Ajker Patrika

খানাখন্দে ভরা পৌর সড়ক

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি
আপডেট : ০৯ মে ২০২২, ১২: ২৩
খানাখন্দে ভরা পৌর সড়ক

রাঙামাটি পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। প্রতিনিয়ত তা বাড়ছে। এতে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি পথচারীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। বর্ষায় এই দুর্ভোগ দ্বিগুণ হবে বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

রাঙামাটি পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কগুলো বেহাল। এগুলোর মধ্যে ভেদভেদি থেকে আসামবস্তি, আসামবস্তি থেকে স্বর্ণ টিলা হয়ে তবলছড়ি বাজার সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভেদভেদি বাজার-সংলগ্ন সড়কের ১৫ ফুটের বেশি অংশের কার্পেটিং প্রায় এক বছর আগে পুরোপুরি উঠে গেছে। সড়কের গর্তে জমে থাকে পানি। গাড়ির চাকা গর্তে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাদাপানি পথচারীদের ওপর ছিটকে পড়ে। এটা প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। জানা গেছে, ওই সড়ক স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) দেখাশোনা করে।

একই অবস্থা সংঘরাম বিহার-সংলগ্ন বাজার এলাকায়। সড়কের ৩০ ফুটের বেশি অংশের কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এখানেও কঙ্কর ফেলে অস্থায়ী কাজ করে চলে যায় এলজিইডি।

সংঘরাম বাজারের দোকানি স্বপন চাকমা (৩৫) বলেন, ‘এই সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। রং সাইড গিয়ে হলেও সবাই রাস্তার ভালো অংশ দিয়ে গাড়ি চালাতে চান। এটি করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে মোটরসাইকেলচালকেরা দুর্ঘটনার শিকার হন। এ ছাড়া গর্তে পানি জমে থাকার কারণে পথচারীদের গায়ে কাদাপানি ছিটকে পড়ে।’

একই চিত্র আসামবস্তি বাজারের ত্রিমোহনী মোড়ে। এখানে সড়কে ৪০ ফুটের বেশি অংশের কার্পেটিং উঠে গর্ত তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া আসামবস্তি তবলছড়ি সড়কের ঝগড়াবিল হেডম্যান বাড়িসংলগ্ন প্রায় ৫০০ ফুট এলাকায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে শত শত গর্ত তৈরি হয়েছে।

স্বর্ণটিলা এলাকায় সাবেক মেয়রের বাড়িসংলগ্ন এলজিইডি রাস্তায় সেতুর নির্মাণকাজ ৩ মাস আগে শেষ হলেও সংযোগ সড়ক ঠিক করে দেওয়া হয়নি। ফলে কাদা পেরিয়ে সেতু পার হচ্ছে যানবাহনগুলো।

অন্যদিকে সেতুর কাজ চলাকালে বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হয় স্বর্ণটিলা পৌর সড়কটি। এ সড়কের অর্ধেকের বেশি এলাকায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। একই চিত্র রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কোতোয়ালি থানাসংলগ্ন এলাকায়।

রাঙামাটি সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু বলেন, আসামবস্তি থেকে তবলছড়ি এলজিইডির সড়কটি যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে গেছে। এ সড়কে অটোরিকশা চালাতে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে। যাত্রীরা কষ্ট পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে গর্ভবতী নারী ও মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভোগা রোগীরা।’

মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্বর্ণটিলা থেকে গার্লস স্কুল পর্যন্ত সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এটি সংস্কারের অনুরোধ জানাতে কমিটির সদস্যরা মেয়রের সঙ্গে দেখা করেছে। মেয়র সড়কটি সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখনো কাজ শুরু করা হয়নি।’

রাঙামাটি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাচিং মারমা বলেন, ‘আসামবস্তি, স্বর্ণটিলা এলাকার সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনার খবর পাচ্ছি। গাড়ি গর্তে পড়ে বিকল হচ্ছে। এককথায় দুর্ভোগ বেড়েছে। এ নিয়ে দ্রুতই এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে দেখা করব।’

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি বলেন, ‘সড়কগুলোর বিভিন্ন অংশে কার্পেটিং উঠে গেছে, এটা ঠিক। ওগুলো সংস্কারের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখেছি। রাস্তাটির তবলছড়ি থেকে ভেদভেদি পর্যন্ত ঠিক করতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে অর্ধেক রাস্তা সংস্কার করা যাবে। আমরা শিগগির কাজ শুরু করব। আগে তবলছড়ির দিক থেকে আসামবস্তির কাজ করা হবে।’

পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘স্বর্ণটিলা থেকে গার্লস স্কুল পর্যন্ত সড়কটি পৌরসভার। এটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। চলতি বছর এ সড়কে কাজ হয়তো হবে না। আগামী বছর এটির কাজ হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত