Ajker Patrika

পলিথিন-প্লাস্টিক দূষণ ভয়াবহ

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ০৫ জুন ২০২২, ১১: ১৯
Thumbnail image

বরিশাল নগরের পরিবেশদূষণের জন্য এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে নিষিদ্ধ পলিথিন ও প্লাস্টিক। হাত বাড়ালেই পলিথিন পাওয়া যায়। বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা প্লাস্টিক কারখানাও দূষণের জন্য দায়ী। নগরের প্রধান পাঁচটি বাজার পলিথিনমুক্ত ঘোষণা করা হলেও ওই কার্যক্রমের অস্তিত্ব এখন আর নেই। পলিথিন ও প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে ঢিলেঢালা অভিযান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পরিবেশবিদেরা মনে করেন, পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহারে নগরের পরিবেশ ভয়াবহ হুমকিতে পড়েছে।

‘একটাই পৃথিবী, প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আজ রোববার পালিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। কিন্তু নগরের পরিবেশ কতটা টেকসই ও দূষণমুক্ত, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। ২০১৫ সালে নগরের বাজার রোড, বটতলা, চৌমাথা, নতুন বাজার, বাংলাবাজার পলিথিনমুক্ত ঘোষণা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। সেই কার্যক্রমের চিহ্নও নেই নগরে; বরং পলিথিন ও ক্ষতিকর প্লাস্টিকের ব্যবহার চলছে অবাধে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বরিশালের সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন নিষিদ্ধকরণের জন্য ২০২০ সালে রিট করা হয়। ওই রিটের আবেদনকারী ছিলেন তিনিও। এটা নিয়ে অ্যাডভোকেসি হয়েছে, কিন্তু বন্ধ হয়নি। এ নগরের নালা ও মাটিতে পলিথিন মিশে দূষণ ঘটাচ্ছে। পেস্ট, চকোলেটের মতো প্লাস্টিক শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ মুহূর্তে বরিশাল নগরের মানুষ, ভূমি, গাছ ও প্রাণী মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে।

বরিশাল নগরের সব বাজার ঘুরে পলিথিনের অবাধ ব্যবহার দেখা গেছে। নগরের পলাশপুরসহ বিভিন্ন স্থানে প্লাস্টিকের কারখানার আশপাশ প্লাস্টিকের কারণে দূষিত হচ্ছে।

তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল মালেক বলেন, প্লাস্টিকের কারখানায় পরিবেশদূষণ ঘটে না। আর ৫টি বাজার পলিথিনমুক্ত ঘোষণার কথা তিনি স্বীকার করলেও কেন তা বজায় রাখা যায়নি, এ বিষয়ে কিছু বলেননি।

বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পলিথিন বিক্রি, বিতরণ, পরিবহন, মজুত ও আমদানি নিষিদ্ধ। এই আইন লঙ্ঘনকারী সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বরিশালের সমন্বয়ক লিংকন বায়েন বলেন, ‘পলিথিন ব্যাগ মারাত্মক পরিবেশবিরোধী পণ্য। পলিথিন দীর্ঘদিন পানিতে থাকলে তা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা হয়ে মাছে খায়, যা মানুষের শরীরেও প্রবেশ করে।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, প্লাস্টিকদূষণ নিয়ে বরিশালে তাঁদের কোনো কাজ নেই। কারণ, এ বিষয়ে আইন নেই। প্লাস্টিকের ক্ষেত্রে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার হ্রাসের কথা বলেছে মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, তবে বরিশাল জেলাসহ নগরে পলিথিন নিয়ন্ত্রণে তাঁরা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। গত মে মাসে সাড়ে চার টন এবং এপ্রিল মাসে দেড় টন পলিথিন জব্দ করা হয়। তিনি আরও বলেন, বাজারে চাহিদা আছে, তাই পলিথিন ব্যবহার করা হয়। এর বিকল্প তো বের হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত