Ajker Patrika

ধানগাছে পোকা, খোঁজ নেই কৃষি কর্মকর্তাদের

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ মে ২০২২, ১১: ৩৬
ধানগাছে পোকা, খোঁজ নেই কৃষি কর্মকর্তাদের

মানিকগঞ্জে সাটুরিয়ায় ধানে পোকা লাগায় কৃষকেরা কাঁচা ধানই কাটছেন। ঈদের এক সপ্তাহ আগ থেকে এ পোকার আক্রমণ শুরু হয়। প্রথমে কিছু জায়গা, একপর্যায়ে পুরো জমির ধান পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়। আতঙ্কে কৃষকেরা কাঁচা ধানই কাটতে বাধ্য হচ্ছেন। এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা।

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের আগে বৃষ্টি ও উচ্চ তাপমাত্রা বেশি থাকায় বাদামি ঘাসফড়িং নামে এক জাতের পোকা আক্রমণ করে। এ পোকা গাছের গোড়া ও আগা কেটে ফেলে। এতে করে গাছের পাতা লাল হয়ে তাতে মড়ক ধরে। কৃষি কর্মকর্তার অভিযোগ, কৃষকদের এ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার পরও তাঁরা কীটনাশক স্প্রে করছেন না। ফলে কিছু কিছু আবাদি জমিতে বাদামি রঙের ঘাসফড়িং পোকা লাগায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক।

কৃষি অফিস জানায়, ৫ একর জমিতে এই পোকার আক্রমণ হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ উপজেলার পুরো এলাকায় এ পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ঈদের ছুটিতে কৃষি কর্মকর্তারা ছুটিতে থাকায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় কৃষক তোতা মিয়া বলেন, ‘কারেন্ট পোকা নামে এক ধরনের নতুন পোকা আমার খেতে আক্রমণ করে। এতে আধা পাকা ধানখেতের কিছু অংশ পুড়ে যায়। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তাঁদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি, তাই আধা পাকা ধানই কেটে ফেলতে হয়েছে। সময়মতো কৃষি অফিসের পরামর্শ পেলে হয়তো পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যেত।’

দরগ্রামের কৃষক হামিদ ও দেলুয়া গ্রামের লিয়াকত আলীর আবাদি বোরো ধানে পোকা লাগলে তাঁরা কাঁচা ধানই কেটে নেন। কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো লাভ না হওয়ায় তাঁরা ধান কেটে ফেলেন। স্থানীয় কৃষক জামান হোসেন, শামীম হোসেন ও কুদ্দুস মিয়া জানান, একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে ধান কাটার শ্রমিকের মূল্য বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে শ্রমিক এনে কাঁচা ধান কাটাতে হচ্ছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে সাটুরিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা খলিলুল রহমান বলেন, ‘উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। এমনকি এ বিষয়ে সাটুরিয়ার কৃষকদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করে প্লেনাম, মিপসিম ও সামসিম কীটনাশক স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁরা পরামর্শ গ্রহণ করেননি।’

এ বিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ খ ম নুরুল হক বলেন, ‘আমি একটি পোকা ধরে এনে বোতলে আটকে রেখেছি। পোকার আকৃতি ছোট ও কালো রঙের।’ এ বিষয়ে সাটুরিয়ার কৃষি অফিসের কৃষি কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা কোনো তথ্যই জানেন না বলে জানান তিনি।

সাটুরিয়ার কৃষি কর্মকর্তা খলিলুল রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে ২৭ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সমসময় কাজ করছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত