউবোর লোকজন ঠিকভাবে তদারক না করায় এ কাজের মান নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠছে।

যোগাযোগ করা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান পওর বিভাগের এ প্রকল্পের শাখা কর্মকর্তা (এসও) নিকু চাকমা বলেন, ‘আমি অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। আমি এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।’

আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তী অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। শিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ কম করলে বিল পরিশোধ করা হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত