Ajker Patrika

ইভিএমে শঙ্কা থাকলেও উৎসাহী ভোটাররা

সাখাওয়াত ফাহাদ, নারায়ণগঞ্জ
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৬: ৩৬
Thumbnail image

রাত পেরোলেই প্রাচ্যের ড্যান্ডি খ্যাত নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশন নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি শঙ্কা ও সংশয় রয়েছে। কেন্দ্রের পাশাপাশি নানামুখী শঙ্কায় প্রান্তিক ভোটাররাও। অন্যদিকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে একই দলের একাধিক কাউন্সিলর পদপ্রার্থী থাকায় গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের শেষ সীমানায় মদনগঞ্জের শান্তিনগর। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন এই এলাকায় পাঁচ বছর আগেও ছিল না কোনো পাকা সড়ক। এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী তিনজন। তিনজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে বর্তমান কাউন্সিলর ফয়সাল মো. সাগর ও মোখলেছুর রহমান চৌধুরীর মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। সেই দ্বন্দ্বের প্রভাব ভোটের দিন পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় ভোটার আলমগীর হোসেন জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই এলাকায় কখনোই সংঘর্ষ হয়নি। তিনি বলেন, ‘এইটা সিটি করপোরেশনের একেবারে শেষ এলাকা। এই এলাকার যা উন্নয়ন দেখছেন, তা বিগত পাঁচ বছরে হয়েছে। এই এলাকা আগে খেত ছিল। আশা করি সবাই ভোট দিতে যাবে।

নাসিকের প্রান্তিক এলাকায় অবস্থা মোটামুটি এ রকম। কিছুটা উন্নয়ন দৃশ্যত, বাকিটা প্রতিশ্রুত। তবে নানা অপ্রাপ্তি, ক্ষমতার দাপট ও অর্ধসত্য প্রতিশ্রুতির মধ্যেও ভোটের আনন্দে মেতে উঠেছেন এলাকার সাধারণ ভোটাররা। এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ইভিএমে ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া।

এসব এলাকায় দেখা গেছে, নারী ও বয়স্কদের মধ্যে ইভিএমে ভোট দেওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। অনেকেই জানেন না কীভাবে ইভিএমে ভোট দিতে হবে। স্থানীয় এক নারী ভোটার বলেন, ‘মেশিনে কীভাবে ভোট দিতে হবে, এটা অনেকেই ঠিকমতো জানে না। কয়েক দিন আগে থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এটা সবাইকে আগে বোঝানো দরকার ছিল। কেন্দ্রে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে পরে তো আমার ভোট আরেকজনে দিয়ে দেব।’

শান্তিনগর এলাকার আরেক ভোটার মো. বছির মিয়া বলেন, ‘মেশিনে তো আগে কখনো ভোট দেই নাই, দেখিও নাই। অবশ্য লিফলেট, পোস্টার লাগাইছে, প্রজেক্টরে দেখাইছে। কিন্তু তবু বয়স্ক যারা আছে তাদের একটু সমস্যা হইতে পারে। আর এদিকে তো পড়াশোনা জানা মানুষ একটু কম। একটা নতুন জিনিস শিখতেও তো সময় লাগে।’

তবে দীর্ঘদিন পর ভোটের আমেজে ভাসা মানুষ ভোট দিতে বেশ আগ্রহী। নানান শঙ্কা থাকলেও শঙ্কা কাটিয়ে নিজের ভোটটি নিজেই দিতে চান তাঁরা। দীর্ঘদিন পর সেই সুযোগও পাওয়া যাবে বলে ধারণা সাধারণ ভোটারদের। সোনাকান্দা এলাকার ভোটার ইউনুছ আলী বলেন, ‘সবাই ভোট দিতে আগ্রহী। কেউ কোনো বিশৃঙ্খলা চায় না। সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট হোক—এটাই সবার প্রত্যাশা।’

অবশ্য ভোটারদের নিশ্চিন্তে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইভিএম-ভীতি দূর করতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগও। প্রতিটি এলাকায় টানানো হয়েছে পোস্টার। বিলি করা হচ্ছে ভোটের নিয়ম ও প্রক্রিয়া সংবলিত প্রচারপত্র। মসজিদে করা হচ্ছে মাইকিং। এমনকি কেন্দ্রে এসে সরাসরিও প্রক্রিয়া শিখে যাচ্ছেন অনেকেই। সোনাকান্দা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রিপন মাহমুদ বলেন, ‘যারাই আসছে তাদের বলছি যেন তারা তাদের পরিচিতদেরও কেন্দ্রে এসে কীভাবে ভোট দিতে হবে তা যেন শিখে যায়। ভোটের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগেই এই প্রক্রিয়া চলছে।’

ইভিএম, প্রার্থীদের দ্বন্দ্বজনিত শঙ্কা থাকলেও ভোটকেন্দ্রে যেতে চান সাধারণ ভোটাররা। দীর্ঘদিন ভোট দিতে না পারার আক্ষেপ এবার ঘোচাতে চান তাঁরা। সেই আক্ষেপ ঘুচবে কি না, তার অপেক্ষা আর মাত্র এক দিনের।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত