Ajker Patrika

অসময়ে পদ্মায় বাড়ছে পানি, তলিয়েছে ফসল

তামিম আদনান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)
অসময়ে পদ্মায় বাড়ছে পানি, তলিয়েছে ফসল

অসময়ে পদ্মার পানি বাড়ছে। উজানে পাহাড়ি ঢলের কারণে ১০ অক্টোবর থেকে পদ্মায় পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এদিকে পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে ইতিমধ্যে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার নদীতীরবর্তী বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চলের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিশেষ করে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কৃষকের পেঁয়াজ ও কলাইখেত তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আরও এলাকা প্লাবিত হওয়ার 
আশঙ্কা রয়েছে।

অসময়ে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় কৃষকেরা ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। চিলমারী ইউনিয়নের পেঁয়াজ ও কলাইচাষি মিজানুর রহমান মিন্টু জানান, তিনি এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে কলাই এবং এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেন। শুরুতেই ডুবে গেছে লাগানো পেঁয়াজ আর বুনে রাখা কলাই বীজ। এই কৃষক আরও বলেন, ‘দুশ্চিন্তায় আছি, কী যে হবে ফসলের। এমন ঘটনার সম্মুখীন এর আগে হইনি।’
এই ইউনিয়নের আরেক চাষি রাসেল সরকার বলেন, ‘হঠাৎ নদীতে কয়েক দিন পানি বেড়েছে। যে কারণে নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমি ডুবে গেছে। তাতে আমার মতো অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি হয়ে যাওয়া বন্যায়ও তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। কলাই বোনার পরপরই বন্যার পানি চলে আসে। তাতে তাঁর কলাই নষ্ট হয়ে যায়। পরে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নতুন করে কলাই চাষ করেন আবার। তবে এবারের অসময়ের বন্যায় তিনি আবারও ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এ বিষয়ে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল বলেন, নদীতে হঠাৎ পানি বাড়ায় কলাই ও পেঁয়াজ আবাদি জমি ডুবে গেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অন্য চাষিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এ প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, ভারতীয় ও অন্যান্য পাহাড়ি ভারী ঢলের কারণে উজানে পানি বাড়ায় পদ্মায় পানি বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়লেও গতকাল সোমবার পানি বেড়েছে ৫ সেন্টিমিটার। গতকাল সকালে পানিপ্রবাহ ছিল ১২ দশমিক ৮০ মিটার, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৪৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। 
ফসলের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, এখনো ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। মাঠে কর্মকর্তারা কাজ করছেন। দু-এক দিনের মধ্যে তথ্য হাতে পাওয়া যাবে। চরে সবেমাত্র পেঁয়াজ চাষ শুরু হয়েছে। নতুন করে সপ্তাহখানেক পানি বাড়লেও দৌলতপুর উপজেলা কৃষি বিভাগে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য নেই।

এ বছর দৌলতপুরে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাঁচ কেজি করে কলাই বীজ ও ১৫ কেজি করে সার দিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে দেওয়া হয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে জনপ্রতি ১০ কেজি করে চাল। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, খোঁজখবর নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত