Ajker Patrika

ইভিএম নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও বগুড়া প্রতিনিধি 
Thumbnail image

আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্পটি গতকাল মঙ্গলবারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) তোলেনি পরিকল্পনা কমিশন। ফলে প্রকল্পটির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি।

নির্বাচন কমিশন এর আগে বলেছে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্প অনুমোদন না পেলে ইভিএম কেনা কঠিন হয়ে যাবে। এতে আগামী নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না।

পরিকল্পনা কমিশন বলছে, ইভিএম প্রকল্প নিয়ে মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা এখনো হয়নি। এ সভা শেষে তা একনেকে তোলা হবে। আগে প্রায় প্রতি সপ্তাহে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হলেও এখন সভা হচ্ছে এক থেকে দেড় মাস পরপর। এতে ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত এলেও তা এক থেকে দেড় মাস পিছিয়ে যেতে পারে।

তবে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে, আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সরকার। নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার আদৌ হবে কি না, সেটাই চূড়ান্ত হয়নি। অনেকে মনে করছেন, ইভিএমের ব্যাপারে পশ্চিমাদের মনোভাব বিবেচনা করার পরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। কারণ, এর মধ্যে ইভিএম নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা শুরু হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে,  ইভিএমকে সরকার কারচুপির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায়।

গতকাল একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইভিএমের প্রকল্পটি একনেক সভার আজকের কার্যতালিকায় ছিল না।

প্রধানমন্ত্রীও এই বিষয়ে কোনো কিছু জানতে চাননি। আমরা নিজেরাও এই বিষয়ে কিছু জানাবার প্রয়োজন মনে করিনি।’

প্রকল্পটি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার নিয়মকানুন আছে। সে প্রক্রিয়া পার হয়েই সেটা নিষ্পত্তির পর্যায়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে প্রকল্পটি অনুমোদন পেতে পারে, বাতিলও হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইভিএম মেশিন কেনার প্রকল্পটি নিয়ে গত সপ্তাহে হঠাৎ তোড়জোড় শুরু হয়। পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রকল্পটি নিয়ে কাজ শুরু করে। তাই কার্যতালিকার বাইরে এ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সরাসরি আলোচনার টেবিলে তোলার নির্দেশনা আসতে পারে এমন ধারণা করা হচ্ছিল। অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে সরাসরি তা একনেক সভায় তোলা হয়।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক সংকট বিবেচনায় নিয়ে এখন প্রকল্প অনুমোদনের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে সরকার। এমনকি একনেকে তোলা যাবে, পাইপলাইনে এমন প্রকল্পের সংখ্যাও অনেক কম। সর্বশেষ একনেক সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২২ নভেম্বর। সে হিসেবে গতকালের একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রায় দুই মাস পর।

গত বছরের অক্টোবরে পরিকল্পনা কমিশনে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার ইভিএম প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠায় নির্বাচন কমিশন। এতে দুই লাখ সেট ইভিএম কেনার কথা বলা হয়। ‘নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ নামের প্রকল্পের পুরো টাকা দেবে সরকার। প্রকল্পে ইভিএম কিনতে খরচ হবে ৬ হাজার ৬৬০ কোটি ২৯ লাখ টাকা বা প্রায় ৬৫ কোটি ডলার। যার বেশির ভাগই খরচ হবে বিদেশ থেকে ইভিএম সরঞ্জাম আমদানিতে, যা আগামী এক বছরেই ব্যয় হবে। দেশের চলমান অবস্থায় এ বিষয়টিও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, নিয়ম অনুযায়ী, যেকোনো প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের আগে অবশ্যই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা করতে হয়। যেখানে প্রকল্পের ওপর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। কিন্তু ইভিএম প্রকল্পে এখনো পিইসির সভাই হয়নি। পিইসি পরবর্তী ধাপ পার হতেও মাসখানেক সময় লাগতে পারে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ওপর পর্যবেক্ষণসহ সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সায় পাওয়ার ওপর নির্ভর করছে ইভিএম প্রকল্পের ভাগ্য।

বাজেটস্বল্পতায় উপনির্বাচনে সিসি ক্যামেরা বন্ধ থাকছে বাজেটস্বল্পতার কারণে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি হতে যাওয়া ছয়টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।

গতকাল বগুড়ার দুটি আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় রাশেদা সুলতানা এ কথা বলেন। বগুড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।

নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, দেশে সব নির্বাচন সিসি ক্যামেরা দিয়ে করাও দুরূহ ব্যাপার। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত