Ajker Patrika

সড়ক সংস্কারে অনিয়ম

বরগুনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭: ৪৪
সড়ক সংস্কারে অনিয়ম

বরগুনার বামনায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে একটি সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

ওই সড়ক ব্যবহারকারী এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রাক্কলন অনুসরণ না করে ঠিকাদার ইচ্ছেমতো নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে সড়কটির সংস্কার করছেন। এভাবে সংস্কারকাজ শেষ করলে সড়কটি আবার ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলেও স্থানীয় ব্যক্তিরা ধারণা করছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বামনা উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়নের কালাইয়া সড়ক থেকে তালেশ্বর পর্যন্ত ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারকাজের দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। মোট ১ হাজার ৫৪৬ মিটার সড়ক সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয় ১ কোটি ২১ লাখ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিয়া অ্যান্ড আফিয়া এন্টারপ্রাইজকে ওই কাজের অনুকূলে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। মূল ঠিকাদার কাজটি স্থানীয় ঠিকাদার মো. হেমায়েত মোল্লার কাছে চুক্তিভিত্তিক বিক্রি করে দেন। সম্প্রতি সড়কের সংস্কারকাজ শুরু করেন চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদার।

কাজের প্রাক্কলন অনুযায়ী, রাস্তার পুরোনো সামগ্রী (খোয়া, ইট, বিটুমিনমাখা পাথর ও ইট) রোলার দিয়ে মিশিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। এর ওপর কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি বালুর আস্তরণ এবং সর্বশেষ তার ওপর চার ইঞ্চি মানসম্মত ইটের মেকাড্যাম (ইটের বড় খোয়ার সঙ্গে পানি মিশ্রণ) ফেলে রোলার করতে হবে।

গত সোমবার কালাইয়ায় প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ঠিকাদার পুরোনো ইট দিয়ে দুই পাশে এজিন (পার্শ্বপ্রাচীর) দিয়েছেন। মেকাড্যাম দিয়েছে রাস্তার পুরোনো ও নিম্নমানের নতুন ইট ব্যবহার করে। বালুর পরিবর্তে কাদামাটি দিয়ে তার ওপর নিম্নমানের পুরোনো ইটের খোয়া বিছানো হয়েছে। এ ছাড়া নিম্নমানের ইটের ভাঙা অংশ দিয়ে মেকাড্যাম দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু স্থানে সড়কের আগের পিচ না উঠিয়ে তার ওপরই মাটি, বালু, খোয়া ফেলে নতুন কাজ করা হচ্ছে। আর এতেও ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইটের খোয়া।

স্থানীয় বাসিন্দা জামাল শেখ বলেন, ‘ঠিকাদার অত্যন্ত নিম্নমানের ইট দিয়ে খোয়া তৈরি করে ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া নির্মাণকাজে ব্যবহারযোগ্য নয় এমন বালু ও কংক্রিট ব্যবহার করছেন। এতে সড়কের বরাদ্দই কেবল গচ্চা যাচ্ছে, এই সড়ক তিন মাসও ব্যবহার করা যাবে না। আমরা অনেক কষ্ট করেছি এত বছর, এখন যেনতেন সংস্কারের ফলে আবার দু-এক মাসের মধ্যেই আমাদের সড়কটি খানাখন্দ হয়ে যাবে। বিষয়টি তদারকি করা উচিত।’

কাজের অনিয়ম প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিয়া অ্যান্ড আফিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রাজু মুন্সী বলেন, ‘আমি কাজটি বিক্রি করে দিয়েছি। কাজের মান তদারকি করে এলজিইডি বিল দেবে।’

চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদার হেমায়েত মোল্লা বলেন, ‘আমি প্রাক্কলন অনুসরণ করেই কাজ করছি। এলজিইডিকে আমি কাজ বুঝিয়ে দেব। আমার কাজে অনিয়ম থাকলে এলজিইডি বিল আটকে রাখবে। এখানে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।’

এলজিইডির বামনা উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সংস্কারকাজ চুক্তি মোতাবেক না হলে এবং কাজে অনিয়ম হলে ঠিকাদারের জামানত আটকে দেওয়া হবে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিবেক সরকার বলেন, ‘সড়কে অনিয়ম বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলব। যদি ঠিকাদার প্রাক্কলন অনুসরণ না করেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত