Ajker Patrika

ঠিকাদারের ভুলে ভুগছে শিক্ষার্থী

বেলাব (নরসিংদী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২২, ১২: ৪২
ঠিকাদারের ভুলে ভুগছে শিক্ষার্থী

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ভুলে ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সররাবাদ ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ। এর ফলে শ্রেণিকক্ষ-সংকটে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সচেতন অভিভাবকদের সূত্রে জানা গেছে, শুরুতেই ভবন নির্মাণ নকশা অনুযায়ী শুরু করলেও একপর্যায়ে ঠিকাদার ভবনের এক প্রান্তের প্রস্থের চেয়ে অন্য প্রান্তের প্রস্থের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন ফুট ব্যবধান রেখে পাইলিংয়ের বেসমেন্ট ঢালাই করেন। তবে এই কাজের সঙ্গে ভবনের মূল কাঠামোর মিল নেই। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের কথায় কর্ণপাত না করে যেদিক দিয়ে বিল্ডিংয়ের মাপের হেরফের হয়, সেখান থেকে গোপনে এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে কেটে উভয় পাশের প্রস্থের সমান করে মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলে। তবে কাজের ত্রুটি থাকায় উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে নির্মাণকাজ আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বরাদ্দে ভবনটি নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৮২ হাজার ৪০০ টাকা। ২০২০ সালের ২২ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ৮ মাস অতিবাহিত হলেও নির্মাণকাজ কেবল ত্রুটিযুক্ত বেসমেন্টেই সীমাবদ্ধ।

প্রকল্প এলাকায় যাবতীয় তথ্যসংবলিত সাইনবোর্ড টাঙানোর নিয়ম থাকলেও গতকাল সরেজমিনে সররাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কোনো সাইনবোর্ড নেই।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, ভবন নির্মিত না হওয়ায় বিদ্যালয়ে পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা গতিশীল করার লক্ষ্যে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা বেগম বলেন, ‘ঠিকাদারের ভুলে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ। এর ফলে আমরা শ্রেণিকক্ষ-সংকটে ভুগছি। দ্রুত যাতে নতুন ভবনটি নির্মাণ করে দেওয়া হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

সল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন স্বপন বলেন, ভবনের মাপে ভুল থাকায় এলাকাবাসী নির্মাণে বাধা দিয়েছিল। ব্যাপারটা উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তারা বলছে, এখানে এসে মাটি সরিয়ে দেখবে বেসমেন্টের নির্মাণকাজের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না।

ভবন নির্মাণের কাজ পাওয়া মেসার্স নিঠুল কনস্ট্রাকশনের ঠিকাদার ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বিপ্লবকে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘তুমি ইঞ্জিনিয়ার অফিসে গেলা কেন? তুমি তো আমার সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারতে।’ ভবনের কাজ বন্ধের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেন বন্ধ, সেটা প্রকৌশল কার্যালয়কে জিজ্ঞাসা করো। আমি তোমার কাছে কিছু বলব না।’

উপজেলা প্রকৌশলী সামসুল হক ভূইয়াকে মোবাইল ফোনে ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মোবাইলে সব বক্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়। আপনি অফিসে আসেন।’ অফিসে গেলে তিনি বলেন, ‘তথ্য আইনে আবেদন করলেই কেবল তথ্য দেওয়া হবে। নতুবা না।’

পরে সামসুল হক ভূইয়া ভবন নির্মাণের ভুলের কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করে বলেন, ‘আমি আগেও একাধিকবার ভবনটি দেখতে গিয়েছি। আবার ইউএনও স্যারকে নিয়ে যাব। যদি কোনো সমস্যা থাকে বা ঠিক করা যায়, তাহলে ঠিক করব। নতুবা ঠিকাদারকে অবশ্যই নতুন করে ভবনটি নির্মাণ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত