Ajker Patrika

পাহাড়ি ঢলে ৫৫ গ্রাম প্লাবিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৫: ৩৩
পাহাড়ি ঢলে ৫৫ গ্রাম প্লাবিত

টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্তত ৫৫টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে সীমান্তবর্তী অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেঙে গেছে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কর্নেল বাজার সংলগ্ন আড়িয়ল গ্রামের একটি সড়ক। এতে ওই সড়কে এখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গতকাল শনিবার ভোরে পানির প্রবল স্রোতে সড়কটি ভেঙে যায়। এ ছাড়া তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও পুকুর। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, আকস্মিক এই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নানা ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রশাসন সূত্র জানা যায়, গত দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল হাওড়া নদীতে এসে পড়ছে। এ কারণে গতকাল শনিবার ভোরে কর্নেল বাজার-আইড়ল সড়কের আড়িয়ল এলাকায় সড়কটি ভেঙে যায়। এতে আশপাশের এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

অন্যদিকে গত শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হওয়া অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে নদীর পানি বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে রাতে হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে আখাউড়ার সীমান্তবর্তী মোগড়া ও দক্ষিণ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করে।

তলিয়ে যায় উপজেলার সীমান্তঘেঁষা মোগড়া ইউনিয়ন ও দক্ষিণ ইউনিয়নের আখাউড়া-আগরতলা সড়কের দুপাশের কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আবদুল্লাহপুর, বঙ্গেরচর, রহিমপুর, সাহেবনগর, খলাপাড়া, উমেদপুর, সেনারবাদী, কুসুমবাড়ি, আওরারচর, ছয়ঘরিয়া, বাউতলা, দরুইন, বচিয়ারা, নোয়াপাড়া, নিলাখাত, টানুয়াপাড়া, ধাতুর পহেলা, চরনারায়ণপুর ও আদমপুর তলিয়ে যায়। তলিয়ে গেছে উপজেলার মনিয়ন্দ ও ধরখার ইউনিয়নের ভাটামাথা, চন্দ্রপুর, ধরখার, ভিনাউটি, ভবানীপুর, রুটি, খারকুট, মিনারকুট, কুড়িবিল, পদ্মবিল, টনকি, ইটনা, কর্নেল বাজারের বিস্তীর্ণ এলাকা।

এদিকে আখাউড়া-আগরতলা বন্দর এলাকার সড়কেও পানি উঠেছে। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আমদানি-রপ্তানিকারক বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে।

হাওড়া নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে নানা ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। বন্যাদুর্গতদের দুর্ভোগ লাঘবে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আকস্মিক এ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নেওয়াও শুরু হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ: ভারতের মেঘালয় এবং আসাম থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জ হয়ে আসা উজানের ঢলে কিশোরগঞ্জের শতভাগ হাওর অধ্যুষিত ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামসহ ছয়টি উপজেলার ২৫টি গ্রাম ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে পানি প্রবেশ করছে ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, তাড়াইল ও করিমগঞ্জ উপজেলার গ্রামগুলোতে। ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ছেলে-মেয়ে, ধান, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, গোখাদ্যসহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় গৃহস্থালির জিনিসপত্র নিয়ে বিপাকে পড়েছে হাওরাঞ্চলের মানুষ।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় স্কুলগুলোকে বন্যার্তদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর কিছু পরিবার আশ্রয় নেন।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, ‘বন্যা মোকাবিলায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। প্লাবিত গ্রামগুলো থেকে বন্যা দুর্গতদের আনার জন্য লোকবলসহ ট্রলার প্রস্তুত রেখেছি। এ ছাড়া বন্যা দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শুরু করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত