Ajker Patrika

বোরো কাটা শেষ, লাভের আশা

জহিরুল ইসলাম জয়, হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর)
আপডেট : ১২ মে ২০২২, ১৪: ০০
বোরো কাটা শেষ, লাভের আশা

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় চলতি বছর বোরো চাষাবাদ হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে। এরই মধ্যে প্রায় ৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ধান কৃষক নির্বিঘ্নে ঘরে তুলেছে।

হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৯ হাজর হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেই সঙ্গে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন। বিগত বছরেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো আবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর প্রায় ১০০ হেক্টর জমি কম থাকলেও বাম্পার ফলনের আশা নিয়ে কাজ করেছে কৃষি অধিদপ্তর।

ইতিমধ্যে পৌরসভাসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের কৃষি মাঠে তিন শতাধিক প্রদর্শনী করা হয়েছে। গত কয়েক বছরের এবারও ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার আশা কৃষকের। ধানের আশানুরূপ মূল্য পেলে উৎপাদনের খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকবে।

দেখা যায়, গত কয়েক যুগ ধরে হাজীগঞ্জের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষি মাঠে দুই ধরনের ফসল উৎপাদন হয়ে আসছে। বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলের মাঠগুলো নিচু হওয়ায় ও একাধিক ইটভাটা গড়ে ওঠায় শুধু খরা মৌসুমে ইরি-বোরো চাষাবাদ ছাড়া অন্য কোনো ফসল উৎপাদন করতে দেখা যায় না।

উপজেলার উত্তর অঞ্চলের কৃষি মাঠে তিন ধরনের ফসল উঠতে দেখা যায়। বর্ষার সময় আউশ ধানের ফলন, খরা মৌসুমে তিন মাসের রবি শস্য ফলন উৎপাদন শেষে বোরো ধানের আবাদ হয়। যে কারণে উত্তর অঞ্চলে এখনো প্রায় ৫০০ একর কৃষি জমির ধান মাঠে পড়ে আছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এখানকার কৃষকেরা গত এক মাসে পুরোদমে ব্যস্ত সময় পার করছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জমির ফসল ঘরে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। কখনো বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকেরা মাঠে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করছে।

উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন, রমিজউদ্দিন, আমির হোসেন ও আক্তার হোসেন বলেন, ‘মূলত রমজান মাস থেকে আমরা ধান কাটা শুরু করেছি। এখন মাঠে তেমন কোনো ফসল নেই। তবে খেরের পালার কাজ চলছে।’

হাটিলা গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন, আজাদ ও শুকু মিয়া জানান, ‘চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমরা নির্বিঘ্নে ধান কাটতে পেরেছি। তবে শেষ দিকে এসে বৃষ্টিতে কাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। তারপরও ধানের ন্যায্য মূল্য পেলে কষ্ট দূর হবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম জানান, ‘চলতি মৌসুমে হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ হয়েছে। সেই লক্ষ্যে কৃষকেরা এবার জমিতে জিরাশাইল, পারিজা, ব্রি-২৮, ২৯ ও ৫০ এবং বি-আর ১০ জাতের ধানের আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছে। সেই সঙ্গে উন্নত জাতের ধান প্রদর্শনী প্রকল্পের লক্ষ্যে সরকারি প্রাপ্তি সাপেক্ষে ২৫০টির বেশি প্রদর্শনী হয়েছে। এসব প্রকল্পে আমরা পৌর এলাকাসহ পুরো উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪-৫টি করে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রেখেছি।’

আবহাওয়ার সতর্কতা তুলে ধরে এ কর্মকর্তা ইতিপূর্বে উপ-কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নির্দেশনা দিয়েছেন কাঁচা-পাকা ধান যেন কৃষকেরা দ্রুত কেটে নেন।

কৃষি অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, উপজেলায় ছোট-বড় দেড় শতাধিক কৃষি মাঠ রয়েছে। যা থেকে এ বছরও ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত