Ajker Patrika

ভ্যাপসা গরম, দেখা নেই বৃষ্টির

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
আপডেট : ১৫ জুন ২০২২, ১১: ৫৪
Thumbnail image

দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র গরমে জনজীবনে নেমে এসেছে অস্বস্তি। দিনের বেলায় একটা শীতল পরশের খোঁজে মানুষ নবগঙ্গা নদীর পাড়ে আশ্রয় নিচ্ছে। এরপরও কাঙ্ক্ষিত ঠান্ডা পরিবেশ মিলছে না। মাঝেমাঝে আকাশে মেঘ দেখা গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। ফ্যানের বাতাসে কাজ হচ্ছে না যেন। এই গরমে তাই মাগুরাবাসীর জীবনযাপনে ভোগান্তি নেমে এসেছে।

মাগুরা শহরের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে নবগঙ্গা নদী। নদীর একপাশে পুরোনো বাজার এলাকা। সকাল বেলা সেখানে ভিড় হয় ক্রেতা বিক্রেতাদের। ভিড় ঠেলে শেখ কামাল সেতুর ওপর বিশ্রাম নিতে দেখা যায় নানা বয়সীদের। এদের মধ্যে স্কুলশিক্ষক সেলিম হোসেন বলেন, ‘গরম নেই কোথায় বলেন? বাজারে গরম, সড়কে গরম, বাড়িতে গরম এমনকি যেখানে চাকরি করছি সেখানেও গরম। ফ্যান রয়েছে ছোট বড় দিয়ে বাড়িতে ১৩টা। দুটো রুমে এতগুলো ফ্যানেও যেন কাজ হচ্ছে না। আমাদের তো আর এসি কেনার সামর্থ্য নেই। বাচ্চা কাচ্চা খুব ঝামেলা করছে বাড়িতে। কি করার তাই এই সেতুর ওপরে একটা দাঁড়ায় আছি নদীর বাতাস খেতে।’

একই অবস্থা নবগঙ্গা পার্ক এলাকায় ভ্যানচালক মতিয়ার মোল্লার। মধ্য বয়সে সংসারের হাল তাকেই টানতে হয়। ভ্যানটি মোটরচালিত হলেও যেন শরীর তাঁর চলছে না। একটু পর পর ঘাম মুছতে মুছতে বলেন, ‘এরাম চললি অসুস্থ হয়ে যাবানে। কিরাম গরম পরিছে। ভাড়া মারব এর উপায় নেই। এখন তো নদীর বাতাসে আইছি। শরীরডা জুড়াইয়ে তারপর দেখি আবার ভাড়া মারতে যাব।’

গরমে স্কুল শিক্ষার্থী নাহিদ জানায়, ক্লাসে থাকা দায়। চারটা ফ্যান এত ঘুরছে কিন্তু গায়ে কোনো বাতাস লাগছে না। বারবার মনে হচ্ছে যেন ফ্যান ঘুরছে না। এরপর আবার কারেন্ট চলে যায় মাঝে মধ্যে। তখন আমরাসহ স্যাররাও ঘামতে থাকে। এভাবে পড়ালেখা করা যাচ্ছে না।  

মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হাসান বলেন, শিক্ষার্থীরা খুব কষ্ট পাচ্ছে। গরমে তারা শ্রেণিকক্ষে কষ্ট করে লেখাপড়া করছে। ফ্যান যথেষ্ট পরিমাণে আছে, কিন্তু গরম বেশি হওয়ায় তা আর গায়ে লাগছে না।

মাগুরা শহরের নোমনী ময়দান এলাকায় আম গাছের সারিতে রিকশা ও ভ্যান চালকদের আড্ডা। তারা প্রত্যেকে জানায়, গরমে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে গেছে। কয়েকজন অসুস্থ হয়ে এখানে বসে আছে। মাথায় পানি দেওয়া হয়েছে। কোনো মতেই বাতাস দিয়ে এই গরম ঠেকানো যাচ্ছে না।

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ গৃহীনিরাও। মধুমতি হলের সামনে বাসা গৃহিণী এলিজা আক্তার জানান, বাড়িতে এত ফ্যান। তবু কোনো কাজ হচ্ছে না। গতকাল ও একটি ফ্যান কেনা হয়েছে। কিন্তু ফ্যান যত বেশি জোরেই ঘুরুক, বাতাস নেই। বাচ্চাদের নিয়ে টিকে থাকা খুব কষ্টের। তাই প্রায় মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হই বাতাসের খোঁজে। কিন্তু যেখানে যাই সেখানেই গরম। বৃস্টি দরকার খুব। কিন্তু মেঘ হলেও কোনো বৃষ্টির দেখা নেই।

মাগুরা বাজার বিপনন কর্মকর্তা আলমগীর হোসের আজকের পত্রিকাকে জানান, গরমে বাজারের কাচা তরকারী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিক্রেতারা ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে বৃষ্টি হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত