Ajker Patrika

খোঁড়াখুঁড়িতে বেহাল নাখালপাড়া, দুর্ভোগ

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২২, ১০: ২৮
খোঁড়াখুঁড়িতে বেহাল নাখালপাড়া, দুর্ভোগ

খোঁড়াখুঁড়িতে রাস্তার দশা বেহাল। কোথাও তৈরি হয়েছে গভীর খাদ। আবার কোথাও তৈরি হয়েছে মাটির উঁচু ঢিবি। রাস্তার পাশের দেয়াল ধরে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে মানুষ। একটু অসতর্ক হলেই পা পিছলে খাদে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এখন ক্ষত-বিক্ষত এ রাস্তায় কোনো যানবাহন চলার উপায় নেই। এই চিত্র ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ায়।

গত বৃহস্পতিবার এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। নাখালপাড়ার বাসিন্দা ও তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী হাবিবা আলম জানালেন, ‘রাস্তা খোঁড়ার পর চলাচলে খুব অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে পিচ্ছিল কাদামাটি মাড়িয়ে রাস্তা পার হওয়া খুবই কষ্টসাধ্য।’

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তেজকুনিপাড়ার পোস্ট অফিসের মোড় থেকে বিজয় সরণি ফ্লাইওভার পর্যন্ত রাস্তা কেটে ড্রেনেজব্যবস্থা ঠিক করতে কাজ করছে সিটি করপোরেশন।

এলাকার শাহানুর ফার্মেসির মোবারক হোসেন জানান, দেড় মাস আগে রাস্তা কাটার কাজ শুরু হয়েছে। ঈদের সময় কয়েকদিন কাজ বন্ধ ছিল। কবে শেষ হবে জানি না।

নাখালপাড়ার ভেনাস গার্ডেনের নিরাপত্তা প্রহরী তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘রাস্তার মাটি কেটে আমাদের বাসার গেট বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। গতকাল নিজেরা মাটি সরিয়েছি। কবে রাস্তাটি স্বাভাবিক হবে আল্লাহ জানে।’

নাখালপাড়ার বিজয় সরণি অংশের এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘কিছু জায়গায় রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। তবে এখনো স্ল্যাব বসানো হয়নি। ফলে গত এক মাসে অন্তত তিনটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া রাস্তা পার হতে গিয়ে একজন পথচারীর হাত ভেঙেছে।’ এই ব্যবসায়ী আরও জানান, নাখালপাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সংসদীয় এলাকায় পড়েছে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও জানিয়েছেন।

সরেজমিনে কয়েকজন নারী ও পুরুষ শ্রমিককে রাস্তা কাটতে দেখা গেছে। সেখানে শ্রমিকদের নির্দেশনা দিচ্ছিলেন শরীফ নুর উদ্দিন প্রিন্স নামের একজন। তিনি নিজেকে ঠিকাদার বলে পরিচয় দেন। শরীফ নুর উদ্দিন প্রিন্স বলেন, ‘এই কাজের জন্য সিটি করপোরেশন আমাদের চার মাস সময় দিয়েছে। আমরা তার আগেই কাজ শেষ করব। মাত্র কয়েকদিন আগে কাজ শুরু হয়েছে।’

ডিএনসিসির তথ্য বলছে, তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ার রাস্তাটির ড্রেনেজব্যবস্থা ঠিক করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে জীবন কনস্ট্রাকশন ও রাবেয়া ট্রেডার্স। এর মধ্যে জীবন কনস্ট্রাকশন পেয়েছে ৫১ লাখ ২৯ হাজার ১৭২ এবং রাবেয়া ট্রেডার্স পেয়েছে ৫৫ লাখ ৯ হাজার ৯৭৬ টাকার কাজ। ৫ এপ্রিল থেকে ৪ আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। এই হিসাবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাস্তাটির মেরামতকাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু রাস্তার চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। খোঁড়াখুঁড়ির শুরু থেকে রাস্তাটিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন শাহানাজ বেগম। তিনি জানান, রাস্তা কাটার পর এখন যে অবস্থায় আছে, তা স্বাভাবিক হতে অন্তত আরও তিন মাস সময় লাগবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উন্নয়নকাজ চলার সময় কিছু সমস্যা তো হবেই। তারপরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতে নাখালপাড়ার রাস্তা মেরামতের কাজ শেষ করে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দেব। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আমরা ফলোআপ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত