Ajker Patrika

আত্মহত্যা বেশি চট্টগ্রাম বন্দর থানায়, কারণ বিষণ্নতা

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আত্মহত্যা বেশি চট্টগ্রাম বন্দর থানায়, কারণ বিষণ্নতা

চট্টগ্রামের ১৬ থানার মধ্যে বন্দর এলাকায় সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত বছর বন্দর থানা এলাকায় বসবাসকারী ৪৮ নারী ও পুরুষ আত্মহত্যা করেন বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। এ সংখ্যা নগরের অন্যান্য থানা থেকে প্রায় দ্বিগুণ।

একই শহরে বসবাসকারীদের এলাকাভেদে আত্মহত্যার হারে কেন এমন ব্যবধান, এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বন্দর থানা এলাকাটিতে বিষণ্নতায় ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা বেশি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সমাজবিজ্ঞানী ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘যে সমাজে নৈরাজ্য বেশি, প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তি যোগ না হওয়া, স্বপ্নপূরণ না হওয়া, কলহ, দারিদ্র্য ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা থেকে সেখানে এমনটা হয়। এ ধরনের সমাজে বসবাসকারীদের মাঝে সব সময় হতাশা কাজ করে থাকে। সঠিক নির্দেশনা না থাকায় একপর্যায়ে তাঁরা আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছেন।’

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের বাৎসরিক প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫৯ নারী ও পুরুষ আত্মহত্যা করেন। এদের মধ্যে পুরুষ ১৪২ ও নারী ১১৭ জন। শতকরা হারে ৫৪ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ ও ৪৫ দশমিক ১৬ শতাংশ নারী আত্মহত্যা করেন। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোয় অপমৃত্যুর মামলা হয়।

বন্দর থানা এলাকার পরে অবস্থান করছে নগরীর চার থানা এলাকা। ওই বছর ইপিজেডে ২৯, বায়েজিদে ২৩, বাকলিয়ায় ২২, চান্দগাঁও থানা এলাকায় ২১ জন নারী ও পুরুষ আত্মহত্যা করেন। একই প্রতিবেদনে গেল বছরে ২২ শিশু-কিশোর আত্মহত্যা করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। যাদের বয়স ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে।

এসব থানা এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইপিজেড, বায়েজিদ, চান্দগাঁও ও বাকলিয়াতেও পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা রয়েছে। এসব ঘিরে সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের বসবাস। যাদের বেশির ভাগই পোশাক কারখানাসহ নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশায় জড়িত।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের বন্দর জোনের উপকমিশনার শাকিলা সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্দর ও ইপিজেড থানা এলাকায় বসবাসকারীদের বেশির ভাগই বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। এদের বেশির ভাগই পোশাক শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। পারিবারিক, আর্থসামাজিক অবস্থান বিবেচনায় তাঁরা মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না। এতে তাঁদের মধ্যে সব সময় বিষণ্নতা কাজ করে।’

শাকিলা সুলতানা আরও বলেন, ‘আত্মহত্যা করেছে এমন কয়েকজনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমি কথা বলে দেখেছি, যাঁরা আত্মহত্যা করেছেন তাঁরা দীর্ঘদিন বিষণ্নতায় ভুগছিলেন। কাজের নিশ্চয়তা না থাকা, আর্থিক অসচ্ছলতাসহ নানা কারণে বিষণ্নতা থেকে পরে তাঁরা আত্মহত্যা করেন।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত