Ajker Patrika

যমুনায় ভাসমান জলকুটির

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ মে ২০২২, ১৭: ১৮
যমুনায় ভাসমান জলকুটির

বগুড়ার সারিয়াকান্দির অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র কালীতলা গ্রোয়েন বাঁধ। এখানে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক বেড়াতে আসেন যমুনা নদী এবং গ্রোয়েন বাঁধের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। এ ছাড়া উপজেলার ব্যস্ততম নৌঘাট এখানেই, যেখানে জামালপুর এবং বগুড়া জেলার হাজারো যাত্রী নৌপথে যাতায়াত করেন। এলাকার কয়েকজন তরুণ-তরুণী এখানে তৈরি করেছেন ভাসমান জলকুটির, যেখানে সাশ্রয়ী মূল্যে মিলছে ফাস্ট ফুড আর জলখাবার।

খাবার তৈরিসহ পরিবেশনের কাজ করছেন তাঁরা নিজেরাই। এই উদ্যোক্তাদের বেশির ভাগ শিক্ষিত বেকার ছিলেন। তাঁরা বলছেন, চাকরি পেতে সময় নষ্ট না করেই জলকুটির তৈরির সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এখানে আবাসিক রিসোর্ট করারও পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।

এদিকে এখানে আসা পর্যটকেরা বলছেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি ভাসমান জলকুটিরে খাবার খাওয়া তাঁদের কাছে আনন্দের বিষয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার কয়েকজন বেকার ছেলেমেয়ে গত ঈদুল ফিতরের পরদিন থেকে কালীতলার এই নৌঘাটের যমুনা নদীতে ভাসমান জলকুটির তৈরি করেছেন। এতে ব্যবহার করেছেন কয়েকটি প্লাস্টিক ড্রাম। তার ওপর কাঠের পাটাতন দিয়েছেন। এর ওপরে একটি টিনের ঘর এবং এর চারপাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই জলকুটির।

জলকুটিরে ফুচকা, সমুচা, ফালুদা, লাচ্ছি, আইসক্রিম, চা, কফিসহ নানা ধরনের জলখাবার পাওয়া যায়। যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই জলকুটিরের খাবারগুলো তাঁরা নিজ হাতে তৈরি করেন।

কাজগুলো কয়েকজনের মধ্যে ভাগ করা আছে। এর মধ্যে খাবার তৈরি করেন মাস্টার্স পাস করা রাজিয়া সুলতানা ইতি এবং সাবা রায়হান বিধু। আর কাস্টমারদের খাবার পরিবেশনা করেন স্নাতক পাস করা আব্দুস সালাম, মাস্টার্স পাস বদরুল ইসলাম পরশ, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজু আহম্মেদ এবং বগুড়া পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র ওমর আলী।

সাবা রায়হান বিধু বলেন, ‘জলকুটিরের সব কাজ আমরা নিজেরাই করি। নিজেদের কাজ নিজেরা করার মধ্যে আমরা একধরনের আনন্দ খুঁজে পাই। নিজ হাতে খাবার তৈরি এবং পরিবেশন করি বলে আমাদের খাবার শতভাগ স্বাস্থ্যসম্মত।’

রাজিয়া সুলতানা বলেন, চাকরির পেছনে না ঘুরে এই ভাসমান রেস্তোরাঁ তৈরি করেছেন। পর্যটকেরা এখানে বসে নাশতা করতে ভালোই পছন্দ করেন। ভবিষ্যতে এখানে একটি আবাসিক রিসোর্ট গড়ে তোলার স্বপ্ন তাঁদের রয়েছে।

কথা হয় পর্যটক সজল শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি বগুড়া থেকে যমুনা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছি। যমুনায় ভাসমান জলকুটিরে নাশতা করে খুবই আনন্দ লেগেছে। এখানে পরিজন নিয়ে ভালো করে বসে যমুনার সৌন্দর্য উপভোগ এবং মজাদার নাশতা একসঙ্গে উপভোগ করা যায়।’

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, যমুনায় ভাসমান জলকুটিরের উন্নয়নের জন্য সামান্য সহযোগিতা করেছেন। চাকরির পেছনে না ছুটে তাঁদের মতো বেকার যাঁরা আছেন, তাঁদের জন্য এ ধরনের কাজ অনুকরণীয়। এ ধরনের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত