Ajker Patrika

পাট চাষের খরচ তুলতে পারছেন না কৃষক

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
পাট চাষের খরচ তুলতে পারছেন না কৃষক

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে পাটের ফলন ভালো হয়নি। বাজারে দামও কম পাচ্ছেন চাষিরা। এতে পাট চাষের খরচ উঠাতে পারছেন না তাঁরা।
ফুলবাড়ীতে প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকা দরে কিনছেন ব্যবসায়ীরা।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, পাটচাষিদের কেউ খেতের পাট কাটছেন, কেউবা পাট জাগ দিচ্ছেন। অনেকে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের কৃষক রমাকান্ত রায় বলেন, ‘এ বছর চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। বন্যায় ডুবে গিয়ে দুই বিঘা জমির পাটখেত নষ্ট হয়। পাট চাষে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। যে ফলন হয়েছে, তাতে মণ দশেক পাট হতে পারে। ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা প্রতি মণ পাটের দাম ২ হাজার ৬০০ টাকা দর দিতে চাচ্ছে। এ দামে বিক্রি করলে তো আমার দাহা লোকসান। পাটের মণ কমপক্ষে চার হাজার টাকা হলে অন্তত খরচের টাকা উঠবে।’

উপজেলার পশ্চিম ধনিরাম গ্রামের কৃষক এসলাম মিয়া, লুৎফর রহমান ও অনিল চন্দ্র বলেন, এবার পাট চাষে অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। পাট নিড়ানির সময় শ্রমিকের দাম বেশি দিতে হয়েছে। তারপরে তো বেশি বৃষ্টি ও বন্যার হানা। বন্যায় আমাদের অর্ধেকের বেশি জমির পাট নষ্ট হয়ে গেছে। যতটুকু বাকি ছিল, তা কাটার জাগ দেওয়ার পানি না পাওয়ায় শুকিয়ে যায়। পরে বাড়তি টাকা খরচ করে নদীতে এনে পাট জাগ দিয়েছি।’

কাশিপুর ইউনিয়নের মধ্য কাশিপুর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘সংসারের ব্যয় মেটাতে মৌসুমের শুরুতে পাট বিক্রি করতে হয়। যখন দাম বাড়ে, তখন আমাদের ঘরে পাট থাকে না। দাম পরে বাড়ার কারণে লাভবান হয় ব্যাপারী। অথচ আমরা মাঠে খেটে মরি।’

পাটের দাম নিয়ে শাহবাজারের পাট ব্যবসায়ী রোস্তম আলী বলেন, ‘মহাজনের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে পাট কিনে মহাজনের কাছেই পাঠাই। মহাজন যে দরে কিনতে বলে, আমি সেই দরে কিনে দেই। পরে দাম বাড়লে আমার মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের লাভ কী? আমরা তো পাট মজুত করে রাখতে পারি না। যারা মজুতদার, তারাই দাম বাড়ার ফায়দা নেয়। তবে মৌসুমের শুরুতেই পাটের দাম বেশি হলে কৃষকেরা লাভবান হতো।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, প্রতিবছরই মৌসুমের শুরুতে পাটের দাম কম থাকে। কিছুদিন পরে পাট বিক্রি করলে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে কৃষকেরা লাভবান হতে পারেন। এ বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিনা মূল্যে পাট ও আমন চাষাবাদের জন্য বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত