Ajker Patrika

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মুরগির খামার

জামালপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২২, ১৪: ১৮
Thumbnail image

খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে জামালপুরে একের পর এক মুরগির খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। খামারমালিকেরা বলছেন, গত বছর থেকেই মুরগির খাদ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর মুরগির খাদ্যের দাম বেড়েছে আকাশছোঁয়া। এতে লোকসানে পড়ে ঋণের মামলায় জড়িয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী। তবে বিষয়টি নজরদারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

সরেজমিন জানা গেছে, জেলায় ২ হাজার ৮৬১টি খামার রয়েছে। জামালপুর সদর উপজেলার পলাশগড়, রামনগর, তিরুথা, কম্পপুর, কেন্দুয়া, হাজিপুর, শরিফুরসহ ১৫টি ইউনিয়নের অসংখ্য যুবক লেখাপড়া শেষ করে পোলট্রি ব্যবসা শুরু করেন। অনেকে আবার বিদেশ থেকে এসে খামার গড়ে তোলেন। প্রথমদিকে তাঁরা লাভের মুখ দেখলেও বর্তমানে মুরগির বাচ্চা, খাদ্য, ওষুধ, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে লোকসানে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ফলে এই ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসা এবং চাকরির দিকে ঝুঁকছেন খামারিরা। আর এ কারণে খামারের সঙ্গে যুক্ত শত শত মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন।

পোলট্রি খামারিরা বলেন, ‘২০১২-১৩ সালে এই ব্যবসায় কিছু লাভের মুখ দেখেছি। এরপর সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। লাখ লাখ টাকা পুঁজি করেও লোকসানে পড়তে হচ্ছে। সরকারিভাবে কোনো সহায়তা না করায় অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন।’

খামারিরা জানান, বাচ্চা কিনে লালন-পালন করে বাজারে নেওয়া পর্যন্ত প্রতিটি মুরগির পেছনে খরচ হয় ১৬০ টাকা। আগে বাচ্চা কিনতে ১০ থেকে ১২ টাকা লাগত। এখন লাগে ২৫ টাকা। মুরগির খাদ্য ১ হাজার ৮০০ থেকে বেড়ে ৩ হাজার ১০০ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও পানির দাম বৃদ্ধির কারণে প্রতি মাসে লোকসান গুনতে হচ্ছে। বাজারে ডিম ও মুরগির যে দাম তাতে লাভ হচ্ছে না। খামার চালাতে গিয়ে অনেকেই ঋণের মামলা খেয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আর খামার বন্ধ করে দেওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ।

কর্মচারীরা বলেন, ‘মালিকেরা লোকসানের কারণে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেতনে কাজ করেছি। এখন বেকার জীবনযাপন করছি।’

পলাশগড় গ্রামের খামারি মাসুদ মিয়া বলেন, ‘কারিগরি স্কুল থেকে লেখাপড়া শেষ করে বেকার ছিলাম। বাবার জমিজমা বিক্রি করে ২০১২ সালে মুরগির খামার দিয়ে প্রথম দু-তিন বছর লাভ পেয়েছিলাম। পরে আরও জমি বিক্রি করে তিনটি খামার গড়ে তুলেছিলাম। আমার খামার দেখে অনেকেই খামার করেছিল। খাদ্যের টাকা বাকি থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি নিজে এখন ১৪ লাখ টাকা লোকসানে পড়েছি।’

রামনগর গ্রামের শফিকুল ইসলাম মাস্টার্স পাস করে মুরগির খামার ও খাদ্যের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে খাদ্য কিনতেন ১৫০ জন খামারি। তাঁদের ১০০ জন খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। ’

জামালপুর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে কোনো খামার বন্ধ হয়েছে কি না, সেটি আমার জানা নেই। খামারিদের ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত