Ajker Patrika

পলেস্তারা খসা ছাদের নিচে শিশুদের পাঠ

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
Thumbnail image

মাঝেমধ্যে খসে পড়ছে ছাদের পলেস্তারা। অনেক জায়গায় বেরিয়ে এসেছে রড। তার নিচেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে ক্লাস। ক্লাস শেষ হতেই কক্ষ থেকে বেরিয়ে মাঠে গিয়ে বসে থাকছে শিশুরা।

গঙ্গাচড়া উপজেলার চর ছালাপাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল এমন দৃশ্য। ভবনের নাজুক দশার কারণে অভিভাবকেরা বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে চিন্তায় থাকেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ছাত্রছাত্রী রয়েছে ৩০৫ জন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি আগে টিনের ঘর ছিল। পরবর্তীতে ২০০০ সালে পাকা ভবন তৈরি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজের কারণে মাত্র ২২ বছরে ভবনটিতে ক্ষয় ধরেছে।

গত শনিবার গিয়ে দেখা গেছে, নাজুক ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকেরা। সহকারী শিক্ষক সায়মা চৌধুরী জানান, প্রতিদিন ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ছে। এতে করে বাচ্চার ক্লাসে আসতে ভয় পাচ্ছে। তাদের কোনোরকমে বুঝিয়ে ক্লাস করাতে হয়। ক্লাসের সময় ভয়ে ভয়ে থাকে। ক্লাস শেষ হলে রুম থেকে বের হয়ে মাঠে চলে যায়। শিক্ষকেরাও ভয়ে থাকেন।

তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া গৌরী রানী বলে, ‘কয়েক দিন আগে ম্যাডামের ক্লাস করার সময় ছাদের প্লাস্টার খসে আমার বইয়ের ওপর পড়ে। একটুর জন্য বেঁচে যাই। আমি সে দিনের পর ভয়ে কয়েক দিন বিদ্যালয় আসি নাই। আমাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন ক্লাস করার জন্য একটি বিল্ডিং দেন’

গৌরীর সহপাঠী মুত্তাকিন এই প্রতিবেদকে বলে, ‘আপনি আসার কিছুক্ষণ আগে আমাদের ক্লাসে প্লাস্টার ধসে ম্যাডামের মাথায় পড়তে ধরছিল। একটুর জন্য বেঁচে গেছে। জরাজীর্ণ ক্লাসরুমে আমাদের ক্লাস করতে ভয় লাগে, পড়ালেখায় মন বসে না। হঠাৎ করে যদি কোনো কিছু হয়ে যায়!’

কথা হলে অভিভাবক মাসুদ রানা বলেন, ‘ভবনটির বর্তমান যে অবস্থা, তাতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিদ্যালয়ে বাচ্চা পাঠাতে ভয় পাচ্ছি। বাচ্চারা ভাঙা ভবন দেখে ভয়ে স্কুলে আসতে চায় না।’

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
গজঘণ্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, এই ভবনের বিষয়ে কয়েক দিন আগে মাসিক সমন্বয় সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাগমা শিলভীয়া খান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। প্রধান শিক্ষক আমাদের অবগত করলে, তদন্ত সাপেক্ষে ভবন তৈরির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সম্পর্কে উপজেলা প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষ ভবনের বিষয়ে চিঠি দিলে আমরা গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত