Ajker Patrika

প্রচারে আচরণবিধি ভঙ্গ

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৩৫
প্রচারে আচরণবিধি ভঙ্গ

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ৩১ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ হবে। প্রচারণা শেষ হতে এখনো সপ্তাহ খানেক বাকি। উপজেলার ৯টি ইউপিতে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদের প্রার্থীরা জমজমাট প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে অনেক এলাকাতেই নির্বাচনী আচরণবিধি মানছেন না প্রার্থীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকায় আচরণবিধির তোয়াক্কা করছেন না প্রার্থীরা। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাচন অফিস বলছে, আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাহী হাকিমদের বলে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি দেখছেন।

উপজেলার নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো এ উপজেলার ৯টি ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। এসব ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৫৪ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৩৫১ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ইউপি নির্বাচন আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের দেয়াল, যানবাহনে পোস্টার, প্রচারণাপত্র লাগানো যাবে না। বেলা ২টার আগে ও রাত ৮টার পর মাইকিং করা যাবে না। কিন্তু এসবের কোনো কিছুকে তোয়াক্কা করছেন না প্রার্থীরা। তারা সকাল থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত চালাচ্ছেন প্রচারণা। করছেন মোটরসাইকেল মহড়া। রাত ৮টার পর প্রচারণা বন্ধ করার কথা থাকলেও সব ইউনিয়নেই রাত ৮টার পর জনসভা শুরু হয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ির দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে পোস্টার। হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলছে ভোটারদের খাওয়ানো। মোটরসাইকেল মহড়ার পর দেওয়া হচ্ছে তেল। তা ছাড়া আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রতিপক্ষের প্রচারণায় বাধা, হুমকি দেওয়াসহ নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠছে প্রতিনিয়ত।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রচারণায় জমে উঠেছে প্রত্যন্ত এলাকার পাড়া-মহল্লা। চায়ের দোকানগুলোতে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। নির্বাচনী মিছিল আর মাইকিং প্রচার-প্রচারণায় মুখর গ্রামীণ জনপদ। উপজেলার পুলেরঘাট বাজার, শিমুলিয়া চৌরাস্তা মোড়, হলা বাজার মোড়, তারাকান্দি বাজার, মঠখলা বাজার, মির্জাপুর, জাঙ্গালিয়া বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ছেয়ে গেছে পোস্টারে। দোকানপাট, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়ালে দেয়ালে সাঁটানো হচ্ছে পোস্টার। বাদ যাচ্ছে না যানবাহন ও গাছপালাও। এ যেন আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রতিযোগিতা।

আজলদী এলাকার মানিক মিয়া নামের একজন বলেন, ‘চেয়ারম্যান-মেম্বাররা কোনো আইন-কানুন মানছেন না। ঘরের দেয়াল, রাস্তার পাশে গাছপালাতে লাগানো হচ্ছে পোস্টার। ইচ্ছেমতো পোস্টার লাগাচ্ছেন প্রার্থীর লোকজনেরা। বাধা দিলেও মানছেন না তাঁরা।’ প্রশাসনের নজরদারির অভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে কয়েকজন প্রার্থী জানান, এখন নির্বাচনের সময়। সব দিক খেয়াল রাখা যাচ্ছে না। যারা পোস্টার লাগাচ্ছেন তারা হয়তো নিয়ম জানেন না। তাঁদের বলে দেওয়া হচ্ছে যেন কোনো দেয়ালে বা যানবাহনে পোস্টার না লাগানো হয়। তবে প্রতিপক্ষের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধাদান, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও হুমকি-ধমকির বিষয়ে একে অপরকে দোষারোপ করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাহী হাকিমদের বলে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি দেখছেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পাকুন্দিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মোতাবেক নির্বাহী হাকিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো এবং নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি মাইকিং করাসহ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অন্যান্য বিষয়ও আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। এসব বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা চলমান আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত