Ajker Patrika

হাওরে বাঁশের খুঁটিতে ১১ কেভি বিদ্যুতের লাইন

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) 
হাওরে বাঁশের খুঁটিতে ১১ কেভি বিদ্যুতের লাইন

কিশোরগঞ্জের হাওরে বর্ষাকালে ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক খুঁটির পরিবর্তে  বাঁশের খুঁটিতে চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ। চলতি বর্ষায় হাওরাঞ্চলে নির্মিত হয়েছে এমনিই ঝুঁকিপূর্ণ চারটি বাঁশের খুঁটি।

তবে হাওরে বৈদ্যুতিক স্থায়ী খুঁটি স্থাপনের একটি প্রস্তাব কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মকর্তা। পল্লী বিদ্যুতের তথ্যমতে, জেলার তিন হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইনে বিদ্যুৎ সরবরাহে ১০৭ কিলোমিটার ৩৩ হাজার ভোল্টেজ (কেভি), ১১ কেভিসহ ১ হাজার ৩৬০ কিলোমিটার বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মিঠামইন জোনাল অফিসের অধীনে, তিন উপজেলায় ৬৮ হাজার গ্রাহক রয়েছে। অষ্টগ্রামে ২৭ হাজার, মিঠামইনে ২৪ হাজার ও ইটনা আংশিকে ১৭ হাজার জন।

জানা গেছে, ভৌগোলিকভাবে হাওর উঁচু এলাকা থেকে ভিন্ন ধাঁচের। এখানে বর্ষা মৌসুমে খুঁটি ভাঙলে নতুন করে পোঁতা যায় না এবং পানিতে থাকা খুঁটির গোড়ার মাটি নরম থাকে। পানির স্রোত, ঝড় ও নৌযানের ধাক্কায় নড়ে উঠে বা পড়ে যায় খুঁটি। তার ছিঁড়ে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। এ সময় গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক নৌকা দিয়ে হাওরে বাঁশ, কাঠ ও জিআই তার দিয়ে নির্মাণ করা হয় খুঁটি।

প্রতিবছর বর্ষায় কয়েকটি খুঁটি নির্মাণ করলেও শুষ্ক মৌসুমে আবার নতুন বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো হয়। চলতি বছর হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের কলমা ইউনিয়নের কাকুরিয়া হাওর, ইটনা উপজেলার বড়িবাড়ি ইউনিয়নের শিমুল বাঁক হাওর ও মিঠামইন উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের মুন্সীপুর ও গোপদিঘী ইউনিয়নের ডুবি হাওরে ৪টি বাঁশের খুঁটির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করেছে মিঠামইন জোনাল অফিস।

কলমা হাওরে মৎস্যশিকারি হরিচরণ দাস (৪০) বলেন, ‘নড়বড়ে বাঁশের খুঁটি সামনে দিয়া নাও (নৌকা) লইয়্যা যাতায়াত করতে, ডর (ভয়) লাগে। কখন যে কোন বিপদে পড়ি, বলা মুশকিল। সব সময় আতঙ্কে থাহি (থাকি)।’

ঢাকী ইউনিয়নের মাঝি রফিকুল মিয়া (৩৭) বলেন, ‘ভরপুর বাইষ্যার (বর্ষা) সময় জ্বানডা (প্রাণ) হাতে লাইয়্যা নৌকা চাইতেএ হয়। ডর-ভয় করলে নিরুপায় হয়ে চলাচল করি।’

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অষ্টগ্রাম আঞ্চলিক অফিসের জুনিয়র প্রকৌশলী (ও অ্যান্ড এম) মো. আল আমিন সরকার বলেন, হাওরাঞ্চলে ছয় মাস পানিতে থাকে এমন খুঁটিগুলোর নিচে ৫ বর্গফুট মাফলিং বা পাকা করা হলে এই দুর্ভোগ কমবে। কাকুরিয়া হাওরে ভাসান পানিতে বাঁশ দিয়ে খুঁটি নির্মাণ করা কষ্টসাধ্য ছিল। 
মিঠামইন পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন বলেন, হাওরে প্রবল স্রোতের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে সমস্যা হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অস্থায়ী বাঁশের খুঁটি নির্মাণ করা হয়। পরে শুষ্ক মৌসুমে মেরামত করা হয়। তবে স্থায়ী সমাধানে ঊর্ধ্বতন কার্যালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত