Ajker Patrika

উচ্ছেদের ১০ মাস পর ফের ‘আনন্দ বাজার’

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
উচ্ছেদের ১০ মাস পর ফের ‘আনন্দ বাজার’

মানিকগঞ্জ পৌরসভায় ‘আনন্দ বাজার’ নামে আবারও মেলা বসিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। প্রায় ১০ মাস আগে একই নামে শহরে মেলা বসিয়ে ছিলেন তাঁরা। পরে মেলার বৈধতার 
প্রশ্ন ওঠায় ও সমালোচনার মুখে তা উচ্ছেদ করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এবারও মেলার অনুমতি, ভাড়া আদায় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আয়োজকদের দাবি, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের অনুমতি নিয়ে অস্থায়ী মেলা বসানো হয়েছে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শহরে ব্যবসায়ী ও সমিতির সঙ্গে কথা না বলে মেলা বসানোর কোনো সুযোগ নেই। পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে সমঝোতা করে অবৈধভাবে মেলা বসানো হয়েছে। এতে শহরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

এর আগে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকায় ‘পৌরসভার জায়গায় মেলা, সমালোচনা’ শিরোনামের খবর প্রকাশের পর মেলা বন্ধ করা হয়।

এবার মেলা থেকে ভাড়া পাওয়ার কথা গতকাল সোমবার দুপুরে অস্বীকার করেন মানিকগঞ্জ পৌরসভার বাজার পরিদর্শক গোবিন্দ নারায়ণ সাহা। তবে সন্ধ্যায় পৌর মেয়রের ফোন থেকে কল দেওয়া হলে টাকার কথা তড়িঘড়ি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, মেলার ব্যবসায়ীরা গত মাসে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও, বাকি টাকা না দেওয়ায় পৌরসভার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে তিনি নিজের কাছে রেখেছেন।

জানা গেছে, শহরের শহীদ রফিক সড়কে অবস্থিত মানিকগঞ্জ পৌরসভার পুরোনো জায়গায় গত ১৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে ‘আনন্দ বাজার’ নামের অস্থায়ী মেলা। মেলায় নানা পণ্যের ১১টি দোকান বসেছে। পৌর মেয়র রমজান আলীর সুপারিশে ব্যবসায়ীদের বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেলার কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অস্থায়ীভাবে দোকান করতে অনুমতি পেয়েছেন তাঁরা। এ জন্য আনন্দ বাজার সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলামকে দোকানের আকারভেদে প্রতিদিন পাঁচশ থেকে হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। দোকানে বিক্রি হোক না হোক, এই টাকা দিতে হয়। তবে মেলা উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে তাঁদের বেচাকেনা খুবই ভালো।

মানিকগঞ্জ মহিলা কলেজ মার্কেটের ব্যবসায়ী তপন ঘোষ ও তৃপ্তি প্লাজা মার্কেটের ব্যবসায়ী সাদিয়া ইসলাম বলেন, তাঁরা লাখ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে দোকান ভাড়া নেন। মাস শেষে ভাড়া পরিশোধ করেন, বছর শেষে পৌর ট্যাক্সও দেন। দেশের বেচাকেনা আগের মতো ভালো হয় না। এর মধ্যে মেলা বসিয়ে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা মাসের পর মাস বেচাকেনা করলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

আনন্দ বাজার দোকান মালিক সমিতির পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন,  পৌর কাউন্সিলর শায়েখ শিবলী ও সংরক্ষিত নারী সদস্য সুলতানার কাছ থেকে জায়গা ভাড়া নিয়ে ব্যবসায়ীরা দোকান বসিয়েছেন। তবে দোকান ভাড়ার রসিদ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে পৌরসভার কোনো রসিদ নেই। টাকার বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’

পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘আনন্দ বাজারের বিষয়ে আমি ও শিবলী ভাই মিলে মেয়রের কাছে আবেদন করেছিলাম। আমি আর কিছু বলতে পারব না। আপনারা শিবলী ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন।’

পৌর কাউন্সিলর শায়েখ শিবলী জানান, পৌরসভার মাসিক সভায় মেয়রের অনুমতি নিয়ে আনন্দ বাজার নামের মেলা বসানো হয়েছে। গত মাস থেকে ব্যবসায়ীরা মেলা চালু করেছেন। এখানকার আয় পৌরসভায় জমা হচ্ছে।

পৌর মেয়র মো. রমজান আলী বলেন, দেড় লাখ টাকার মাসিক মৌখিক চুক্তিতে জায়গা ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। গত মাসে তাঁরা ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। যেহেতু ব্যবসায়ীরা ভাড়া দিতে পারছেন না; সেহেতু তাঁদের নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জায়গা খালি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত