Ajker Patrika

বদলে যাওয়ার আশা ফরিদপুরে

মো. মফিজুর রহমান, ফরিদপুর
আপডেট : ২৩ জুন ২০২২, ১৮: ২২
Thumbnail image

বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। আর মাত্র দুদিন পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন এই সেতু। এটি চালুর পর সহজ হবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাতায়াত ব্যবস্থা।

ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি গড়ে উঠবে শিল্প-কারখানা। পদ্মা সেতুর ফলে আর্থসামাজিক অবস্থার চিত্র বদলে যাবে ফরিদপুরের।

পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর পর থেকেই ফরিদপুরের মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। তৈরি হয় দেশের প্রথম মাওয়া-ভাঙ্গা ছয় লেনের দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ে। এক্সপ্রেসওয়ের পাশ দিয়ে শুরু হয় রেল লাইনের কাজ। খুলতে থাকে দীর্ঘদিনের অবহেলিত এ জেলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের পথ।

সেতু ঘিরে এ অঞ্চলে শুরু হয়েছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে ছোট-বড় কলকারখানা স্থাপনের জন্য শিল্পের মালিকেরা সুবিধা মতো জমি ক্রয় শুরু করেছেন। এর মধ্যে দিয়ে ফরিদপুর অঞ্চলে আর্থসামাজিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে।

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, ‘দক্ষিণবঙ্গে আর্থসামাজিক উন্নয়নের দার উন্মোচন করার লক্ষ্যেই স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু।

আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রতি ঋণী। তাঁর পিতা না থাকলে যেমন স্বাধীনতা ভাবনা কঠিন ছিল, ঠিক তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকলে পদ্মা সেতুর বাস্তবে রূপ পাওয়া কঠিন ছিল।’

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামিম হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চ্যালেঞ্জ হিসেবে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করেছেন। দক্ষিণবঙ্গে মানুষ এখন উন্নয়নের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে, সৃষ্টি হবে বেকারদের কর্মস্থান। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে সেতু চালুর মধ্যে দিয়ে।

ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাব বোস বলেন, দেশি-বিদেশি বহু ষড়যন্ত্র ছিল, তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে দাঁড়াননি। এই কারণেই আজ আমরা সেতুর বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছি। এ জেলা দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত, আজ আমরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি।

ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি প্রেসিডেন্ট মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এক পদ্মা সেতুতেই বদলে যাবে ফরিদপুরের চিত্র। এক সময়ের অবহেলিত এ জেলা দক্ষিণবঙ্গের উন্নয়নের মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে। পদ্মা সেতু চালুর পর জেলার বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। তা ছাড়া যে কোনো সময় ঘোষণা হতে পারে বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলা নিয়ে পদ্মা বিভাগ।

তিনি আরও বলেন, সেতু উদ্বোধনের পর থেকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হচ্ছে এ অঞ্চলের ২১ জেলা। এতে সচল হবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতি। গড়ে উঠবে শিল্প কলকারখানাসহ বহু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। বাড়বে মানুষের কর্মসংস্থান, কমবে বেকার সমস্যা।

জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, সেতুকে কেন্দ্র করে এ জেলায় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে সেতুকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর-মাদারীপুর সীমান্তবর্তী এলাকায় অলিম্পিক ভিলেজ, শেখ হাসিনা তাতপল্লি তৈরি হচ্ছে। ভাঙ্গাতে বঙ্গবন্ধু মহাকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। এ জেলার প্রতিটি জায়গায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে। 

পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত