Ajker Patrika

ঋণের বোঝায় চিকিৎসা বন্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধার

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৩
ঋণের বোঝায় চিকিৎসা বন্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধার

বাঁচতে চান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন। যৌবনে জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। বার্ধক্যে এসে জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানের জীবন চলছে ধুঁকে ধুঁকে। দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী তিনি। পরিবারের লোকেরা কিছুটা চিকিৎসা করিয়েছিলেন ঋণের টাকায়। এখন ঋণের বোঝা ভারী হওয়ায় বর্তমানে চিকিৎসা বঞ্চিত তিনি।

আব্দুল বাতেন মহানগরীর মাহিগঞ্জের ধুমখাটিয়া এলাকার বাসিন্দা। চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাড়িঘর, জায়গাজমি সবই হারিয়েছেন। বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাস করছেন মাহিগঞ্জের একটি ভাড়া বাসায়। এ অসহায় মুক্তিযোদ্ধাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু আজও মেলেনি কোনো সহযোগিতা।

লালমুক্তি বার্তা পাওয়া এই বীর সন্তানের জীবন কাটছে দিনের পর দিন বিছানায় শুয়ে। চিকিৎসক বলেছেন, তাঁর হার্টের চারটি বাল্ব ব্লক হয়ে গেছে। বিছানায় শুয়ে নিজের করুণ দশার কথা ভেবে প্রতিনিয়ত চোখের পানি ফেলছেন তিনি।

আব্দুল বাতেন ইস্ট পাকিস্তান রেজিমেন্টের (ইপিআর) নিয়মিত সদস্য ছিলেন। দীর্ঘ কর্মময় জীবনের পর তিনি মাহিগঞ্জের ভাড়া বাসাসংলগ্ন একটি মুদির দোকান করেন। এতেই তুষ্ট ছিলেন তিনি। অর্থ-সম্পদকে কখনো গুরুত্ব দেননি। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধার জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আজ বড়ই অসহায় হয়ে পড়েছেন। নানা রোগে তিনি এখন মৃত্যুর শয্যায়। এখন দুই চোখে ঝাপসা দেখছেন। কানেও কম শোনেন। হাঁটাচলাও করতে পারেন না।

আব্দুল বাতেন বলেন, চাকরিরত অবস্থায় ২৯ বছর বয়সে মাতৃভূমির টানে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। তার বেসামরিক গেজেট নম্বর ২৬৫, মুক্তিযোদ্ধার নম্বর ০১৮৫০০০১৫৩৪ ও লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ৩১৩০১০২৩৫। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারা এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘প্রতি মাসে ভাতার যে টাকা পাই তা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। পরে আবারও খরচ চালাতে ঋণ করতে হয়। আমার শেষ জীবনে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও হয়নি।’

আব্দুল বাতেনের ছেলে খুরশিদ আলম বলেন, ‘আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সরকারের অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি করে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।’

রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু বলেন, ‘আব্দুল বাতেন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে অসহায় জীবন কাটাচ্ছেন। পরিবারে আয়ের তেমন কোনো উৎস নেই। তাঁর পাশে আমাদের সবার দাঁড়ানো উচিত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত