
সমাজ বাস্তবতায় নারীরা চলার পথে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। এতে কোনো কোনো নারী মানসিক সমস্যায় পড়েন।
আবার সংসারজীবনেও তাঁরা বিভিন্ন আইনগত জটিলতার মুখোমুখি হন। আজ থাকছে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ...মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ
প্রশ্ন: সম্প্রতি আমার মিসক্যারেজ হয়েছে। এর পর থেকে আমাকে উদ্দেশ করে নেতিবাচক কথা যা বলা হচ্ছে, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সব সত্যি। মিসক্যারেজের সপ্তাহখানেক পর আমার স্বামী আমাকে বলেছেন, আমি অলক্ষ্মী। এ কথা আমার মাথা থেকে বের করতে পারছি না। এমনকি ঠিকঠাক ঘুমাতেও পারছি না। আমার মনে হচ্ছে, আমি অলক্ষ্মী, তাই আমার সন্তানও আমার কাছ থেকে চলে গেছে। আমার শ্বশুর-শাশুড়িরও ধারণা, আমি অপয়া। আমি কি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি? আমি এখন কী করব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, খালিয়াজুরী
পরামর্শ: টিভি চালাতে রিমোট কন্ট্রোল লাগে। সেটি দিয়ে পছন্দের চ্যানেল দেখা যায়। আপনাকে অলক্ষ্মী বললেই আপনি যদি অলক্ষ্মী হয়ে যান, তাহলে বুঝতে হবে আপনার মনের রিমোট কন্ট্রোলটি আপনার হাতে নেই। এটি ঠিক করার প্রথম ধাপ হচ্ছে, নিজের মনের কন্ট্রোল নিজের হাতে নেওয়া। সঙ্গে এটাও বোঝা দরকার, আপনার প্রতি তাদের মনোভাব কতটুকু সহনশীল।
পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষের মিসক্যারেজ হয়। তাঁদের কেউ ‘অপয়া’ নন। মিসক্যারেজ একটি শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। অনেক সময় জন্মগত ত্রুটি থাকলে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেই মিসক্যারেজ হয়ে যায়। তবে, কেন এ ঘটনা ঘটল পরবর্তী গর্ভধারণের আগে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে সেই আলোচনাটা করে নিন। কিন্তু যদি সত্যিই আপনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন অসহনশীল হন, তবে এ সংসারে দ্বিতীয়বার সন্তান ধারণ আপনার জন্য কতটুকু স্বস্তিকর হবে তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন। এরও আগে আপনার নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করুন। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যা-ই হোক না কেন, একটা উপার্জনের পথ বের করে ফেলুন।
মিসক্যারেজের পর শরীর ঠিক হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। এ সময় নিজেই একটু আগ্রহ করে নিজের শরীর ও মনের যত্ন শুরু করুন। এখন আপনার শরীরে বেশ কিছু হরমোনগত তারতম্য দেখা দিচ্ছে। ধীরে ধীরে যখন হরমোনের স্তর স্বাভাবিক হবে, আপনার ইমোশনাল অস্থিরতাও কমে আসবে। কাজেই তত দিন নিজের রিমোট কন্ট্রোল নিজের হাতেই রাখুন।
প্রশ্ন: যাকে পছন্দ করি, তার প্রতি আমি বেশি দুর্বল। এটাকে ভালোবাসা বললে হয়তো বেশি বলা হবে। তবে শুধু ভালো লাগা বললেও মিথ্যা হয়ে যাবে। সে দিনের পর দিন একতরফাভাবে আমাদের সম্পর্কটা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমার পরিবারের মতের বাইরে গিয়ে কিছু করার সাহস নেই। আমার পরিবার ছেলেটিকে পছন্দ করে না অর্থনৈতিক কারণে। আমি তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা খারাপের দিকেও নিয়ে যেতে চাইছি না। আমি চুপচাপ ধীরে-সুস্থে সম্পর্ক থেকে সরে আসতে চাই। কিন্তু কীভাবে করব, তা বুঝতে পারছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নোয়াখালী
পরামর্শ: আপনার বয়সের উল্লেখ নেই। কাজেই বুঝতে পারছি না, পরিপক্ব সিদ্ধান্ত নেওর জন্য আপনি কতটুকু উপযুক্ত। একটু ভেঙে ভেঙে উত্তর দিই।
প্রথম ধাপ: আপনি আগে খোলাখুলি নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি কী চান।
দ্বিতীয় ধাপ: আলোচ্য ভদ্রলোককে বিয়ে করলে কী কী সমস্যা হবে, বিয়ে না করলে কী কী সমস্যা হবে, এগুলোর স্পষ্ট উত্তর জানার চেষ্টা করুন।
তৃতীয় ধাপ: দ্বিতীয় ধাপের সমস্যাগুলো মোকাবিলায় আপনি কতটুকু তৎপর? আপনার কী কী দক্ষতা বা যোগ্যতা আছে, যা দিয়ে এ সমস্যাগুলো আপনি সামাল দিতে পারবেন? এ প্রশ্নের উত্তর জানুন।
চতুর্থ ধাপ: আপনি কি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী? যদি সেটা না হন, তবে প্রথমে সেদিকে মনোযোগ দিন। পড়াশোনা শেষ করাটা জরুরি। এরপর জীবনে বহু প্রেম করার সুযোগ পাওয়া যাবে। নিজের পেশাগত যোগ্যতা বাড়ানো প্রেম করার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে শিখলে ভালোবাসা এমনি হাত ধরে হাঁটবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক, কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বিডি
আইনি বিষয়ে পরামর্শ
প্রশ্ন: আমি একজন মুসলিম নারী। বিয়ে করেছি আট বছর আগে। আমার একটি ছেলে আছে। আমার স্বামী বিয়ের পর দেশের বাইরে চলে যান। হঠাৎ গত বছর তিনি সেখানে স্ট্রোক করে মারা যান। ওই ঘটনার ছয় মাস পর আমি সন্তানসহ ভাইয়ের বাসায় থাকা শুরু করি। কারণ স্বামী মারা যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেননি। আমার জানার বিষয় হচ্ছে, স্বামী মারা যাওয়ার পর স্ত্রী সম্পত্তির অধিকার পাবে কতটুকু?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ভোলা
পরামর্শ: মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের মূল উৎস হলো পবিত্র কোরআন। পবিত্র কোরআনে মূল আটটি ফারায়েজের উল্লেখ আছে। সে কারণে প্রকৃত উত্তরাধিকারীর ন্যায্য পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করার গুরুত্ব অপরিসীম। ১৯৬১ সালের ‘মুসলিম পারিবারিক আইন’ অধ্যাদেশ মোতাবেক মুসলিম উত্তরাধিকার স্বীকৃত।
মুসলিম উত্তরাধিকারের শ্রেণি, জাবিল ফুরুজ (নিকটাত্মীয়), আসাবা (অবশিষ্টাংশ প্রাপ্যদার আত্মীয়), জাবিল আরহাম (দূরসম্পর্কের আত্মীয়)।
ইসলামি আইনে মোট ১২ প্রকার জাবিল ফুরুজ আছে। পিতা, স্বামী, দাদা, বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাই, মা, স্ত্রী, কন্যা, পুত্রের কন্যা, দাদি বা নানি, সহোদরা, বৈমাত্রেয় বোন, বৈপিত্রেয় বোন। এ ছাড়া ইসলামি ফারায়েজ মোতাবেক ছয়জন নিকটতম আত্মীয় কখনোই মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন না। তাঁরা হলেন মা, বাবা, স্বামী বা স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা।
প্রত্যেক পুত্র কন্যার দ্বিগুণ সম্পত্তি পাবে। পুত্র না থাকলে কন্যা ৫০০ অংশ পাবে। সম্পত্তি বণ্টনের এমন আরও অনেক হিসাব রয়েছে ধর্মমতে।
আপনার প্রশ্নের উত্তর হলো, মা-বাবা না থাকলে আপনি পাবেন ১২৫ এবং আপনার ছেলে পাবে ৮৭৫ অংশ। মা-বাবা থাকলে আপনি ১২৫ অংশ, বাবা ১৬৭ অংশ, মা ১৬৭ অংশ, ছেলে ৫৪১ অংশ পাবে।
প্রশ্ন: ইদানীং নিজেকে অনেক বেশি একা লাগে। চাকরির সুবাদে স্বামী দূরে থাকে। তার কাছে নিজের জন্য কিছু চাইতে সংকোচ হয়। সে আমার চাওয়া-পাওয়াগুলো বোঝে না। এমনকি পুরো সপ্তাহ চলে গেলেও সে আমাকে একটা ফোনও করে না। আমি ফোন দিলে ব্যস্ত আছে বলে লাইন কেটে দেয়। আমি সন্তানদের নিয়ে কীভাবে দিন কাটাচ্ছি, সেসব নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। হিসাব করে টাকা পাঠায়। আর আমি সে অনুযায়ী খরচ করে ডকুমেন্টসহ হিসাব তার কাছে পাঠিয়ে দিই। কোনো কারণে হিসাবের চেয়ে টাকা বেশি খরচ হলে সে আমাকে ভর্ৎসনা করে। এ অবস্থায় আইনি প্রক্রিয়ায় আমার স্বামীকে কোনোভাবে এই সংসারের দিকে ফেরানো কি সম্ভব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, পটিয়া
পরামর্শ: আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে বলে রাখি, মুসলিম বিয়ে একটি চুক্তি। সেই চুক্তি অনুসারে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় স্বামী স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। স্ত্রী যদি নিজে রোজগার করে, তবুও। কাবিনে স্পষ্ট লেখা থাকে, ভদ্রোচিত ভরণপোষণ স্বামী দেবে। সে ক্ষেত্রে স্বামীর টাকা নেওয়ায় হীনম্মন্যতার কিছু নেই। যদি ভরণপোষণ দিতে না চায়, তবে পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে ভরণপোষণ আদায় করা যায়। তবে কেউ যদি সংসার করতে না চায়, তাকে জোর করে তো সংসার করানো যায় না।
আইনত বিয়ে বলবৎ থাকাকালে ভরণপোষণের জন্য স্ত্রী মামলা করতে পারবে। ভরণপোষণের টাকা আপনার আইনি অধিকার। আইন এবং ধর্ম আপনাকে সেই অধিকার দিয়েছে। আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণের কোনো অধিকার আপনার স্বামীর নেই। যদি করেন, তবে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইনের মাধ্যমে আপনি প্রতিকার পেতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন: অ্যাডভোকেট আইনুন নাহার সিদ্দিকা, আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট

সমাজ বাস্তবতায় নারীরা চলার পথে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। এতে কোনো কোনো নারী মানসিক সমস্যায় পড়েন।
আবার সংসারজীবনেও তাঁরা বিভিন্ন আইনগত জটিলতার মুখোমুখি হন। আজ থাকছে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ...মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ
প্রশ্ন: সম্প্রতি আমার মিসক্যারেজ হয়েছে। এর পর থেকে আমাকে উদ্দেশ করে নেতিবাচক কথা যা বলা হচ্ছে, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সব সত্যি। মিসক্যারেজের সপ্তাহখানেক পর আমার স্বামী আমাকে বলেছেন, আমি অলক্ষ্মী। এ কথা আমার মাথা থেকে বের করতে পারছি না। এমনকি ঠিকঠাক ঘুমাতেও পারছি না। আমার মনে হচ্ছে, আমি অলক্ষ্মী, তাই আমার সন্তানও আমার কাছ থেকে চলে গেছে। আমার শ্বশুর-শাশুড়িরও ধারণা, আমি অপয়া। আমি কি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি? আমি এখন কী করব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, খালিয়াজুরী
পরামর্শ: টিভি চালাতে রিমোট কন্ট্রোল লাগে। সেটি দিয়ে পছন্দের চ্যানেল দেখা যায়। আপনাকে অলক্ষ্মী বললেই আপনি যদি অলক্ষ্মী হয়ে যান, তাহলে বুঝতে হবে আপনার মনের রিমোট কন্ট্রোলটি আপনার হাতে নেই। এটি ঠিক করার প্রথম ধাপ হচ্ছে, নিজের মনের কন্ট্রোল নিজের হাতে নেওয়া। সঙ্গে এটাও বোঝা দরকার, আপনার প্রতি তাদের মনোভাব কতটুকু সহনশীল।
পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষের মিসক্যারেজ হয়। তাঁদের কেউ ‘অপয়া’ নন। মিসক্যারেজ একটি শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। অনেক সময় জন্মগত ত্রুটি থাকলে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেই মিসক্যারেজ হয়ে যায়। তবে, কেন এ ঘটনা ঘটল পরবর্তী গর্ভধারণের আগে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে সেই আলোচনাটা করে নিন। কিন্তু যদি সত্যিই আপনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন অসহনশীল হন, তবে এ সংসারে দ্বিতীয়বার সন্তান ধারণ আপনার জন্য কতটুকু স্বস্তিকর হবে তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন। এরও আগে আপনার নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করুন। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যা-ই হোক না কেন, একটা উপার্জনের পথ বের করে ফেলুন।
মিসক্যারেজের পর শরীর ঠিক হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। এ সময় নিজেই একটু আগ্রহ করে নিজের শরীর ও মনের যত্ন শুরু করুন। এখন আপনার শরীরে বেশ কিছু হরমোনগত তারতম্য দেখা দিচ্ছে। ধীরে ধীরে যখন হরমোনের স্তর স্বাভাবিক হবে, আপনার ইমোশনাল অস্থিরতাও কমে আসবে। কাজেই তত দিন নিজের রিমোট কন্ট্রোল নিজের হাতেই রাখুন।
প্রশ্ন: যাকে পছন্দ করি, তার প্রতি আমি বেশি দুর্বল। এটাকে ভালোবাসা বললে হয়তো বেশি বলা হবে। তবে শুধু ভালো লাগা বললেও মিথ্যা হয়ে যাবে। সে দিনের পর দিন একতরফাভাবে আমাদের সম্পর্কটা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমার পরিবারের মতের বাইরে গিয়ে কিছু করার সাহস নেই। আমার পরিবার ছেলেটিকে পছন্দ করে না অর্থনৈতিক কারণে। আমি তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা খারাপের দিকেও নিয়ে যেতে চাইছি না। আমি চুপচাপ ধীরে-সুস্থে সম্পর্ক থেকে সরে আসতে চাই। কিন্তু কীভাবে করব, তা বুঝতে পারছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নোয়াখালী
পরামর্শ: আপনার বয়সের উল্লেখ নেই। কাজেই বুঝতে পারছি না, পরিপক্ব সিদ্ধান্ত নেওর জন্য আপনি কতটুকু উপযুক্ত। একটু ভেঙে ভেঙে উত্তর দিই।
প্রথম ধাপ: আপনি আগে খোলাখুলি নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি কী চান।
দ্বিতীয় ধাপ: আলোচ্য ভদ্রলোককে বিয়ে করলে কী কী সমস্যা হবে, বিয়ে না করলে কী কী সমস্যা হবে, এগুলোর স্পষ্ট উত্তর জানার চেষ্টা করুন।
তৃতীয় ধাপ: দ্বিতীয় ধাপের সমস্যাগুলো মোকাবিলায় আপনি কতটুকু তৎপর? আপনার কী কী দক্ষতা বা যোগ্যতা আছে, যা দিয়ে এ সমস্যাগুলো আপনি সামাল দিতে পারবেন? এ প্রশ্নের উত্তর জানুন।
চতুর্থ ধাপ: আপনি কি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী? যদি সেটা না হন, তবে প্রথমে সেদিকে মনোযোগ দিন। পড়াশোনা শেষ করাটা জরুরি। এরপর জীবনে বহু প্রেম করার সুযোগ পাওয়া যাবে। নিজের পেশাগত যোগ্যতা বাড়ানো প্রেম করার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে শিখলে ভালোবাসা এমনি হাত ধরে হাঁটবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক, কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বিডি
আইনি বিষয়ে পরামর্শ
প্রশ্ন: আমি একজন মুসলিম নারী। বিয়ে করেছি আট বছর আগে। আমার একটি ছেলে আছে। আমার স্বামী বিয়ের পর দেশের বাইরে চলে যান। হঠাৎ গত বছর তিনি সেখানে স্ট্রোক করে মারা যান। ওই ঘটনার ছয় মাস পর আমি সন্তানসহ ভাইয়ের বাসায় থাকা শুরু করি। কারণ স্বামী মারা যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেননি। আমার জানার বিষয় হচ্ছে, স্বামী মারা যাওয়ার পর স্ত্রী সম্পত্তির অধিকার পাবে কতটুকু?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ভোলা
পরামর্শ: মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের মূল উৎস হলো পবিত্র কোরআন। পবিত্র কোরআনে মূল আটটি ফারায়েজের উল্লেখ আছে। সে কারণে প্রকৃত উত্তরাধিকারীর ন্যায্য পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করার গুরুত্ব অপরিসীম। ১৯৬১ সালের ‘মুসলিম পারিবারিক আইন’ অধ্যাদেশ মোতাবেক মুসলিম উত্তরাধিকার স্বীকৃত।
মুসলিম উত্তরাধিকারের শ্রেণি, জাবিল ফুরুজ (নিকটাত্মীয়), আসাবা (অবশিষ্টাংশ প্রাপ্যদার আত্মীয়), জাবিল আরহাম (দূরসম্পর্কের আত্মীয়)।
ইসলামি আইনে মোট ১২ প্রকার জাবিল ফুরুজ আছে। পিতা, স্বামী, দাদা, বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাই, মা, স্ত্রী, কন্যা, পুত্রের কন্যা, দাদি বা নানি, সহোদরা, বৈমাত্রেয় বোন, বৈপিত্রেয় বোন। এ ছাড়া ইসলামি ফারায়েজ মোতাবেক ছয়জন নিকটতম আত্মীয় কখনোই মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন না। তাঁরা হলেন মা, বাবা, স্বামী বা স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা।
প্রত্যেক পুত্র কন্যার দ্বিগুণ সম্পত্তি পাবে। পুত্র না থাকলে কন্যা ৫০০ অংশ পাবে। সম্পত্তি বণ্টনের এমন আরও অনেক হিসাব রয়েছে ধর্মমতে।
আপনার প্রশ্নের উত্তর হলো, মা-বাবা না থাকলে আপনি পাবেন ১২৫ এবং আপনার ছেলে পাবে ৮৭৫ অংশ। মা-বাবা থাকলে আপনি ১২৫ অংশ, বাবা ১৬৭ অংশ, মা ১৬৭ অংশ, ছেলে ৫৪১ অংশ পাবে।
প্রশ্ন: ইদানীং নিজেকে অনেক বেশি একা লাগে। চাকরির সুবাদে স্বামী দূরে থাকে। তার কাছে নিজের জন্য কিছু চাইতে সংকোচ হয়। সে আমার চাওয়া-পাওয়াগুলো বোঝে না। এমনকি পুরো সপ্তাহ চলে গেলেও সে আমাকে একটা ফোনও করে না। আমি ফোন দিলে ব্যস্ত আছে বলে লাইন কেটে দেয়। আমি সন্তানদের নিয়ে কীভাবে দিন কাটাচ্ছি, সেসব নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। হিসাব করে টাকা পাঠায়। আর আমি সে অনুযায়ী খরচ করে ডকুমেন্টসহ হিসাব তার কাছে পাঠিয়ে দিই। কোনো কারণে হিসাবের চেয়ে টাকা বেশি খরচ হলে সে আমাকে ভর্ৎসনা করে। এ অবস্থায় আইনি প্রক্রিয়ায় আমার স্বামীকে কোনোভাবে এই সংসারের দিকে ফেরানো কি সম্ভব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, পটিয়া
পরামর্শ: আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে বলে রাখি, মুসলিম বিয়ে একটি চুক্তি। সেই চুক্তি অনুসারে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় স্বামী স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। স্ত্রী যদি নিজে রোজগার করে, তবুও। কাবিনে স্পষ্ট লেখা থাকে, ভদ্রোচিত ভরণপোষণ স্বামী দেবে। সে ক্ষেত্রে স্বামীর টাকা নেওয়ায় হীনম্মন্যতার কিছু নেই। যদি ভরণপোষণ দিতে না চায়, তবে পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে ভরণপোষণ আদায় করা যায়। তবে কেউ যদি সংসার করতে না চায়, তাকে জোর করে তো সংসার করানো যায় না।
আইনত বিয়ে বলবৎ থাকাকালে ভরণপোষণের জন্য স্ত্রী মামলা করতে পারবে। ভরণপোষণের টাকা আপনার আইনি অধিকার। আইন এবং ধর্ম আপনাকে সেই অধিকার দিয়েছে। আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণের কোনো অধিকার আপনার স্বামীর নেই। যদি করেন, তবে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইনের মাধ্যমে আপনি প্রতিকার পেতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন: অ্যাডভোকেট আইনুন নাহার সিদ্দিকা, আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট

সমাজ বাস্তবতায় নারীরা চলার পথে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। এতে কোনো কোনো নারী মানসিক সমস্যায় পড়েন।
আবার সংসারজীবনেও তাঁরা বিভিন্ন আইনগত জটিলতার মুখোমুখি হন। আজ থাকছে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ...মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ
প্রশ্ন: সম্প্রতি আমার মিসক্যারেজ হয়েছে। এর পর থেকে আমাকে উদ্দেশ করে নেতিবাচক কথা যা বলা হচ্ছে, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সব সত্যি। মিসক্যারেজের সপ্তাহখানেক পর আমার স্বামী আমাকে বলেছেন, আমি অলক্ষ্মী। এ কথা আমার মাথা থেকে বের করতে পারছি না। এমনকি ঠিকঠাক ঘুমাতেও পারছি না। আমার মনে হচ্ছে, আমি অলক্ষ্মী, তাই আমার সন্তানও আমার কাছ থেকে চলে গেছে। আমার শ্বশুর-শাশুড়িরও ধারণা, আমি অপয়া। আমি কি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি? আমি এখন কী করব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, খালিয়াজুরী
পরামর্শ: টিভি চালাতে রিমোট কন্ট্রোল লাগে। সেটি দিয়ে পছন্দের চ্যানেল দেখা যায়। আপনাকে অলক্ষ্মী বললেই আপনি যদি অলক্ষ্মী হয়ে যান, তাহলে বুঝতে হবে আপনার মনের রিমোট কন্ট্রোলটি আপনার হাতে নেই। এটি ঠিক করার প্রথম ধাপ হচ্ছে, নিজের মনের কন্ট্রোল নিজের হাতে নেওয়া। সঙ্গে এটাও বোঝা দরকার, আপনার প্রতি তাদের মনোভাব কতটুকু সহনশীল।
পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষের মিসক্যারেজ হয়। তাঁদের কেউ ‘অপয়া’ নন। মিসক্যারেজ একটি শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। অনেক সময় জন্মগত ত্রুটি থাকলে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেই মিসক্যারেজ হয়ে যায়। তবে, কেন এ ঘটনা ঘটল পরবর্তী গর্ভধারণের আগে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে সেই আলোচনাটা করে নিন। কিন্তু যদি সত্যিই আপনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন অসহনশীল হন, তবে এ সংসারে দ্বিতীয়বার সন্তান ধারণ আপনার জন্য কতটুকু স্বস্তিকর হবে তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন। এরও আগে আপনার নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করুন। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যা-ই হোক না কেন, একটা উপার্জনের পথ বের করে ফেলুন।
মিসক্যারেজের পর শরীর ঠিক হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। এ সময় নিজেই একটু আগ্রহ করে নিজের শরীর ও মনের যত্ন শুরু করুন। এখন আপনার শরীরে বেশ কিছু হরমোনগত তারতম্য দেখা দিচ্ছে। ধীরে ধীরে যখন হরমোনের স্তর স্বাভাবিক হবে, আপনার ইমোশনাল অস্থিরতাও কমে আসবে। কাজেই তত দিন নিজের রিমোট কন্ট্রোল নিজের হাতেই রাখুন।
প্রশ্ন: যাকে পছন্দ করি, তার প্রতি আমি বেশি দুর্বল। এটাকে ভালোবাসা বললে হয়তো বেশি বলা হবে। তবে শুধু ভালো লাগা বললেও মিথ্যা হয়ে যাবে। সে দিনের পর দিন একতরফাভাবে আমাদের সম্পর্কটা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমার পরিবারের মতের বাইরে গিয়ে কিছু করার সাহস নেই। আমার পরিবার ছেলেটিকে পছন্দ করে না অর্থনৈতিক কারণে। আমি তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা খারাপের দিকেও নিয়ে যেতে চাইছি না। আমি চুপচাপ ধীরে-সুস্থে সম্পর্ক থেকে সরে আসতে চাই। কিন্তু কীভাবে করব, তা বুঝতে পারছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নোয়াখালী
পরামর্শ: আপনার বয়সের উল্লেখ নেই। কাজেই বুঝতে পারছি না, পরিপক্ব সিদ্ধান্ত নেওর জন্য আপনি কতটুকু উপযুক্ত। একটু ভেঙে ভেঙে উত্তর দিই।
প্রথম ধাপ: আপনি আগে খোলাখুলি নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি কী চান।
দ্বিতীয় ধাপ: আলোচ্য ভদ্রলোককে বিয়ে করলে কী কী সমস্যা হবে, বিয়ে না করলে কী কী সমস্যা হবে, এগুলোর স্পষ্ট উত্তর জানার চেষ্টা করুন।
তৃতীয় ধাপ: দ্বিতীয় ধাপের সমস্যাগুলো মোকাবিলায় আপনি কতটুকু তৎপর? আপনার কী কী দক্ষতা বা যোগ্যতা আছে, যা দিয়ে এ সমস্যাগুলো আপনি সামাল দিতে পারবেন? এ প্রশ্নের উত্তর জানুন।
চতুর্থ ধাপ: আপনি কি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী? যদি সেটা না হন, তবে প্রথমে সেদিকে মনোযোগ দিন। পড়াশোনা শেষ করাটা জরুরি। এরপর জীবনে বহু প্রেম করার সুযোগ পাওয়া যাবে। নিজের পেশাগত যোগ্যতা বাড়ানো প্রেম করার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে শিখলে ভালোবাসা এমনি হাত ধরে হাঁটবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক, কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বিডি
আইনি বিষয়ে পরামর্শ
প্রশ্ন: আমি একজন মুসলিম নারী। বিয়ে করেছি আট বছর আগে। আমার একটি ছেলে আছে। আমার স্বামী বিয়ের পর দেশের বাইরে চলে যান। হঠাৎ গত বছর তিনি সেখানে স্ট্রোক করে মারা যান। ওই ঘটনার ছয় মাস পর আমি সন্তানসহ ভাইয়ের বাসায় থাকা শুরু করি। কারণ স্বামী মারা যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেননি। আমার জানার বিষয় হচ্ছে, স্বামী মারা যাওয়ার পর স্ত্রী সম্পত্তির অধিকার পাবে কতটুকু?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ভোলা
পরামর্শ: মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের মূল উৎস হলো পবিত্র কোরআন। পবিত্র কোরআনে মূল আটটি ফারায়েজের উল্লেখ আছে। সে কারণে প্রকৃত উত্তরাধিকারীর ন্যায্য পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করার গুরুত্ব অপরিসীম। ১৯৬১ সালের ‘মুসলিম পারিবারিক আইন’ অধ্যাদেশ মোতাবেক মুসলিম উত্তরাধিকার স্বীকৃত।
মুসলিম উত্তরাধিকারের শ্রেণি, জাবিল ফুরুজ (নিকটাত্মীয়), আসাবা (অবশিষ্টাংশ প্রাপ্যদার আত্মীয়), জাবিল আরহাম (দূরসম্পর্কের আত্মীয়)।
ইসলামি আইনে মোট ১২ প্রকার জাবিল ফুরুজ আছে। পিতা, স্বামী, দাদা, বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাই, মা, স্ত্রী, কন্যা, পুত্রের কন্যা, দাদি বা নানি, সহোদরা, বৈমাত্রেয় বোন, বৈপিত্রেয় বোন। এ ছাড়া ইসলামি ফারায়েজ মোতাবেক ছয়জন নিকটতম আত্মীয় কখনোই মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন না। তাঁরা হলেন মা, বাবা, স্বামী বা স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা।
প্রত্যেক পুত্র কন্যার দ্বিগুণ সম্পত্তি পাবে। পুত্র না থাকলে কন্যা ৫০০ অংশ পাবে। সম্পত্তি বণ্টনের এমন আরও অনেক হিসাব রয়েছে ধর্মমতে।
আপনার প্রশ্নের উত্তর হলো, মা-বাবা না থাকলে আপনি পাবেন ১২৫ এবং আপনার ছেলে পাবে ৮৭৫ অংশ। মা-বাবা থাকলে আপনি ১২৫ অংশ, বাবা ১৬৭ অংশ, মা ১৬৭ অংশ, ছেলে ৫৪১ অংশ পাবে।
প্রশ্ন: ইদানীং নিজেকে অনেক বেশি একা লাগে। চাকরির সুবাদে স্বামী দূরে থাকে। তার কাছে নিজের জন্য কিছু চাইতে সংকোচ হয়। সে আমার চাওয়া-পাওয়াগুলো বোঝে না। এমনকি পুরো সপ্তাহ চলে গেলেও সে আমাকে একটা ফোনও করে না। আমি ফোন দিলে ব্যস্ত আছে বলে লাইন কেটে দেয়। আমি সন্তানদের নিয়ে কীভাবে দিন কাটাচ্ছি, সেসব নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। হিসাব করে টাকা পাঠায়। আর আমি সে অনুযায়ী খরচ করে ডকুমেন্টসহ হিসাব তার কাছে পাঠিয়ে দিই। কোনো কারণে হিসাবের চেয়ে টাকা বেশি খরচ হলে সে আমাকে ভর্ৎসনা করে। এ অবস্থায় আইনি প্রক্রিয়ায় আমার স্বামীকে কোনোভাবে এই সংসারের দিকে ফেরানো কি সম্ভব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, পটিয়া
পরামর্শ: আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে বলে রাখি, মুসলিম বিয়ে একটি চুক্তি। সেই চুক্তি অনুসারে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় স্বামী স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। স্ত্রী যদি নিজে রোজগার করে, তবুও। কাবিনে স্পষ্ট লেখা থাকে, ভদ্রোচিত ভরণপোষণ স্বামী দেবে। সে ক্ষেত্রে স্বামীর টাকা নেওয়ায় হীনম্মন্যতার কিছু নেই। যদি ভরণপোষণ দিতে না চায়, তবে পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে ভরণপোষণ আদায় করা যায়। তবে কেউ যদি সংসার করতে না চায়, তাকে জোর করে তো সংসার করানো যায় না।
আইনত বিয়ে বলবৎ থাকাকালে ভরণপোষণের জন্য স্ত্রী মামলা করতে পারবে। ভরণপোষণের টাকা আপনার আইনি অধিকার। আইন এবং ধর্ম আপনাকে সেই অধিকার দিয়েছে। আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণের কোনো অধিকার আপনার স্বামীর নেই। যদি করেন, তবে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইনের মাধ্যমে আপনি প্রতিকার পেতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন: অ্যাডভোকেট আইনুন নাহার সিদ্দিকা, আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট

সমাজ বাস্তবতায় নারীরা চলার পথে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। এতে কোনো কোনো নারী মানসিক সমস্যায় পড়েন।
আবার সংসারজীবনেও তাঁরা বিভিন্ন আইনগত জটিলতার মুখোমুখি হন। আজ থাকছে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ...মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ
প্রশ্ন: সম্প্রতি আমার মিসক্যারেজ হয়েছে। এর পর থেকে আমাকে উদ্দেশ করে নেতিবাচক কথা যা বলা হচ্ছে, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সব সত্যি। মিসক্যারেজের সপ্তাহখানেক পর আমার স্বামী আমাকে বলেছেন, আমি অলক্ষ্মী। এ কথা আমার মাথা থেকে বের করতে পারছি না। এমনকি ঠিকঠাক ঘুমাতেও পারছি না। আমার মনে হচ্ছে, আমি অলক্ষ্মী, তাই আমার সন্তানও আমার কাছ থেকে চলে গেছে। আমার শ্বশুর-শাশুড়িরও ধারণা, আমি অপয়া। আমি কি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি? আমি এখন কী করব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, খালিয়াজুরী
পরামর্শ: টিভি চালাতে রিমোট কন্ট্রোল লাগে। সেটি দিয়ে পছন্দের চ্যানেল দেখা যায়। আপনাকে অলক্ষ্মী বললেই আপনি যদি অলক্ষ্মী হয়ে যান, তাহলে বুঝতে হবে আপনার মনের রিমোট কন্ট্রোলটি আপনার হাতে নেই। এটি ঠিক করার প্রথম ধাপ হচ্ছে, নিজের মনের কন্ট্রোল নিজের হাতে নেওয়া। সঙ্গে এটাও বোঝা দরকার, আপনার প্রতি তাদের মনোভাব কতটুকু সহনশীল।
পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষের মিসক্যারেজ হয়। তাঁদের কেউ ‘অপয়া’ নন। মিসক্যারেজ একটি শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। অনেক সময় জন্মগত ত্রুটি থাকলে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেই মিসক্যারেজ হয়ে যায়। তবে, কেন এ ঘটনা ঘটল পরবর্তী গর্ভধারণের আগে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে সেই আলোচনাটা করে নিন। কিন্তু যদি সত্যিই আপনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন অসহনশীল হন, তবে এ সংসারে দ্বিতীয়বার সন্তান ধারণ আপনার জন্য কতটুকু স্বস্তিকর হবে তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন। এরও আগে আপনার নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করুন। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যা-ই হোক না কেন, একটা উপার্জনের পথ বের করে ফেলুন।
মিসক্যারেজের পর শরীর ঠিক হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। এ সময় নিজেই একটু আগ্রহ করে নিজের শরীর ও মনের যত্ন শুরু করুন। এখন আপনার শরীরে বেশ কিছু হরমোনগত তারতম্য দেখা দিচ্ছে। ধীরে ধীরে যখন হরমোনের স্তর স্বাভাবিক হবে, আপনার ইমোশনাল অস্থিরতাও কমে আসবে। কাজেই তত দিন নিজের রিমোট কন্ট্রোল নিজের হাতেই রাখুন।
প্রশ্ন: যাকে পছন্দ করি, তার প্রতি আমি বেশি দুর্বল। এটাকে ভালোবাসা বললে হয়তো বেশি বলা হবে। তবে শুধু ভালো লাগা বললেও মিথ্যা হয়ে যাবে। সে দিনের পর দিন একতরফাভাবে আমাদের সম্পর্কটা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমার পরিবারের মতের বাইরে গিয়ে কিছু করার সাহস নেই। আমার পরিবার ছেলেটিকে পছন্দ করে না অর্থনৈতিক কারণে। আমি তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা খারাপের দিকেও নিয়ে যেতে চাইছি না। আমি চুপচাপ ধীরে-সুস্থে সম্পর্ক থেকে সরে আসতে চাই। কিন্তু কীভাবে করব, তা বুঝতে পারছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নোয়াখালী
পরামর্শ: আপনার বয়সের উল্লেখ নেই। কাজেই বুঝতে পারছি না, পরিপক্ব সিদ্ধান্ত নেওর জন্য আপনি কতটুকু উপযুক্ত। একটু ভেঙে ভেঙে উত্তর দিই।
প্রথম ধাপ: আপনি আগে খোলাখুলি নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি কী চান।
দ্বিতীয় ধাপ: আলোচ্য ভদ্রলোককে বিয়ে করলে কী কী সমস্যা হবে, বিয়ে না করলে কী কী সমস্যা হবে, এগুলোর স্পষ্ট উত্তর জানার চেষ্টা করুন।
তৃতীয় ধাপ: দ্বিতীয় ধাপের সমস্যাগুলো মোকাবিলায় আপনি কতটুকু তৎপর? আপনার কী কী দক্ষতা বা যোগ্যতা আছে, যা দিয়ে এ সমস্যাগুলো আপনি সামাল দিতে পারবেন? এ প্রশ্নের উত্তর জানুন।
চতুর্থ ধাপ: আপনি কি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী? যদি সেটা না হন, তবে প্রথমে সেদিকে মনোযোগ দিন। পড়াশোনা শেষ করাটা জরুরি। এরপর জীবনে বহু প্রেম করার সুযোগ পাওয়া যাবে। নিজের পেশাগত যোগ্যতা বাড়ানো প্রেম করার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে শিখলে ভালোবাসা এমনি হাত ধরে হাঁটবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক, কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বিডি
আইনি বিষয়ে পরামর্শ
প্রশ্ন: আমি একজন মুসলিম নারী। বিয়ে করেছি আট বছর আগে। আমার একটি ছেলে আছে। আমার স্বামী বিয়ের পর দেশের বাইরে চলে যান। হঠাৎ গত বছর তিনি সেখানে স্ট্রোক করে মারা যান। ওই ঘটনার ছয় মাস পর আমি সন্তানসহ ভাইয়ের বাসায় থাকা শুরু করি। কারণ স্বামী মারা যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেননি। আমার জানার বিষয় হচ্ছে, স্বামী মারা যাওয়ার পর স্ত্রী সম্পত্তির অধিকার পাবে কতটুকু?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ভোলা
পরামর্শ: মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের মূল উৎস হলো পবিত্র কোরআন। পবিত্র কোরআনে মূল আটটি ফারায়েজের উল্লেখ আছে। সে কারণে প্রকৃত উত্তরাধিকারীর ন্যায্য পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করার গুরুত্ব অপরিসীম। ১৯৬১ সালের ‘মুসলিম পারিবারিক আইন’ অধ্যাদেশ মোতাবেক মুসলিম উত্তরাধিকার স্বীকৃত।
মুসলিম উত্তরাধিকারের শ্রেণি, জাবিল ফুরুজ (নিকটাত্মীয়), আসাবা (অবশিষ্টাংশ প্রাপ্যদার আত্মীয়), জাবিল আরহাম (দূরসম্পর্কের আত্মীয়)।
ইসলামি আইনে মোট ১২ প্রকার জাবিল ফুরুজ আছে। পিতা, স্বামী, দাদা, বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাই, মা, স্ত্রী, কন্যা, পুত্রের কন্যা, দাদি বা নানি, সহোদরা, বৈমাত্রেয় বোন, বৈপিত্রেয় বোন। এ ছাড়া ইসলামি ফারায়েজ মোতাবেক ছয়জন নিকটতম আত্মীয় কখনোই মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন না। তাঁরা হলেন মা, বাবা, স্বামী বা স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা।
প্রত্যেক পুত্র কন্যার দ্বিগুণ সম্পত্তি পাবে। পুত্র না থাকলে কন্যা ৫০০ অংশ পাবে। সম্পত্তি বণ্টনের এমন আরও অনেক হিসাব রয়েছে ধর্মমতে।
আপনার প্রশ্নের উত্তর হলো, মা-বাবা না থাকলে আপনি পাবেন ১২৫ এবং আপনার ছেলে পাবে ৮৭৫ অংশ। মা-বাবা থাকলে আপনি ১২৫ অংশ, বাবা ১৬৭ অংশ, মা ১৬৭ অংশ, ছেলে ৫৪১ অংশ পাবে।
প্রশ্ন: ইদানীং নিজেকে অনেক বেশি একা লাগে। চাকরির সুবাদে স্বামী দূরে থাকে। তার কাছে নিজের জন্য কিছু চাইতে সংকোচ হয়। সে আমার চাওয়া-পাওয়াগুলো বোঝে না। এমনকি পুরো সপ্তাহ চলে গেলেও সে আমাকে একটা ফোনও করে না। আমি ফোন দিলে ব্যস্ত আছে বলে লাইন কেটে দেয়। আমি সন্তানদের নিয়ে কীভাবে দিন কাটাচ্ছি, সেসব নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। হিসাব করে টাকা পাঠায়। আর আমি সে অনুযায়ী খরচ করে ডকুমেন্টসহ হিসাব তার কাছে পাঠিয়ে দিই। কোনো কারণে হিসাবের চেয়ে টাকা বেশি খরচ হলে সে আমাকে ভর্ৎসনা করে। এ অবস্থায় আইনি প্রক্রিয়ায় আমার স্বামীকে কোনোভাবে এই সংসারের দিকে ফেরানো কি সম্ভব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, পটিয়া
পরামর্শ: আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে বলে রাখি, মুসলিম বিয়ে একটি চুক্তি। সেই চুক্তি অনুসারে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় স্বামী স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। স্ত্রী যদি নিজে রোজগার করে, তবুও। কাবিনে স্পষ্ট লেখা থাকে, ভদ্রোচিত ভরণপোষণ স্বামী দেবে। সে ক্ষেত্রে স্বামীর টাকা নেওয়ায় হীনম্মন্যতার কিছু নেই। যদি ভরণপোষণ দিতে না চায়, তবে পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে ভরণপোষণ আদায় করা যায়। তবে কেউ যদি সংসার করতে না চায়, তাকে জোর করে তো সংসার করানো যায় না।
আইনত বিয়ে বলবৎ থাকাকালে ভরণপোষণের জন্য স্ত্রী মামলা করতে পারবে। ভরণপোষণের টাকা আপনার আইনি অধিকার। আইন এবং ধর্ম আপনাকে সেই অধিকার দিয়েছে। আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণের কোনো অধিকার আপনার স্বামীর নেই। যদি করেন, তবে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইনের মাধ্যমে আপনি প্রতিকার পেতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন: অ্যাডভোকেট আইনুন নাহার সিদ্দিকা, আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সম্প্রতি আমার মিসক্যারেজ হয়েছে। এর পর থেকে আমাকে উদ্দেশ করে নেতিবাচক কথা যা বলা হচ্ছে, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সব সত্যি। মিসক্যারেজের সপ্তাহখানেক পর আমার স্বামী আমাকে বলেছেন, আমি অলক্ষ্মী। এ কথা আমার মাথা
৩০ নভেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সম্প্রতি আমার মিসক্যারেজ হয়েছে। এর পর থেকে আমাকে উদ্দেশ করে নেতিবাচক কথা যা বলা হচ্ছে, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সব সত্যি। মিসক্যারেজের সপ্তাহখানেক পর আমার স্বামী আমাকে বলেছেন, আমি অলক্ষ্মী। এ কথা আমার মাথা
৩০ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সম্প্রতি আমার মিসক্যারেজ হয়েছে। এর পর থেকে আমাকে উদ্দেশ করে নেতিবাচক কথা যা বলা হচ্ছে, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সব সত্যি। মিসক্যারেজের সপ্তাহখানেক পর আমার স্বামী আমাকে বলেছেন, আমি অলক্ষ্মী। এ কথা আমার মাথা
৩০ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সম্প্রতি আমার মিসক্যারেজ হয়েছে। এর পর থেকে আমাকে উদ্দেশ করে নেতিবাচক কথা যা বলা হচ্ছে, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সব সত্যি। মিসক্যারেজের সপ্তাহখানেক পর আমার স্বামী আমাকে বলেছেন, আমি অলক্ষ্মী। এ কথা আমার মাথা
৩০ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫