Ajker Patrika

পড়ালেখা নিয়ে বিপাকে টিকাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

আরিফুল ইসলাম রিগান, কুড়িগ্রাম
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৫৮
Thumbnail image

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার মধ্যেও শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে ১২ থেকে ১৮ বছরের (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) শিক্ষার্থীদের টিকা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। অনেকের বয়স ১২ না হলেও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে, এ অবস্থায় টিকা দেওয়াতে না পারায় তাদের পড়ালেখা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকেরা।

শিক্ষা বিভাগ জানায়, জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ২ লাখ ২১ হাজার শিক্ষার্থীর টিকার চাহিদা রয়েছে। এই বয়সসীমায় ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা টিকা নিচ্ছে। তবে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া অনেক শিক্ষার্থীর বয়স ১২ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাদের টিকা নেওয়া থেকে বিরত রাখা হচ্ছে।

কুড়িগ্রামের প্রতি উপজেলায় দুটি করে টিকাদান কেন্দ্র চালু করে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। সদর উপজেলায় কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ষষ্ঠ শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থীর ১২ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তারা টিকাবঞ্চিত হয়ে ফিরে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘আমার ছেলে এ বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু ওর বয়স সাড়ে ১১। ১২ বছর না হওয়ায় সে টিকা পাবে না। তাহলে সে ক্লাসে যাবে কীভাবে?’

সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের লক্ষ্মীকান্ত আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া খন্দকার। তার ১২ বছর হতে কয়েক মাস বাকি থাকায় টিকাকেন্দ্রে এসে ফিরে যেতে হয়েছে। ফলে অন্য সহপাঠীদের মতো সে ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন লামিয়া। লামিয়া বলে, ‘আমি বান্ধবীদের সঙ্গে টিকা নিতে এসেছি। কিন্তু ১২ বছর পূর্ণ না হওয়ায় আমাকে ফিরে যেতে হলো।’

লক্ষ্মীকান্ত আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বশির উদ্দিন বলেন, ‘১২ বছর পূর্ণ না হওয়ায় আমাদের স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থী টিকাবঞ্চিত হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, টিকা না নিলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারবে না।’

জেলার সিভিল সার্জন মনজুর এ-মুর্শেদ বলেন, ‘কোন শিক্ষার্থী টিকা পাবে আর কে পাবে না, এর তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা বিভাগের তালিকা অনুযায়ী আমরা টিকা সরবরাহ করছি। কেউ টিকাবঞ্চিত হলে সেই শিক্ষার্থীর ক্লাসে উপস্থিতির ব্যাপারে শিক্ষা বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে।’

জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিইও) শামসুল আলম বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক টিকা ছাড়া ক্লাসে উপস্থিত হতে দেওয়া হবে না। বয়স কম হওয়ার কারণে যেসব শিক্ষার্থী টিকাবঞ্চিত হচ্ছে, তাদের ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা শুধু সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করব।’

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় ২ লাখ ২১ হাজার শিক্ষার্থীর (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) জন্য টিকার চাহিদার বিপরীতে এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার ডোজ ফাইজারের টিকা পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) পর্যন্ত ৯২ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট টিকা সময়মতো পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত