Ajker Patrika

নদীর বুকে সবুজের দোলা

মির্জাপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২২, ১৬: ৪২
Thumbnail image

মির্জাপুরের বংশাই নদের বুকে এখন সবুজ ফসলের সমারোহ। শত শত বিঘা জমিতে আলু, গম, করলা, ভুট্টা, সরিষা, পটোল, সিম, পেঁয়াজ, রসুন, কপিসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়েছে। ভালো ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ভবিষ্যতে নদের বুকে পড়ে থাকা জমিতে আরও বেশি করে সবজিজাতীয় ফসল আবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

জানা গেছে, উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত বংশাই নদ মধুপুর থেকে গাজীপুরের তুরাগ নদে যুক্ত হয়েছে। প্রায় ১০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই নদে প্রতিবছর বর্ষায় প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। বন্যা কমতে শুরু করলে নদের তীরবর্তী কৃষকেরা নদের বুকে গম, করলা, ভুট্টা, সরিষা, পটোল, সিম, আখ, মিষ্টি আলু, পেঁয়াজ, মিষ্টিকুমড়া, রসুন, কপিসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ শুরু করেন। প্রতিবছরের মতো এ বছরও চাষিরা এসব ফসলের চাষ করেছেন। ফলনও পাচ্ছেন ভালো। এতে হাসি ফুটেছে স্থানীয় কৃষকের মুখে।

সরেজমিন দেখা গেছে, নদসংলগ্ন লতিফপুর ইউনিয়নের ফিরিঙ্গীপাড়া, প্যাচপাড়া, শেওড়াতৈল, চাকলেশ্বর, থলপাড়া, টেংরাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নদের বুকে বিশালাকার চর জেগেছে। এসব চরে স্থানীয় কৃষকেরা ইরি-বোরো ছাড়াও করলা, পেঁয়াজ, মিষ্টি আলু, মিষ্টিকুমড়া, ভুট্টা, খিরাইসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ করছেন। ফলে নদের বিশাল এলাকাজুড়ে এখন সবুজের সমারোহ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বংশাই নদে একসময় বারো মাস থই থই পানি থাকত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কোনো সংস্কার না হওয়ায় নদটি জৌলুশ হারিয়েছে। নদের বুকে জেগেছে বিশাল চর। সেই চরে আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন তাঁরা। এতে স্থানীয় কৃষকদের আয়রোজগার বেড়েছে।

উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের শেওড়াতৈল গ্রামের নিবারণ সরকার (৮০) জানান, নদের বুকে তিনি ৮৫ শতাংশ জমিতে ইরি-বোরোসহ করলা, পেঁয়াজ ও মিষ্টিকুমড়ার আবাদ করেছেন। আবাদ ভালো হয়েছে। সেখান থেকেও বেশ মোটা অঙ্কের লাভ হবে বলে তিনি আশাবাদী।

প্যাচপাড়া গ্রামের আজাদ মিয়া জানান, নদের চরে তিনি সাড়ে সাত বিঘায় সরিষা, আলু, গম ও মিষ্টি আলু চাষ করেছেন। ভালো পরিচর্যা করায় আবাদও ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে এক বিঘার আলু ও দেশীয় সরিষা তুলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া গেছে।

মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন জানান, বংশাই নদের ফিরিঙ্গিপাড়া এলাকায় তিনি সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করেছেন। এ ছাড়া অনেকে সরিষা, আলু, পেঁয়াজ, ডাল, রসুন আবাদ করেছেন। আবাদ খুব ভালো হয়েছে। ফসল ঘরে তুলে নেওয়ার পর অনেকে আবার ওই জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করে থাকেন। তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগ কৃষকদের বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়ে থাকে। তবে আরও বেশি করে অর্থাৎ সপ্তাহে একবার এলাকার কৃষকদের কাছে এসে কৃষি পরামর্শ দিলে কৃষকেরা আরও লাভবান হতেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল জানান, কৃষকেরা যেন কৃষি পরামর্শ পেয়ে থাকেন, সে জন্যে ব্লক সুপারভাইজারদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। তিনিসহ কৃষি অফিসের প্রত্যেক কর্মী প্রতিনিয়ত এসব এলাকায় ঘুরে কৃষকদের ফসলের মাঠ পরিদর্শন করে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত