Ajker Patrika

দরপত্র ছাড়াই ঠিকাদার নিয়োগের উদ্যোগ

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
দরপত্র ছাড়াই ঠিকাদার নিয়োগের উদ্যোগ

দরপত্র আহ্বান না করেই দর বাড়িয়ে আবার আগের পরিবহন ঠিকাদারদের নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের ঘটনা এটি। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে ২ নভেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সড়ক পরিবহন ঠিকাদার (ডিআরটিসি) সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হাই। 

সমিতির ওই নেতা বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক যেহেতু ২০২০ সালে ঠিকাদারদের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাই অন্তর্বর্তীকালের জন্য বর্তমান ঠিকাদারদের নিয়োগ দিতে এই উদ্যোগ। এই উদ্যোগে বর্তমানের চেয়ে ১৬ শতাংশ দর বাড়ানো হবে। এই লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বানের পরিবর্তে পরিবহন ঠিকাদারদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই চিঠির মাধ্যমেই নিয়োগ করা হবে পরিবহন ঠিকাদার। 

খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের আওতাধীন বিভাগীয় সড়ক পরিবহন ঠিকাদারদের মেয়াদ শেষ হয় তিন বছর আগে—২০২০ সালের ডিসেম্বরে। এই দপ্তরে ৪৬৯টি প্রতিষ্ঠান পরিবহন ঠিকাদার হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে। ২০২০ সাল থেকে এত দিন অনিবার্য কারণ দেখিয়ে খাদ্য পরিবহন ডিআরটিসি ঠিকাদারদের তিন মাস অন্তর মেয়াদ বাড়ান চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক। এবার দরপত্র ছাড়াই আবার ১৬ শতাংশ দর বাড়িয়ে আগের ঠিকাদারকে পুনরায় নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে ২ নভেম্বর জারি করা বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, বর্তমান ঠিকাদারদের ২৬ নভেম্বর বেলা ১টার মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছে। ২০২২-২০২৩ সালে ৭৫ শতাংশ কাজের সন্তোষজনক ভিত্তিতেই নিয়োগ দেওয়া হবে এবং বর্তমান দরের ওপর ভিত্তি করে ১৬ দশমিক ৯২ শতাংশ দর বাড়ানো হবে। 

ডিআরটিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি দুই বছর অন্তর দরপত্র আহ্বান করে নতুন পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার কথা। কিন্তু এরপরও ২০২০ সালে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ঠিকাদারদের বারবার সময় বাড়িয়ে কাজ দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ তাঁদের মেয়াদ চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে খাদ্য বিভাগ। 

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এইচ এম কায়সার আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি তা ধরেননি। এদিকে বিভাগীয় খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের খাদ্য নিয়ন্ত্রকের আওতাধীন অভ্যন্তরীণ সড়ক পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না। 

খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার হিসেবে ৪৬৯টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত রয়েছে। 
একটি সূত্র জানায়, এসব ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় পরিবহন না করে সরকারি চাল চুরি করে বাইরে বিক্রিতে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। গত ২৮ জুন চট্টগ্রাম ডিআরটিসির নিবন্ধিত খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার মেসার্স হারুন এন্টারপ্রাইজকে একটি ট্রাকে ১৫ টন (৩০৩ বস্তা) চাল রাঙামাটির সদর গুদামের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু চাক্তাই আড়তে চুরি করে বিক্রির সময় পুলিশের হাতে আটক হয় সেই ট্রাক। এ ছাড়া গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নোয়াখালীর চরবাটা গুদামে চাল পাঠানো হলে সংশ্লিষ্ট পরিবহন ঠিকাদার এসব চাল পাহাড়তলি বাজারে পাচারের সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি খাদ্যশস্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ৪৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় নগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার এক ঠিকানায়। খাদ্য বিভাগের (চট্টগ্রাম অঞ্চলের চলাচল ও সংরক্ষক) নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদুর্শী বলেন, ঠিকাদারদের তিন মাস অন্তর মেয়াদ বাড়ানো হয়। ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত