Ajker Patrika

আর্জেন্টিনায় বল পায়ে রাখার সময় পাওয়া যায় না

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২: ০২
আর্জেন্টিনায় বল পায়ে রাখার সময় পাওয়া যায় না

অনেকটা লুকোছাপা করেই আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দল দেপার্তিভো সোল দে মায়োর সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। সেখানে একটা ম্যাচ খেলে গোলও পেয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী মিডফিল্ডার। ২৭ ঘণ্টার লম্বা ভ্রমণ শেষে নিজের আর্জেন্টিনা ভ্রমণের কিছু ঘটনা গত পরশু তুলে ধরেছেন আজকের পত্রিকাকে—

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে আর্জেন্টিনা। সফর কেমন ছিল? 
জামাল: অনেক কঠিন। বেশ লম্বা একটা ভ্রমণ। কেবল বিমানের মধ্যেই ২৭ ঘণ্টা থাকতে হয়েছে। 

প্রশ্ন: আর্জেন্টিনায় তো এখন বেশ শীত। আর বাংলাদেশে প্রচণ্ড গরম। অল্প সময়ের মধ্যে দুই দেশের তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কতটা কঠিন? 
জামাল: সত্যি বলতে, যখন আর্জেন্টিনায় ছিলাম, তখন বাংলাদেশের আবহাওয়া খুব মিস করেছি। প্রথম ম্যাচের দিন সকালে বরফ ছিল। ম্যাচের সময় ছিল ৩-৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা। রোদ ছিল, কিন্তু বাতাসের কারণে অনেক ঠান্ডাও ছিল। ওই সময়টাতেই বাংলাদেশের আবহাওয়া অনেক মিস করেছি।

প্রশ্ন: আপনার প্রথম ম্যাচে মাঠে অনেক বাংলাদেশি এসেছিলেন। আর্জেন্টিনার মতো একটা বিশ্বকাপজয়ী দেশে একজন বাংলাদেশি ফুটবলার হিসেবে সেই অনুভূতি কেমন? 
জামাল: আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যমও আমাকে একই প্রশ্ন করেছে। আমার উত্তরটাও হবে একই রকম, বিষয়টিতে আমি ভীষণ গর্বিত আর সম্মানিত বোধ করেছি। আর্জেন্টিনা বেশ বড় একটা দেশ। অনেক দূর থেকে, বিভিন্ন প্রদেশ থেকে বাংলাদেশিরা এসেছেন আমার খেলা দেখতে। নিজেকে আসলেই বেশ গর্বিত লাগছে। ম্যাচের পর তাঁদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়েছি। 

প্রশ্ন: আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন প্রধান ক্লদিও তাপিয়ার সঙ্গেও তো আপনার দেখা হয়েছে। কী কথা বা আলোচনা হয়েছে তাঁর সঙ্গে? 
জামাল: তাপিয়া আমাকে আর আমার ক্লাব সভাপতিকে (আদান ভালদেবেনিতো) দাওয়াত করেছিলেন। তাঁদের দুজনের বেশ ভালো সম্পর্ক। আমার ক্লাব সভাপতি একদিন আমাকে বললেন, চলো, আজকে আমরা তাপিয়ার সঙ্গে দেখা করব। আমি তাপিয়ার জন্য একটি জার্সি নিয়ে গিয়েছিলাম। তিনি বেশ খুশি হয়েছেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, যদি তুমি আর্জেন্টিনায় থাকো, আমার সঙ্গে বসে আর্জেন্টিনার খেলা দেখবে। আমি বলেছি, দুঃখিত, আমার তো জাতীয় দলের খেলা আছে। ভবিষ্যতে যদি সুযোগ হয়, আমরা অবশ্যই একসঙ্গে খেলা দেখব। 

প্রশ্ন: আর্জেন্টিনায় মনে হয়, খাওয়াদাওয়া নিয়ে বিশেষ করে ভাত খাওয়া নিয়ে কঠিন সমস্যাতেই আছেন? 
জামাল: ওরা গরুর মাংস খুব খায়। সবকিছুতেই কম-বেশি ওরা গরুর মাংস খায়। আমি গরুর স্টেকের সঙ্গে স্ম্যাশড পটেটো (আলুভর্তা) খেয়েছি। ভাতের জন্য একটু কষ্ট হয়েছিল। তবে বাংলাদেশিরা আমার বাসায় আসেন। তাঁরাই আমার জন্য ভাত রান্না করে নিয়ে আসেন। 

প্রশ্ন: লম্বা সময় বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবল খেলেছেন। আর্জেন্টিনায় সবে তো গেলেন। তারপরও বলুন, বাংলাদেশের শীর্ষ লিগ আর আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগ ফুটবলের পার্থক্য কী? 
জামাল: আর্জেন্টিনায় শারীরিক খেলাটা বেশি হয়। শারীরিকভাবে তারা বেশ শক্তিশালী। তৃতীয় বিভাগেও বল রিসিভ করে পায়ে রাখার সময় খুব কম পাওয়া যায়। বাংলাদেশে বল পায়ে রাখার জন্য কিছুটা সময় পাওয়া যায়। কিন্তু ওখানে একদমই সময় পাওয়া যায় না। বল পেয়েই পাস বাড়াতে হয়। আর সেখানে সব ক্লাবেরই নিজস্ব মাঠ থাকতে হয়, স্পোর্টস কমপ্লেক্স থাকতে হয়। এই যেমন বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মতো। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে গিয়ে আর্জেন্টিনার একটা দলের অধিনায়ক হয়ে গেলেন। কী রকম লাগছে? 
জামাল: আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম। আমি একজন নতুন খেলোয়াড়। মাত্রই প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছি। সভাপতি আমাকে অধিনায়কত্ব দিলেন। তাতে আমি অবশ্য বেশ খুশিই ছিলাম। সোল দে মায়োতে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা আমাকে বেশ সাহায্যই করেছেন। বেশ ভালো লেগেছে বিষয়টা। তবে বাংলাদেশের তুলনায় সবকিছুতেই বেশ পার্থক্য সেখানে। খেলার ধরন, মানুষ—সব আলাদা। তারা তো আমার জন্য প্রথম ম্যাচে জার্সি পাল্টে ফেলেছে। সাধারণত ক্লাবের জার্সি হলো সাদা আর নীল। কিন্তু আমার প্রথম ম্যাচের দিন মোজা লাল করা হলো। জার্সি করা হলো লাল-সবুজ। আমাকে তাঁরা বেশ সম্মান করেছেন বলতেই হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

নালিতাবাড়ীতে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবক আটক

পারদর্শী হয়ে উঠছে বাংলাদেশ, স্থিতিশীল হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক: ভারতীয় বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত