Ajker Patrika

তলপেটের মেদ কমাতে

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী 
তলপেটের মেদ কমাতে

শুরুতেই বলছি, তলপেটের মেদ খুব বিপজ্জনক। এটি শারীরিক ঝুঁকি এবং বিভিন্ন ক্রনিক রোগ, যেমন ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে এই ‘বেলি ফ্যাট’ বা তলপেটের মেদ দূর করা যায় সহজ উপায়ে। এগুলোর অন্যতম উপায় হলো খাদ্যতালিকায় আঁশজাতীয় খাবার রাখা। খাবারের আঁশ দুই ধরনের হয়ে থাকে। এর একটি দ্রবণীয়, অন্যটি অদ্রবণীয়।

দ্রবণীয় আঁশ পানিতে মিশে যায়। এটি জেলির মতো বস্তু তৈরি করে এবং পানি যুক্ত করলে আয়তনে বাড়ে। দ্রবণীয় আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে আছে ওটমিল, শিমজাতীয় খাবার, যেমন মটর, শিম, ডাল, বার্লি, ফল ও সবজি এবং কমলা, আপেল ও গাজর। দ্রবণীয় আঁশের উপকারিতা অনেক। এগুলোর মধ্যে আছে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম রাখা, গ্লুকোজের মাত্রা সীমিত করা, ওজন কমানোসহ অন্ত্রের নড়াচড়া বাড়ানো।

অদ্রবণীয় আঁশ পানির সঙ্গে ক্রিয়া করে না। বিভিন্ন বীজ, ফলের খোসা, গমের রুটি ও বাদামি ভাতে এই আঁশ থাকে। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অদ্রবণীয় আঁশ গুরুত্বপূর্ণ। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এই আঁশ দরকারি। এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

আমাদের নিম্নান্ত্রে আছে ১০০ মিলিয়ন ভালো ব্যাকটেরিয়া। দ্রবণীয় আঁশ খেলে অন্ত্রের এই উপকারী জীবাণুগুলোর বৈচিত্র্য বাড়ে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো ভিটামিন প্রক্রিয়াজাত এবং সহজে বর্জ্য নিষ্কাশন করতে সহায়তা করে। যাঁরা দ্রবণীয় আঁশ বেশি খান, তাঁদের তলপেটে মেদ জমতে পারে না। শরীরে এই আঁশ হজম হয় না বলে অপরিবর্তনীয় অবস্থায় চলে যায় অন্ত্রে। সেখানে গেলে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার এনজাইম হজম করে দ্রবণীয় আঁশ। এতে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। আর এভাবে সেই আঁশ প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে জীবাণুদের পুষ্টি জোগান দেয়। আঁশের এই হজম হওয়াকে বলে ফারমেনটেশন। এ থেকে উৎপন্ন হয় শর্ট চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড। এমন শর্ট চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড তলপেটে মেদ জমতে বাধা দেয়। পাশাপাশি কোলন ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে।

তলপেটের মেদ কমানোর আগে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। দ্রবণীয় আঁশজাতীয় খাবার ক্ষুধা কমায়। এতে ক্যালরি গ্রহণ কমে। ফলে কমে ওজন ও তলপেটের মেদ। 

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত