Ajker Patrika

মুন্সিগঞ্জে বাড়ছে মশাবাহিত রোগ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৫৩
মুন্সিগঞ্জে বাড়ছে মশাবাহিত রোগ

মুন্সিগঞ্জে উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে মশার উপদ্রব ও মশাবাহিত রোগ। গত দুই মাসে জেলায় ৩১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া মশাবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।

গত বুধবার সদর উপজেলার দুই পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলা সদরের একাধিক স্থানে অপরিকল্পিত আবর্জনার স্তূপ, ময়লার নালা ও বসতবাড়ির বিভিন্ন স্থানে জমাটবাঁধা পানিসহ বিভিন্ন জলাশয় এখন মশার বংশ-বিস্তারের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। বাসাবাড়ি, অফিস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিনোদনকেন্দ্রে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কয়েল কিংবা এক্সপ্রে দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না মশার উপদ্রব। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, লোক দেখানো মশকনিধন কার্যক্রম চলে মাঝেমধ্যেই। মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার উদ্যোগে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে মশা নিয়ন্ত্রণ মাঝেমধ্যে কার্যক্রম চললেও মিরকাদিম পৌরসভায় নেই তার ছিটেফোঁটাও।

জেলার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু অথবা মশাবাহিত রোগের আশঙ্কা নিয়ে প্রতিদিনই আসছেন রোগীরা। প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া কিংবা মশাবাহিত নানা রোগে।

বুধবার জেলা সদর হাসপাতালে দেখা গেছে মশাবাহিত রোগে চিকিৎসা নিচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষ। চিকিৎসাধীন সদর উপজেলার মানিকপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা শামসুদ্দিন শিকদার (৬২) বলেন, ‘মশার অত্যাচারে শুধু রাতে নয়, দিনের বেলায়ও শান্তিতে থাকা যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিটি ঘরেই সর্দি-কাশি-জ্বরসহ মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীর দেখা মিলছে।’

একই অভিযোগ করেন হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে মশাবাহিত রোগের চিকিৎসাধীন আরেক শিশু রোমানের (৯) বাবা ও মিরকাদিম পৌরসভার কালিন্দীপাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা রবিন ভূঁইয়া (৪৫)। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মশার উপদ্রব বেড়েই চলেছে। তবু মশা নিয়ন্ত্রণে নীরব ভূমিকায় পৌর কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়দের উদ্যোগে মাঝেমধ্যে মশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও, এসব মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কোনো কাজেই আসছে না।’

এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও প্রতিদিনই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। দুই মাসে জেলায় ৩১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। তাই চিকিৎসকেরা বলছেন মশা নিয়ন্ত্রণে জোরালো কার্যকরী ব্যবস্থা না নিলে ডেঙ্গু ছাড়াও দ্রুত ছড়াতে পারে চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ, যা মহামারির আকার ধারণ করবে বলেও মনে করছেন তারা।

জেলা বিএমএ শাখার সভাপতি ডাক্তার আক্তার হোসেন বাপ্পি বলেন, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে জেলাজুড়ে বেড়েই চলেছে মশার উপদ্রব। বাসাবাড়িসহ একাধিক স্থানে ও জমাটবাঁধা পানি নিষ্কাশনের পৌর কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেই। তাই ঠেকানো যাচ্ছে না মশার বংশ-বিস্তার। গড়ে প্রতিদিন মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এ জেলার ৫ জন মানুষ।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাক্তার কামরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় মশাবাহিত রোগের নানা বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মশার বংশ-বিস্তার ঠেকাতে সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও ভূমিকা রাখা উচিত, তা না হলে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ আরও বাড়বে বলেও মনে করছেন।

তবে সদরের দুই পৌর মেয়রের দাবি মশা নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট তৎপর রয়েছে তারা। আবর্জনা থেকে যেন কোনোভাবে মশার বংশ-বিস্তার বৃদ্ধি না পায় এ ব্যাপারেও নজরদারি রয়েছে তাঁদের। মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. ফয়সাল বিপ্লব বলেন, মশার উপদ্রব ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং নিয়মিতই পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে মশা মারার ওষুধ দেওয়াসহ ভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মিরকাদিম পৌরসভার পৌর মেয়র আব্দুস সালাম বলেন, শিগগিরই মশক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা। পাশাপাশি পৌর এলাকার যেসব এলাকায় মশার প্রকোপ বেড়েছে সেসব এলাকায় মশক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দিতে এরই মধ্যে পৌর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত