Ajker Patrika

শিশু চালকে বিপজ্জনক সড়ক

গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর)
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৬
শিশু চালকে বিপজ্জনক সড়ক

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সব সড়ক এখন শিশু-কিশোর ও অদক্ষ চালকদের দখলে। অবাধে সড়কে শিশু-কিশোরেরা চালাচ্ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন। এতে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা।

অভিযোগ রয়েছে, অনেক শিশু-কিশোরকে তৃতীয় কিংবা চতুর্থ শ্রেণির লেখাপড়া শেষ হতে না হতেই পরিবারের হাল ধরতে হচ্ছে। এ কারণে কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়া তারা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিচালিত স্কুটার, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ব্যাটারিচালিত মিশুক, ইঞ্জিনচালিত নসিমন ও ভটভটি চালাচ্ছে। এতে তারা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পরিবার এ ব্যাপারে তেমন খেয়াল রাখে না।

পুলিশের দাবি, তারা লাইসেন্সবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। কোনো শিশু বা অদক্ষ চালক পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

এসব চালক জানায়, জীবিকার তাগিদে তারা এসব গাড়ি চালায়। এর বিকল্প নেই তাদের কাছে।

উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, ফরিদগঞ্জ পৌরসভা, চাঁদপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কসহ উপজেলার অভ্যন্তরে বিভিন্ন সড়ক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিচালিত স্কুটার, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ব্যাটারিচালিত মিশুক, ইঞ্জিনচালিত নসিমন ও ভটভটির দখলে। আবার অধিকাংশ গাড়ির লাইসেন্স নেই। আর বেশির ভাগ গাড়িচালক শিশু-কিশোর।

এদিকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রাখার নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। এ কারণে যত্রতত্র এসব গাড়ি রাখায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। পথচারীরা পড়ছে ভোগান্তিতে।

ফরিদগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী অহিদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘এসব দেখার কেউ নেই। এই সুযোগে ১২ বছরের ছেলেরাও এই শহরে দিব্যি অটোরিকশা চালাচ্ছে। এতে পড়ালেখা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।’

অল্প বয়সী ইব্রাহিম, রাসেল, আবুল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন অটোরিকশাচালকের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানায়, মা, বাবা ভাই, বোনদের ভরণপোষণের জন্য তারা এসব গাড়ি চালায়। লেখাপড়া কোন শ্রেণি পর্যন্ত করেছে জানতে চাইলে, তারা হেসে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

সচেতন মহলের দাবি, এসব ঝুঁকিপূর্ণ কাজে পরিবার যদি অল্প বয়সী ছেলেদের রাস্তায় নামিয়ে দেয়, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ ভালো হবে না। তাদের এসব কাজ থেকে ফিরিয়ে টেকনিক্যাল কাজ শেখানো প্রয়োজন। এতে তাদের ভবিষ্যৎ ভালো হবে।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) ফরিদগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ রবিদাস বলেন, ‘এসব শিশু-কিশোরের থাকার কথা ছিল পাঠশালা কিংবা খেলার মাঠে। কিন্তু তারা হয়তো জীবিকার জন্য এই বয়সে কোনো রকমের দক্ষতা কিংবা লাইসেন্স ছাড়াই সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এর জন্য দায়ী কিছু মুনাফালোভী যানবাহনের মালিকেরা। সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করি।’

ফরিদগঞ্জ পৌর সচিব এ কে এম খোরশেদ আলম বলেন, ‘জেলা শহরেও বিভিন্ন বয়সীদের লাইসেন্স দেওয়া হয়। আমাদের এটা ছোট একটি উপজেলা। তবে আমরা শিশু-কিশোরদের বিষয়টি মাথায় রেখে লাইসেন্স দেব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেকোনো সড়কে দুর্ঘটনা হলে পুলিশকেই সবার আগে দৌড়াতে হয়। যাঁরা লাইসেন্স দেন, তাঁদের শিশু-কিশোরদের বিষয়টি বিবেচনা করে লাইসেন্স দেওয়া প্রয়োজন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত