Ajker Patrika

বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত: ওপারের বিকট শব্দে এপারে আতঙ্ক

কক্সবাজার প্রতিনিধি
Thumbnail image

মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির লড়াই তীব্র হয়ে উঠেছে। কয়েক দিন ধরে কক্সবাজারের টেকনাফের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের লোকজন মর্টার শেল, গোলাগুলি ও ভারী অস্ত্রের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে। এতে বঙ্গোপসাগরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপসহ টেকনাফজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। নির্ঘুম রাত কাটছে সীমান্তের মানুষদের।

নাফ নদী সীমান্তে এই সংঘাতের কারণে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছে সেন্ট মার্টিনের ১০ হাজার বাসিন্দা। এ দ্বীপে চলাচলের একমাত্র টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটটি বন্ধ রয়েছে। বাধ্য হয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে বিকল্প নৌরুট ব্যবহার করতে হচ্ছে। গতকাল শনিবার সকালে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও যাত্রী নিয়ে দুটি ট্রলার শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্ট মার্টিন গেছে। একই পথে যাত্রী নিয়ে শাহপরীর দ্বীপে ফিরেছে দুটি স্পিডবোট।

সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত টেকনাফের নাফ নদীর এপারের শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ সদর, সাবরাং, সেন্ট মার্টিন ও আশপাশের এলাকায় একের পর এক ভারী অস্ত্র ও গোলার বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে। আতঙ্কিত মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

একাধিক সূত্র বলেছে, নাফ নদীর ওপারে বুচিডং-রাচিডং শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন বিদ্রোহীরা মংডু টাউনশিপ ঘিরে যুদ্ধ করছে। রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ এই তিন শহর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত। এই তিন শহরের সঙ্গে রাজধানী সিত্তের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সরকারি বাহিনী তিন শহরে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে সাগরপথে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছিল। প্রতিদিন শহর তিনটির আকাশে যুদ্ধবিমান চক্কর দিতে দেখা যায়।  

টেকনাফ খানকার ডেইল এলাকার বাসিন্দা হাফেজ আহমেদ বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে বিস্ফোরণের শব্দে কেউ ঘুমাতে পারছে না। আগে এ রকম বিকট শব্দ শুনিনি।’
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবুল ফয়েজ বলেন, ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দে মানুষ আতঙ্কে আছে। এ যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। চার মাস ধরে এই অবস্থা চলছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, টেকনাফ সীমান্তের প্রতিটি গ্রামে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে।

সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতে বিকল্প নৌরুট
চলতি মাসের শুরুতে নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে যান চলাচলের সময় মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গুলি করা হয়। এ কারণে জেলা প্রশাসন এই রুটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের (ইউপি) সদস্য মো. খোরশেদ আলম বলেন, দিন-রাত তো বিস্ফোরণের বিকট শব্দে মানুষ আতঙ্কে আছে। বাড়িতে থাকা যায় না ভয়ে। তারপরও প্রশাসনের সহযোগিতায় নৌচলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় মানুষ স্বস্তি পাচ্ছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্ট মার্টিন নৌরুট সচল করতে জেগে ওঠা চর ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেন্ট মার্টিনের সঙ্গে যোগাযোগ নির্বিঘ্ন রাখতে এই রুটের গুরুত্ব রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত