Ajker Patrika

শীতকালে বদলে যায় তাঁদের পেশা

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ২৩
Thumbnail image

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির শহর ঢাকা। হরেক রকমের মানুষের বাস এ শহরে। তাঁদের পেশাও হরেক রকম। আবার কেউ মৌসুমের সঙ্গে পেশাও বদলে ফেলেন। এমনই কয়েকটি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

ভোরে কুয়াশার চাদর ভেদ করে সাইকেলে মৌসুমি সবজি নিয়ে রাজধানীতে আসেন ২১ বছর বয়সী রতন আলী। রতনের বাড়ি রূপগঞ্জে। তিনি সপ্তাহের দুই দিন ফার্মগেটের তেজকুনীপাড়ার বিভিন্ন অলিগলিতে সবজি বিক্রি করেন। রতনের মতে, বাজারে সবজি নিয়ে বসার মতো এত সবজি তাঁর কাছে নেই। তাঁর জমিতে যতটুকু সবজি ফলে, তা নিয়ে তিনি আসেন শহরে। রতন বলেন, তিনি মূলত ভ্যান চালান। পাশাপাশি সামান্য জমিতে ফলানো সবজি শহরে এনে বিক্রি করেন।

শীতের সবজির পাশাপাশি শীতের কাপড়, শীতের খাবারেও থাকে ভিন্নতা। শীতকালে শহরের অলিগলিতে দেখা যায় শীতের কাপড়ের সারি সারি দোকান। গ্রামাঞ্চলে শীতের সকালেই রাস্তার পাশে বসতে দেখা যায় ভাপা, চিতইসহ হরেক রকম পিঠার দোকান। কিন্তু শহরে এই দোকানগুলো মূলত বসে বিকেলের দিকে।

আমেনা বেগম গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করেন চারটি বাড়িতে। এরপর সন্ধ্যায় মেয়েকে নিয়ে সড়কের পাশে বসেন পিঠার দোকানে। সেই দোকানে বেচাকেনা চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। আমেনা বলেন, ‘সন্ধ্যার পর এখানে বসি। যতক্ষণ পিঠা বানানোর সরঞ্জাম থাকে, ততক্ষণ এই দোকান থাকে। বাসাবাড়িতে কাজ কইরা যে সময় পাই, সেই সময়টায় পিঠা বিক্রি করে বাড়তি কিছু আয় হয়।’

ফার্মগেট এলাকার তেজকুনীপাড়ায় একটা ঘরে সকালের নাশতা বিক্রি করেন তোফাজ্জল। আর বিকেলে বসেন হরেক রকমের পিঠা নিয়ে। তোফাজ্জল বলেন, ‘এটা আমাদের মৌসুমি ব্যবসা। সকালে হোটেল চলে আর পাশাপাশি মৌসুম অনুযায়ী কখনো পিঠা, কখনো আম বা অন্য মৌসুমি ফল বিক্রি হয়।’

ঢাকা উদ্যানের বাজারে পিঠা বিক্রি করেন রাহেলা। ষাটোর্ধ্ব রাহেলা জানান, আগে ছেলের বউ এখানে পিঠার দোকান নিয়ে বসতেন। তিনি মারা যাওয়ায় এবার তাঁকেই বসতে হয়েছে পিঠা নিয়ে। বেচাবিক্রিও খারাপ না।

বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে ফুটপাতে মোফাজ্জল মিয়ার টুপির দোকান। মূলত ফুটপাতে তিনি জিনসের প্যান্ট বিক্রি করেন। আর শীতে টুপির দোকান নিয়ে বসেন তিনি। মোফাজ্জল বলেন, ‘টুপিগুলো গাজীপুরের কারখানা থেকে কিনা আনি। গতবার করোনার কারণে বেচাকেনা ভালো হয় নাই। এবার ভাবছিলাম বিক্রি হবে; কিন্তু শীতই নাই শহরে, বিক্রি হবে কীভাবে?’

রবিউল আলম চা বিক্রির পাশাপাশি কাপড়ও বিক্রি করেন। তিনি জানান, এটা তাঁর মৌসুমি ব্যবসা। শীত ও গরম দুই মৌসুমেই তিনি কাপড় বিক্রি করেন। বিকিকিনিও মন্দ না।

ভ্যানে কাপড় বিক্রি করছে রবিউলের ছোট ভাই মোশতাক। সে গ্রামে লেখাপড়া করত। কিন্তু করোনার কারণে তা বন্ধ হওয়ায় রবিউল তাকে নিয়ে এসেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত